Kolkata News

আমি বিজেপি-র দিকে বলে সিপিএম-ই রটাচ্ছে: ঋতব্রত

তিনি প্রতিভাবান, পড়াশোনা করা মানুষ, তা নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ডাহা শূন্য পাবেন। আলিমুদ্দিনের অন্দরে কান পাতলে এমনটাই শোনা যায়। কোনও কোনও নেতার অতিরিক্ত ‘স্নেহ’ই নাকি তাঁর উপরে ওঠার সিঁড়ি।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ১৬:৪২
Share:

এটাই নাকি হওয়ার কথা ছিল! ছবি— সংগৃহীত।

এমনটাই নাকি হওয়ার কথা ছিল ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সিপিএম নেতৃত্বের একটা অংশ তেমনটাই মনে করছেন।
জোর জল্পনা শুরু হয়েছে, এ বার তিনি বিজেপি বা তৃণমূলেই যোগ দেবেন। কিন্তু, ঋতব্রত এটাকে অপপ্রচার হিসাবেই দেখছেন। বৃহস্পতিবার তিনি বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে একটা প্রচার চালানো হচ্ছে। বাম কর্মীদের মধ্যে আমার সম্পর্কে একটা ঘৃণার পরিবেশ তৈরি করতেই সিপিএমের একটা অংশই এটা করছে।’’
তিনি প্রতিভাবান, পড়াশোনা করা মানুষ, তা নিয়ে সংশয় নেই। কিন্তু, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রে ডাহা শূন্য পাবেন। আলিমুদ্দিনের অন্দরে কান পাতলে এমনটাই শোনা যায়। কোনও কোনও নেতার অতিরিক্ত ‘স্নেহ’ই নাকি তাঁর উপরে ওঠার সিঁড়ি। স্মরণযোগ্য অতীতে, দলের মধ্যে ঋতব্রতর মতো করে কাউকে এমন ভাবে প্রশ্রয় দেওয়া হয়েছে বলে মনে করতে পারেন না কেউই। উত্থানের ক্ষেত্রে তাই কোনও বাধাই হয়নি। প্রায় নির্বিবাদেই তিনি রাজ্যসভার কক্ষে পৌঁছে গিয়েছেন।
দলের ওই অংশটির মতে, ঋতব্রতর উঠে আসার ক্ষেত্রে দু’জনের বড় ভূমিকা ছিল। প্রথম জন রাজ্যের তত্কালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। দলের পলিটব্যুরো সদস্যও বটে। অন্য জন, সীতারাম ইয়েচুরি। দলের সাধারণ সম্পাদক। মূলত তাঁদের ‘প্রশ্রয়’ এবং ‘স্নেহ’তেই ঋতব্রত দলে একটা জায়গায় পৌঁছেছিলেন। ওই অংশটির আরও অভিযোগ, ঋতব্রত আসলে গোড়া থেকেই ক্ষমতার কাছাকাছি থাকতে পছন্দ করেন।

Advertisement

আরও পড়ুন, ঋতব্রতকে নিয়ে কৈলাসের কাছে মুকুল? জল্পনা তুঙ্গে

এর পর একটা সময়ে দলের ভিতরেই তাঁর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। আর তখন থেকেই নাকি তিনি তলায় তলায় বিজেপি এবং তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। ঋতব্রত এই যোগাযোগের কথা অস্বীকার করেননি। সাংসদ হিসাবে বিভিন্ন কমিটির বৈঠকে তো তাঁর সঙ্গে অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা হবেই! তাতে অসুবিধার কী! এমনটাই মত ছিল তাঁর। কিন্তু, দলে যখন ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন, দল যখন বহিষ্কারের পথে কয়েক ধাপ এগিয়ে যায়, আলিমুদ্দিন যখন বহিষ্কারের সেই সিদ্ধান্তে সিলমোহর দিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে পাঠায়, তখন তো অন্য দলের নেতাদের সঙ্গে দেখা করা নিয়ে জল্পনা তৈরি হবেই। তবে, কি ঋতব্রত তৃণমূলে যাচ্ছেন? নাকি বিজেপি?
বিজেপি নেতাদের নাকি ঋতব্রতের সঙ্গে কথা বলে ভাল লেগেছে। বিজেপি-র একটা সূত্রের মত, বাংলা ছাড়াও ঋতব্রত ইংরেজি এবং হিন্দিটা বেশ ভালই বলেন। ফলে রাজ্যসভায় যে কোনও জায়গা থেকে তাঁকে জিতিয়ে আনার পাশাপাশি দলের মুখপাত্র হিসাবে কাজে লাগানো যাবে। তবে, সে সব ভাবার মতো সময় নাকি এখনও আসেনি। সবটাই ভাবনাচিন্তার স্তরে রয়েছে। অন্য দিকে, ঋতব্রত নাকি তৃণমূলের সঙ্গেও যোগাযোগ রাখছেন। তৃণমূল নেতৃত্ব তা নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু বলেননি। তবে দলের একটা অংশ বলছেন, দলনেত্রীর কাছে ঋতব্রতর তেমন একটা নম্বর নেই। তিনি নাকি বিষয়টিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না।

Advertisement

আরও পড়ুন, ঋতব্রতকে বহিষ্কারেই সায় দিল আলিমুদ্দিন

যাঁকে নিয়ে এত জল্পনা সেই ঋতব্রতের দাবি, সম্প্রতি মহম্মদ সেলিম অভিযোগ করেছেন, তিনি নাকি ‘আরএসএস-বিজেপির ভাষায় কথা বলছেন’। এ দিন ঋতব্রত বলেন, ‘‘এটা সেই অপপ্রচারেরই ধারাবাহিকতা।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সাংসদ হিসাবে অন্য বিভিন্ন দলের নেতানেত্রীদের সঙ্গে আমাকে যোগাযোগ রাখতে হয়। তার মানে কি সেই দলে যোগ দেওয়া? আর এই যোগাযোগ আমি রেখেই চলব।’’
ঋতব্রতর এই কথা শুনে সিপিএমের সেই অংশটা বলছে, আসলে মাছ যেমন জল ছাড়া থাকতে পারে না, ঋতব্রত তেমনি ক্ষমতার পাশে ছাড়া হাঁটতে পারেন না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement