দলুয়াখাকিতে পড়ুয়াদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে বই। —নিজস্ব চিত্র।
হাই কোর্ট নির্দেশ দেওয়ায় অবশেষে মঙ্গলবার জয়নগরের দলুয়াখাকি গ্রামে ঢুকল সৃজন ভট্টাচার্য, প্রতীকউর রহমান-সহ সিপিএমের পাঁচ জনের একটি প্রতিনিধি দল। পাড়ার বাচ্চাদের নতুন বই-খাতা দেওয়ার পাশাপাশি এলাকা ঘুরে দেখেন ওই সিপিএম নেতারা। এ দিনই কংগ্রেসের নেতারা দক্ষিণ বারাসতে একটি ত্রাণ শিবির থেকে নানা জিনিসপত্র তুলে দিয়েছেন আক্রান্ত এলাকার মানুষের জন্য।
সপ্তাহখানেক আগে খুন হন জয়নগরের বামনগাছি পঞ্চায়েতের তৃণমূল নেতা সইফুদ্দিন লস্কর। এর পরই দলুয়াখাকি গ্রামে বেশ কয়েক জন সিপিএম কর্মী-সমর্থকের বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার পর সিপিএম-সহ বিভিন্ন দলের তরফে দলুয়াখালিকে যাওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু পুলিশ কাউকেই ঢুকতে দেয়নি। পুলিশের এই ‘অতি সক্রিয়তা’য় সোমবার আদালতে মামলা করেন সিপিএমের আইনজীবী-নেতা সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত জানায়, পুলিশের উপস্থিতিতে বামেদের পাঁচ জনের প্রতিনিধিদল গ্রামে যেতে পারবে।
সেই মতো মঙ্গলবার গ্রামে যান সিপিএম নেতারা। কিন্তু বেশি লোক থাকায় গুদামেরহাট এলাকায় আরও এক বার তাঁদের আটকে দেওয়া হয়েছিল। পরে পাঁচ জনকে গ্রামে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়। সঙ্গে থাকে পুলিশও।
সৃজন বলেন, ‘‘আজ আমরা ঢুকতে পারলাম গ্রামে। এটা পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষের জয়। এখানে যা হয়েছে, তা এক কথায় অমানবিক। আমরা বাম ছাত্র সংগঠনের তরফ থেকে এখানকার ছাত্রদের বইখাতা-সহ পড়াশোনার সরঞ্জাম তুলে দিয়েছি।’’
প্রদেশ কংগ্রেসের তরফেও এ দিন গ্রামবাসীদের ত্রাণ বিলি করা হয়েছে। তবে তা হয়েছে ওই এলাকার বাইরে, দক্ষিণ বারাসাতর একটি স্কুল থেকে। গ্রামবাসীদের সেখানেই ডেকে নেওয়া হয়েছিল। এর আগে দলুয়াখাকি ঢোকার পথে বাধা দেওয়া হয়েছিল প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্বকে। তার পরেই তাঁরা ত্রাণ বিলি করার সিদ্ধান্ত নেন।
কংগ্রেস মুখপাত্র সৌম্য আইচ বলেন, ‘‘বারবার আমাদের আটকে দেওয়া হয়েছে। আমরা এখানে রাজনীতি করতে আসিনি। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের কিছু নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী তুলে দিয়েছি। আবার আমরা এখানে আসব।’’ এই দলটির অভিযোগ, প্রশাসনের তরফে যে চাল দেওয়া হয়েছে, তা একেবারেই নিম্ন মানের এবং স্টোব জ্বালানোর তেলও নেই বলে আক্রান্ত এলাকার গ্রামবাসীরা তাঁদের জানিয়েছেন। যদিও প্রশাসনের তরফে এই অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এ দিকে, সইফুদ্দিন খুন তদন্তের অগ্রগতি নিয়ে এ দিনও মুখ খোলেনি পুলিশ। নতুন করে কেউ গ্রেফতার হয়নি।