দেরি করে পায়ে কুড়ুল কেন, প্রশ্ন

চর্চা শুরু হয়েছিল অনেক আগে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ, সোমবার। আগে কোনও চর্চায় না গিয়েও তৃণমূল তাদের পাঁচ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ মে ২০১৭ ০৩:০৬
Share:

সীতারাম ইয়েচুরি

চর্চা শুরু হয়েছিল অনেক আগে। মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে আজ, সোমবার। আগে কোনও চর্চায় না গিয়েও তৃণমূল তাদের পাঁচ প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে। অথচ রাজ্যসভায় তারা কী করবে, এখনও ঠিক করে উঠতে পারল না সিপিএম!

Advertisement

দলের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে ফের রাজ্যসভায় পাঠানোর ব্যাপারে দলের মধ্যে আপত্তি আছে প্রকাশ কারাট-সহ কট্টরপন্থী অংশের। অথচ ইয়েচুরি প্রার্থী হলে তাঁরা যে সমর্থনে রাজি, এক বাক্যেই তা জানিয়ে রেখেছেন কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় ও প্রদেশ নেতৃত্ব। তার পরেও সিপিএমের অবস্থান স্পষ্ট করতে দেরি হওয়ায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে দলের অন্দরেই। সিপিএমেরই একাংশ বলছেন, পরমাণু চুক্তির মতো রাজ্যসভার ভোট নিয়েও কি কারাটেরা শেষ পর্যন্ত তৃণমূলকে কংগ্রেসের হাত ধরার রাস্তা খুলে দিতে চাইছেন?

পরমাণু চুক্তিকে কেন্দ্র করে ২০০৮ সালে মনমোহন সিংহের ইউপিএ সরকার থেকে সমর্থন প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন কারাটেরা। তার পরেই কংগ্রেসের সঙ্গে তৃণমূলের জোট এবং ২০০৯-এর লোকসভা ভোটে বামেদের বিপর্যয়ের শুরু। একই ভাবে এ বার সিপিএম ইয়েচুরিকে প্রার্থী করা নিয়ে গড়িমসি চালিয়ে যাওয়ায় কৌশলী চাল দিচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কংগ্রেস হাইকম্যান্ডের কাছে তিনি প্রস্তাব দিয়ে রেখেছেন, পছন্দসই প্রার্থী দিলে তাঁকে তৃণমূল বাড়তি ভোট দিয়ে সমর্থন করতে পারে। তাতে বাংলা থেকে ষষ্ঠ আসনটি কংগ্রেস-তৃণমূলের যৌথ শক্তিতে জেতা যাবে। প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে অধীর চৌধুরীরা এমন সম্ভাবনা ঠেকাতে চাইছেন ঠিকই। কিন্তু সিপিএমের নিজেদের টানাপড়েনের জন্যই যে পরিস্থিতি ওই দিকে যাচ্ছে, তা বুঝছেন কংগ্রেস নেতৃত্বও। একই কারণে ক্ষোভ রাজ্য সিপিএমের বড় অংশেও। ওই অংশের বক্তব্য, ইয়েচুরি রাজ্যসভায় না থাকলে জাতীয় রাজনীতিতে সিপিএমের কণ্ঠ বলে কিছু থাকবে না জেনেও কেন এত কালক্ষেপ?

Advertisement

আরও পড়ুন: আরও স্মার্ট মেদিনীপুর

ত্রিপুরা রাজ্য কমিটির বৈঠকের জন্য এখন আগরতলায় গিয়েছেন ইয়েচুরি-কারাট, দু’জনেই। সেখান থেকেই ইয়েচুরি মেনে নিচ্ছেন, তৃণমূল নেত্রী তাঁর তাস খেলার সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন! ইয়েচুরির যুক্তি, ‘‘রাজ্য কমিটি কোনও প্রস্তাব দিলে তবেই রাজ্যসভার প্রার্থী নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে।’’ আলিমুদ্দিনে রাজ্য কমিটির বৈঠক হবে ১-২ জুন। তত দিনে মনোনয়নের দিন শেষ হয়ে যাবে! তা হলে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী কেন আপৎকালীন পদক্ষেপ করছে না, উঠছে প্রশ্ন!

কংগ্রেসের পরিষদীয় নেতৃত্ব ঘরোয়া আলোচনায় ঠিক করে রেখেছেন, ষষ্ঠ আসনে তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা হলেও ‘বিক্ষুব্ধ’ বিধায়কদের নিয়ে তাঁরা সিপিএম প্রার্থীকে জেতাতে চাইবেন। কিন্তু সিপিএম কি আদৌ প্রার্থী দেবে? দলের পলিটব্যুরোর সদস্য মহম্মদ সেলিম রবিবার বলেছেন, ‘‘প্রার্থী দেওয়ার জন্যই প্রক্রিয়া, আলোচনা চলছে। নবান্ন অভিযানটা হয়ে গেলে হয়তো জানিয়ে দেওয়া হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement