আচমকাই অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন তমালিকা পণ্ডা শেঠ (৬০)। প্রাক্তন সিপিএম সাংসদ লক্ষ্মণ শেঠের স্ত্রী তমালিকা বেশ কিছু দিন ধরে শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। রবিবার রাতে বাড়িতেই তিনি গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। প্রথমে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় হলদিয়ার বি সি রায় হাসপাতালে। তবে অবস্থার উন্নতি হয়নি। তখন তাঁকে কলকাতায় নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত হয়। তবে পথে তমালিকার অবস্থার অবনতি হয়। তাঁকে ভর্তি করা হয় হাওড়ার ডোমজুড়ের একটি হাসপাতালে। রাত বারোটা নাগাদ সেখানেই মৃত্যু হয় তমালিকার।
ঘটনার সময় লক্ষ্মণবাবু ছিলেন দিল্লিতে। খবর পেয়ে তিনি হলদিয়া রওনা দিয়েছেন। সোমবার রাতে তাঁর পৌঁছনোর কথা। শেঠ দম্পতির দুই ছেলে দীপ্তন ও সায়ন্তনও হলদিয়া পৌঁছেছেন। তবে লক্ষ্মণবাবুর সঙ্গে এ দিন যোগাযোগ করা যায়নি।
ছাত্র জীবনে বাম রাজনীতিতে হাতেখড়ি তমালিকার। রাজনীতির সূত্রেই লক্ষ্মণবাবুর সঙ্গে আলাপ। ১৯৭৯ সালে বিয়ে হয় দু’জনের। তবে শুধু লক্ষ্মণ-জায়া হিসেবে নয়, তমালিকার নিজস্ব রাজনৈতিক পরিচয়ও ছিল। ২০০৬ থেকে ২০১১ পর্যন্ত মহিষাদলের বিধায়ক ছিলেন তিনি। ১৯৯৭-এ হলদিয়া পুরসভার জন্মলগ্ন থেকে টানা চার বার
পুরপ্রধান হন। রাজ্যে পালাবদলের পরে পূর্ব মেদিনীপুরে তৃণমূল যখন নিরঙ্কুশ, নন্দীগ্রাম পর্বের মামলায় জেল-বন্দি লক্ষ্মণবাবু, সেই অবস্থাতেও ২০১২ সালের পুরভোটে জিতে হলদিয়ার পুরপ্রধান হন তমালিকা। আমৃত্যু ছিলেন ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। রাজনীতির পাশাপাশি জেলার সংস্কৃতির জগতেও তিনি ছিলেন চেনা মুখ।
বছর দুয়েক আগে অবশ্য লক্ষ্মণ-তমালিকা দু’জনেরই সিপিএমের সঙ্গে যাবতীয় সম্পর্ক ছিন্ন হয়। লক্ষ্মণবাবুর নেতৃত্বাধীন নতুন দল ‘ভারত নির্মাণ পার্টি’তে যোগ দেন তমালিকা। তাঁর মৃত্যুতে পুরনো ও বর্তমান সহকর্মীরা শোকস্তব্ধ। সিপিএমের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, ‘‘আমরা মর্মাহত। ওঁর পরিবারের সকলকে সমবেদনা জানাচ্ছি।’’
আজ, মঙ্গলবার তমালিকার শেষকৃত্য সম্পন্ন হবে।