(বাঁ দিক থেকে) অধীর চৌধুরী, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়, সুজন চক্রবর্তী। —গ্রাফিক শৌভিক দেবনাথ।
বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায়কে ‘মুখ্যমন্ত্রী মুখ’ হিসাবে দেখতে চান। ‘বন্ধু’ অধীররঞ্জন চৌধুরীর বক্তব্য শোনার পর পাল্টা প্রশ্ন তুলে দিলেন সুজন চক্রবর্তী। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীরের প্রতি সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজনের প্রশ্ন, এমন প্রস্তাবে বিচারব্যবস্থা বা বিচারপতির উপর আস্থা বৃদ্ধি করা হয়, না কি বিড়ম্বনায় ফেলা হয়?
শনিবার মুর্শিদাবাদ সফরে গিয়েছেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়। এ দিন নিজের জেলাতেই রয়েছেন বহরমপুরের সাংসদ অধীর। জেলা কংগ্রেস কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমি চাইব, বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুখ করে একটা নির্বাচন হোক। সেই নির্বাচন হলে আমি কায়মনোবাক্যে ওই মানুষটিকে ভোট দিতে লাইনের সবচেয়ে আগে দাঁড়াব। বাংলার মানুষ তাঁকে বিশ্বাস করছে। ভরসা করছে।’’ অধীরের আরও সংযোজন, ‘‘বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো মানুষেরা রাজনীতিতে এলে নতুন দিগন্ত তৈরি হবে।’’
২০২১ সালের বিধানসভা ভোটের পর্ব থেকে এ রাজ্যে কংগ্রেস এবং সিপিএমের মধ্যে মোটামুটি একটা স্তরের সমঝোতা রয়ে গিয়েছে। পরস্পরের দিকে আঙুল তোলা নেই বললেই চলে। কিন্তু শনিবার অধীরের বক্তব্যের কিছু ক্ষণের মধ্যেই আনন্দবাজার অনলাইনের গ্রাফিক কার্ড টুইট করে সিপিএম নেতা প্রশ্ন ছুড়েছেন তাঁর উদ্দেশে। আনন্দবাজার অনলাইনকে সুজন বলেন, ‘‘যিনি এখনও বিচারপতি পদে রয়েছেন, তাঁর সম্পর্কে এই সব কথা কি বলা যায়?’’ যাঁকে ঘিরে জোটের দুই দলের দুই নেতার এই মতভেদ সেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অবশ্য অধীরের কথা নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে রাজি হননি।
গত দু’বছরে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের একাধিক রায়, পর্যবেক্ষণ নিয়ে বিস্তর আলোচনা হয়েছে। অনেকেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়কে ‘জনগণের বিচারপতি’ আখ্যা দিয়েছেন। বইমেলার ভিড় থেকে বোলপুর স্টেশন— যেখানেই তিনি গিয়েছেন, সেখানেই মানুষের উচ্ছ্বাস দেখা গিয়েছে তাঁকে ঘিরে। অধীর-ঘনিষ্ঠদের বক্তব্য, জনমানসে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের যে ‘জনপ্রিয়তা’ রয়েছে, লোকসভার কংগ্রেস দলনেতা সে কথা ভেবেই তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী মুখ করার কথা বলেছেন।