মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথেই হাঁটার কথা ভাবছে সিপিএম!
সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে প্রাথমিক ভাবে জমিরক্ষা কমিটি গড়ে শুরু হয়েছিল বিরোধীদের আন্দোলন। পরে সিঙ্গুরের কৃষিজমি রক্ষা কমিটির নেতা বেচারাম মান্নাকে তৃণমূলের টিকিট দিয়ে মন্ত্রী করেছিলেন মমতা। নন্দীগ্রামেও ‘শহিদের মা’ ফিরোজা বিবি পরবর্তী কালে তৃণমূলের বিধায়ক। ভূমিরক্ষা কমিটি থেকে আবু তাহের, শেখ সুফিয়ানেরাও পূর্ব মেদিনীপুরে পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদে সরাসরি তৃণমূলেরই নেতা। অনেকটা সেই কায়দাতেই বেসরকারি অর্থলগ্নি সংস্থায় প্রতারিত আমানতকারী ও এজেন্টদের জন্য ‘সুরক্ষা মঞ্চ’ বানিয়ে বছরতিনেক আন্দোলন চালানোর পরে এ বার ওই সংগঠনগুলিকে দলের ছাতায় আনতে চাইছে সিপিএম।
ভুঁইফোড় অর্থলগ্নি সংস্থার (চিট ফান্ড) হাতে ভুক্তভোগীদের সুবিচারের দাবিতে গত তিন বছরে একাধিক মঞ্চ গড়ে উঠেছে রাজ্যে। আদালতের লড়াইয়ে তাদের সহায়তা করেছেন বামপন্থী আইনজীবীরা। রাস্তার আন্দোলনেও সঙ্গে থেকেছেন সিপিএম নেতারা। শুরু থেকেই আন্দোলনকারীদের একাংশ সরাসরি বামের পতাকা নিয়েই লড়াইয়ের পক্ষপাতী ছিলেন। কিন্তু তখন সিপিএম রাজ্য নেতৃত্বের যুক্তি ছিল, দলের রং দেখলে ভুক্তভোগী অনেক মানুষ এগিয়ে না-ও আসতে পারেন। তা ছাড়া, সিপিএম গোলমাল পাকাচ্ছে— এই যুক্তি দেখিয়ে রাজ্য সরকারও ভুক্তভোগীদের প্রতি সহানুভূতিশীল না হতে পারে। এখন তাদের ভিতর থেকেই দলীয় মঞ্চে আন্দোলনের দাবি জোরালো হয়েছে।
আন্দোলনকারী মঞ্চের একাংশের বক্তব্য, জেলায় জেলায় প্রতিবাদ কর্মসূচি এখনও চলছে। কিন্তু আন্দোলনটা ‘না ঘর কা, না ঘাট কা’ হয়ে থাকায় প্রত্যাশিত দাগ কাটতে পারছে না। তার চেয়ে দলের ‘ব্র্যান্ড’ যোগ হলে আন্দোলনের ধার বাড়বে। তাঁরা অতীতে তৃণমূল নেত্রীর কৌশলেরই উদাহরণ দিচ্ছেন। এখন এই যুক্তিতে সহমত সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বও। তবে প্রশ্ন একটা থেকেই যাচ্ছে। ভুক্তভোগীদের দলহীন আন্দোলনে সঙ্গে আছেন কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান বা প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের মতো বিশিষ্ট জনেরা। সিপিএমের সংগঠনে জুড়ে গেলে তাঁরা কি আর রাস্তায় নামবেন?