প্রতীকী ছবি।
জাতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইকে আরও তীব্র করার ডাক দিয়েই আগামী পার্টি কংগ্রেসে যেতে চলেছে সিপিএম। তিন বছর পরে লোকসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে ‘বিজেপি ও তার সহযোগী’দের পরাস্ত করার রাজনৈতিক লক্ষ্যে কোনও পরিবর্তন আনছে না তারা। সেই মর্মেই তৈরি হতে চলেছে পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক দলিল। কিন্তু সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপিকে হারানোর অভিন্ন লক্ষ্য থাকলেও রাজ্যে রাজ্যে কী সমীকরণে বামেরা চলবে, প্রশ্ন এখন সেটাই। এই চর্চা বজায় রেখেই শুরু হচ্ছে সিপিএমের ২৩তম পার্টি কংগ্রেসের প্রস্তুতি।
আগামী পার্টি কংগ্রেসের খসড়া রাজনৈতিক রিপোর্ট তৈরির লক্ষ্যে আজ, শুক্রবার থেকে দিল্লিতে শুরু হচ্ছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির তিন দিনের বৈঠক। দীর্ঘ দিন পরে ভার্চুয়াল মাধ্যম ছেড়ে বিভিন্ন রাজ্যের নেতাদের সশরীর উপস্থিতিতে বৈঠক হবে এ কে গোপালন ভবনে। দলীয় সূত্রের খবর, সিপিএমের পলিটবুরো যে প্রাথমিক খসড়া রাজনৈতিক রিপোর্ট তৈরি করেছে, সেখানে ‘বিজেপি ও তার সহযোগীদের’ পরাস্ত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কথা বলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কমিটিতে ওই প্রাথমিক খসড়ার উপরে আলোচনা হবে। তার পরে আগামী জানুয়ারিতে কেন্দ্রীয় কমিটির পরবর্তী বৈঠকে অনুমোদিত হবে চূড়ান্ত খসড়া। যা ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হবে মতামত নেওয়ার জন্য। চূড়ান্ত খসড়ার উপরে মতামত ও সংশোধনী প্রস্তাব নিয়ে আগামী বছর এপ্রিলে কেরলের কান্নুরে বসবে পার্টি কংগ্রেস।
কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদীর সরকার রয়েছে গত ৭ বছর। ফলে, বিগত কয়েক বছরে বিজেপিকে নিশানা করেই সিপিএম-সহ বামেদের রাজনৈতিক লাইন হয়েছে। সেই লক্ষ্যে এখন কোনও পরিবর্তন হওয়ার প্রশ্ন নেই। কিন্তু প্রশ্ন হল, আগামী লোকসভা নির্বাচনে বিজেপিকে পরাস্ত করতে হলে রাজ্যে রাজ্যে অ-বিজেপি শক্তির জোট কি গড়ে তোলা সম্ভব? সে ক্ষেত্রে বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে বামেরা কি এক ছাতার নীচে আসতে পারে? সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্য অবশ্য বলছেন, ‘‘আমাদের মতো বিরাট দেশে রাজ্যে রাজ্যে পরিস্থিতি আলাদা হয় এবং সেই বাস্তবতা মেনে নিয়েই রাজনীতি চলে। সর্বভারতীয় স্তরে বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলির সমন্বয় অবশ্যই থাকবে। কিন্তু তার জন্য কেরলে কি আমরা দলকে বলতে পারি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে? একই ভাবে বাংলায় কি তৃণমূলের সঙ্গে সমঝোতা সম্ভব?’’ অ-অবিজেপি শক্তির ঐক্যের প্রশ্নে কেন্দ্রীয় কমিটিতে বিভিন্ন রাজ্যের প্রতিনিধিরা কী মত দেন, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে বাম শিবিরে।
এরই পাশাপাশি, আগামী পার্টি কংগ্রেস থেকেই দলের বিভিন্ন কমিটিতে বয়সের সীমা কার্যকর করতে চায় সিপিএম। সংগঠনকে চাঙ্গা করার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাজ্য একাধিক রকমের নীতি নিচ্ছে। সাংগঠনিক স্তরে এই বিভিন্ন নীতির সমন্বয় করে এক সূত্রে বাঁধার বিষয়েও আলোচনা হতে পারে এ বারের কেন্দ্রীয় কমিটিতে।