লড়াই করে বাঁচতে চাই, নজর ডজনে

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, বিয়াল্লিশে তাঁর বিয়াল্লিশই চাই! অমিত শাহ বলে দিয়েছেন, তাঁদের লক্ষ্য বাইশ।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

শেষ আপডেট: ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৩:৫৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, বিয়াল্লিশে তাঁর বিয়াল্লিশই চাই! অমিত শাহ বলে দিয়েছেন, তাঁদের লক্ষ্য বাইশ। বিমান বসু, সূর্যকান্ত মিশ্রেরা এমন কোনও ঘোষণায় যাচ্ছেন না। তবে দলের অভ্যন্তরে তাঁদের নজর এক ডজনে। সেটাও জয় নিশ্চিত বলে নয়! ভাল লড়াই দেওয়ার লক্ষ্যে!

Advertisement

লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করেই লড়া উচিত বলে রায় দিয়েছে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশ। তার পরে আলিমুদ্দিন হাত দিয়েছে আসন পর্যালোচনার কাজে। কোন রাজ্যে কাদের সঙ্গে সমঝোতায় কেমন সমীকরণ দাঁড়াতে পারে বলে তারা মনে করছে, সব রাজ্য কমিটির কাছেই সেই মর্মে রিপোর্ট চেয়েছে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটি। এক দিকে তৃণমূল এবং অন্য দিকে বিজেপি, এই দুই শক্তির মোকাবিলায় কংগ্রেসের হাত ধরলে বাংলায় গোটা বারো আসনে ভাল লড়াই হতে পারে— প্রাথমিক পর্যালোচনায় এমনই মনে করছেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব। প্রাথমিক রিপোর্ট তৈরি হয়ে যাবে ২৬ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ওই সময়ে দিল্লিতে বসবে পলিটব্যুরোর বৈঠক। তার পরে ৬ থেকে ৮ অক্টোবর কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে পেশ করা হবে রাজ্যওয়াড়ি রিপোর্ট।

দলের পলিটব্যুরোর এক সদস্যের কথায়, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপিকে এক ইঞ্চি জমিও ছেড়ে দেওয়ার প্রশ্ন নেই। লড়াই তো সব আসনেই হবে। কিন্তু বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতির একেবারে বস্তুনিষ্ঠ বিশ্লেষণে দেখলে প্রায় ১২টা আসনে তৃণমূল এবং বিজেপির মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি ভাল প্রতিপক্ষ হয়ে উঠতে পারে।’’ সিপিএম সূত্রের খবর, বাংলা ও কেরলের বাইরেও কয়েকটি রাজ্যে নানা গণসংগঠনের আন্দোলনের জেরে বামপন্থীদের কিছু জমি তৈরি হয়েছে। সেই সব রাজ্যেও ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়লে ১৯টি আসনকে ‘সম্ভাবনাময়’ বলে প্রাথমিক ভাবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। তার মধ্যে মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, তামিলনাড়ু, তেলঙ্গানার কয়েকটি লোকসভা আসন আছে।

Advertisement

বাংলায় এখন কংগ্রেসের হাতে চারটি লোকসভা আসন, সিপিএমের দুই। প্রাথমিক আলোচনায় সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব বুঝতে পারছেন, এ বার বামেদের সমর্থন পেলে আসন-সংখ্যার নিরিখে কংগ্রেসের লাভই বেশি হতে পারে! দেশের সরকার গড়ার প্রশ্নে ভোট, সংখ্যালঘু সমর্থন— এই ধরনের বিষয় মাথায় রাখলে মালদহ, মুর্শিদাবাদ থেকে কংগ্রেস কয়েকটি আসন পেতে পারে। অথচ কংগ্রেসের সমর্থন নিয়েও বামেরা সেই সংখ্যায় পৌঁছতে না-ও পারে। এই সূত্রেই বাম নেতাদের একাংশ প্রশ্ন তুলছেন, তাঁদের সহায়তায় কংগ্রেসের লাভ হবে। আবার কংগ্রেস বিধায়কেরা পরবর্তী বিধনাসভা ভোটের আগে তৃণমূলে যোগদানও অব্যাহত রাখবেন। তা হলে এমন সমঝোতায় লাভ কী! কারও কারও আবার প্রশ্ন, রাজ্যসভার পরে এ বার বাংলা থেকে লোকসভাতেও বামেরা শূন্য হয়ে যাবে না তো?

পলিটব্যুরোর এক নেতা অবশ্য বলছেন, ‘‘শেষ কথা বলার সময় এখনও আসেনি!’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement