এনআরসি রুখে জমি উদ্ধারে পথে সিপিএম

লোকসভা ভোটে যেখানে করুণ হাল হয়েছিল, সেই কোচবিহার জেলায় বামেদের মিছিল এবং উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়ায় সমাবেশে বিপুল ভিড় হয়েছে গত কয়েক দিনে।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০১:১৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

উদ্বাস্তু সংগঠনগুলি গা ঝাড়া দিয়ে আবার সক্রিয় হচ্ছে। সরাসরি দলের পতাকা নিয়েও জেলায় জেলায় শুরু হয়েছে মিছিল ও সমাবেশ। পুজোর মুখে কলকাতায় ডাক দেওয়া হয়েছে প্রতিবাদ মিছিলের। অন্য কর্মসূচির সঙ্গেও কৌশলে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে জাতীয় নাগরিকপঞ্জির (এনআরসি) প্রসঙ্গ। লোকসভা ভোটে ভরাডুবির কয়েক মাসের মধ্যেই এনআরসি-কে ঘিরে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপাচ্ছে সিপিএম। মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কর্মসূচির মধ্যে দিয়েই তাদের লক্ষ্য, বাংলায় বিজেপিকে কোণঠাসা করা।

Advertisement

সারা দেশেই তাঁরা এনআরসি চালু করতে চান বলে জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার প্রেক্ষিতে সিপিএমও পাল্টা স্লোগান তৈরি করেছে— ‘আমাদের লাশের উপর দিয়ে এনআরসি করতে হবে’ এবং ‘এক জনকেও কাঁটাতারের ও’পারে যেতে দেবে না বামপন্থীরা’। লোকসভা ভোটে যেখানে করুণ হাল হয়েছিল, সেই কোচবিহার জেলায় বামেদের মিছিল এবং উত্তর ২৪ পরগনা, নদিয়ায় সমাবেশে বিপুল ভিড় হয়েছে গত কয়েক দিনে। স্থানীয় নানা বিষয় থাকলেও মাস জুড়ে জেলায় জেলায় এই সমাবেশ বা মিছিলে এনআরসি-র প্রতিবাদকেই মুখ্য প্রশ্ন হিসেবে তুলে আনছে সিপিএম। কলকাতা জেলা সিপিএমের তরফে কাল, শনিবারই এন্টালি মার্কেটে সব বাম দলকে নিয়ে অবস্থান এবং এন্টালি থেকে পার্ক সার্কাস পর্যন্ত মিছিলের ডাক দেওয়া হয়েছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, ‘‘এনআরসি হতে দেব না, হবে না! ভণ্ড নিরামিশাষীরা শাক দিয়ে মাছ ঢাকতে একের পর এর নরমেধ যজ্ঞ চায়। দু’কোটি বাংলাভাষীকে বিদেশি বানাতে চায়। আমরা চাই সব হাতে কাজ, বিভাজন নয়।’’

নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে এখন ভোটার তথ্য যাচাইয়ের যে কাজ চলছে, তাকে এনআরসি-র প্রস্তুতি হিসেবে ধরে নিয়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে জেলায়। এই পরিস্থিতি মাথায় রেখে শুধু প্রতিবাদ কর্মসূচি নয়, জেলায় জেলায় সহায়তা শিবির করার জন্য দলের কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছে আলিমুদ্দিন। বলা হয়েছে, দলের কর্মীরা দরকারে বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্মার্টফোনে ভোটার তথ্য যাচাইয়ের ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় কাজ করে দিয়ে মানুষকে সাহায্য করবেন।

Advertisement

সম্মিলিত কেন্দ্রীয় বাস্তুহারা পরিষদ (ইউসিআরসি) এবং আরও নানা উদ্বাস্তু সংগঠনের তরফে বৃহস্পতিবার মধু দত্ত, সুকৃতি বিশ্বাস, কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর, নীতীশ বিশ্বাস, হরিপদ বিশ্বাসেরা এনআরসি চালুর তীব্র বিরোধিতা করেছেন। তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েই সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, ‘‘এক টুকরো কাগজকে মানুষের পরিচয় বলে দেখিয়ে যাঁরা রাষ্ট্রের বাইরে বার করে দিতে চাইছেন, তাঁরা মানবতার শত্রু। দল-মত যাঁর যেমন থাকবে। কিন্তু মানুষের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র রুখতেই হবে। এনআরসি করতে গেলে আমাদের লাশের উপর দিয়ে যেতে হবে!’’ এনআরসি নিয়ে জেলায় জেলায় শিবির খোলার পরিকল্পনা নিয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রও বলছেন, ‘‘আমরাও চাই, অনুপ্রবেশ বন্ধ হোক। কিন্তু যাঁরা ৫০-৬০ বছর ধরে আছেন, তাঁদের কেন ভারতীয়ত্বের প্রমাণ দিতে হবে?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement