গণসংগঠনেরও সব ভোট আসেনি, কবুল পার্টি চিঠিতে

সিপিএমের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কমিটি লোকসভা ভোটের ফলাফলের যে প্রাথমিক পর্যালোচনা করেছে, তার ভিত্তিতেই জারি করা হয়েছে এ বারের ২ নম্বর পার্টি চিঠি।

Advertisement

সন্দীপন চক্রবর্তী

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৯ ০০:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

বামের ভোট রামে যাওয়া নিয়ে বিস্তর চর্চা ছিলই। লোকসভা নির্বাচনে সব গণসংগঠনের সব ভোট সিপিএম পায়নি বলে এ বার স্বীকার করে নেওয়া হল পার্টি চিঠিতে। ‘বিভ্রান্তি’ কাটিয়ে রাজনৈতিক চেতনা নিয়ে কাজ করার জন্য সব স্তরের সাংগঠনিক কর্মীদের সতর্কও করে দেওয়া হল।

Advertisement

সিপিএমের কেন্দ্রীয় ও রাজ্য কমিটি লোকসভা ভোটের ফলাফলের যে প্রাথমিক পর্যালোচনা করেছে, তার ভিত্তিতেই জারি করা হয়েছে এ বারের ২ নম্বর পার্টি চিঠি। কেন্দ্রীয় স্তরের বিশ্লেষণের প্রেক্ষিতেই সেই চিঠিতে বলা হয়েছে: ‘বহু আসনে আমাদের পক্ষে মোট ভোট সেই এলাকায় আমাদের শ্রেণি এবং গণসংগঠনগুলির মোট সদস্যের চেয়ে কম। এক জনের একাধিক সংগঠনের সদস্য হওয়ার সম্ভাবনা বিচারে রেখেও এই ঘাটতি আমাদের বোঝাচ্ছে যে, নিজেদের গণসংগঠনগুলির সদস্যদের রাজনীতিকরণের প্রক্রিয়ায় যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে’।

শহরাঞ্চলে গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মধ্যে বামপন্থীদের গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পাচ্ছে বলেও উদ্বেগ ধরা পড়েছে পার্টি চিঠিতে। এই সঙ্কট থেকে বেরনোর জন্য অতীতে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল দলের তরফে। চিঠিতেই মেনে নেওয়া হয়েছে, ‘তবে তার কোনও ফল মেলেনি’। সাম্প্রতিক কালে শ্রমিক আন্দোলনের জেরে দেশ জুড়ে ধর্মঘট হয়েছে। মহারাষ্ট্র, রাজস্থানের কৃষক আন্দোলন সারা দেশের নজর কেড়েছে। কিন্তু ভোটে তার সুফল মেলেনি বলেই পর্যালোচনায় দেখেছেন সিপিএম নেতৃত্ব। সেই কারণেই গণসংগঠনের সদস্যদের ‘রাজনীতিকরণ’-এর উপরে আপাতত জোর দিতে বলা হয়েছে দলের সর্ব স্তরের নেতা-কর্মীদের।

Advertisement

বাংলা থেকে এ বার লোকসভায় একটি আসনও পায়নি বামেরা। পাঁচ বছর আগের লোকসভা নির্বাচনের তুলনায় বামেদের ভোট কমেছে ২২.১৭%। তিন বছর আগের বিধানসভা নির্বাচনের সঙ্গে তুলনা করলে রাজ্যে বাম ভোট কমেছে প্রায় ৩২%। অন্য দিকে বিজেপির ভোট তিন বছরে বেড়েছে ৩০%। বাংলায় ভোটের প্রবণতা কাটাছেঁড়া করতে গিয়ে সিপিএমের রাজ্য কমিটি বাম সমর্থকদের একাংশের বিজেপির প্রচারে ‘প্রভাবিত’ হওয়ার কথাই বলেছে। তৃণমূলের অন্যায়ের মোকাবিলা করতে গিয়ে আপাতত বিজেপিকে সমর্থনের যে ভাবনা বহু সাধারণ মানুষের মধ্যে ছিল, সেই ধারায় বাম ভোটারদের বড় অংশও গা ভাসিয়েছেন। কিছু বাম ভোট আবার তৃণমূলেও গিয়েছে।

চিঠির বক্তব্য, ‘সাধারণ ভাবে, তীব্র সমস্যা ও গণতান্ত্রিক অধিকার নিয়ে নজিরবিহীন ভাবে আক্রান্ত মানুষের এক বিরাট অংশের মধ্যে বিজেপির প্রচার দাগ কাটে— আগে তৃণমূলকে জব্দ করা তার জন্য এই মুহূর্তে সাময়িক ভাবে বিজেপির পক্ষ নেওয়া, অন্যথা তৃণমূল পার পেয়ে যেতে পারে। এতে ঐতিহ্যগত বামপন্থীদের অনুকূলের ভোটও সরে যায়’।

সরে যাওয়া সমর্থন ফিরিয়ে আনাই এখন বামেদের সামনে চ্যালেঞ্জ।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement