ফাইল চিত্র।
সোজা পাটিগণিতে অন্তত কোনও চমকের ইঙ্গিত নেই। তবু ত্রিপুরার একমাত্র রাজ্যসভা আসনে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রার্থী দিয়ে উত্তর-পূর্বের এই রাজ্যের রাজনীতিতে ঈষৎ উত্তেজনার আবহ তৈরিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে সিপিএম। দেশের মোট ৬টা রাজ্যের ১৩টি রাজ্যসভা আসনে নির্বাচন আজ, বৃহস্পতিবার।
ত্রিপুরা থেকে রাজ্যসভার সাংসদ, সিপিএমের ঝর্না দাস বৈদ্যের মেয়াদ শেষ হচ্ছে। ওই আসনটিতে মানিক সরকার, জিতেন্দ্র চৌধুরীরা এ বার প্রার্থী করেছেন দলের বিধায়ক ভানুলাল সাহাকে। বিজেপির প্রার্থী দলের ত্রিপুরা রাজ্য সভাপতি মানিক সাহা। বিজেপি শিবির অবশ্য আত্মবিশ্বাসী, সিপিএম প্রার্থী দেওয়ায় ভোটাভুটি হবে ঠিকই, তবে ত্রিপুরা থেকে প্রথম বার গেরুয়া শিবিরের প্রতিনিধির রাজ্যসভায় যাওয়া নিশ্চিত। আর সিপিএম নেতৃত্বের বক্তব্য, বিজেপির বিরুদ্ধে ‘রাজনৈতিক লড়াই’ জারি রাখতেই রাজ্যসভায় তাঁরা প্রার্থী দিয়েছেন।
মোট ৬০ আসনের ত্রিপুরা বিধানসভায় এখন বিধায়ক রয়েছেন ৫৬ জন। সিপিএমের বিধায়ক রমেন্দ্র চন্দ্র দেবনাথের মৃত্যুতে তাঁর আসন এখন শূন্য। বিজেপির সুদীপ রায় বর্মণ এবং আশিস সাহা পদত্যাগ করে দলবদল করেছেন। আরও এক বিজেপি বিধায়ক আশিস দাস তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় তাঁর বিধানসভার সদস্য-পদ খারিজ হয়ে গিয়েছে। আইপিএফটি-র বিধায়ক বৃষকেতু দেববর্মার অবস্থান ঘিরে প্রশ্ন থাকলেও তাঁর বিধায়ক-পদের বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। তাই তাঁর ভোট দিতে কোনও বাধা নেই বলে স্পষ্ট করে দিয়েছেন ত্রিপুরা বিধানসভার স্পিকার রতন চক্রবর্তী। বর্তমান পরিস্থিতিতে সিপিএমের হাতে থাকছে ১৫ জন বিধায়ক। অন্য দিকে, জোটসঙ্গী আইপিএফটি-কে বাইরে রাখলেও বিজেপির খাতায় রয়েছে ৩৩ জন। এই অঙ্কে সহজেই জয়ের রাস্তা দেখতে পাচ্ছে বিজেপি।
তবে সুদীপবাবুদের দল ছাড়ার পাশাপাশিই শাসক শিবিরকে ভুগিয়ে চলেছে ‘বিক্ষুব্ধ কাঁটা’। সেই সম্ভাবনা মাথায় রেখে বিজেপির ঘরের অস্বস্তি প্রকট করে দেওয়ার কৌশলেই সিপিএম রাজ্যসভায় প্রার্থী দিয়েছে বলে রাজনৈতিক শিবিরের একাংশের ধারণা। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক জিতেন্দ্রবাবু অবশ্য বলছেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক লড়াই। আমরা কি বিজেপিকে খালি ময়দান ছেড়ে দেব?’’ অন্য দলের ভোট পাওয়ার সম্ভাবনা তাঁরা এখনও দেখছেন না দাবি করে জিতেন্দ্রবাবুর আরও মন্তব্য, ‘‘সব লড়াই জেতার জন্যই হয় না। এটা রাজনৈতিক লড়াই।’’ বিজেপি নেত্রী এবং কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিকের মতে, ‘‘অনেকে অনেক কিছু মনে করতেই পারে! কিন্তু ত্রিপুরা থেকে রাজ্যসভায় বিজেপির প্রথম প্রতিনিধির নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত।’’ মানিকবাবুর মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়ে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের উপ-মুখ্যমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা ও প্রতিমা।