ছট পুজোর অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রবিবার দই ঘাটে রণজিৎ নন্দীর তোলা ছবি।
তিন তালাক প্রথা রদ করার বিরুদ্ধে মুখ খুলেছে তৃণমূল। মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের অবস্থানের পাশে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেছে তারা। জমিয়তে উলামায়ে হিন্দের সমাবেশে দুই মন্ত্রীকে পাঠিয়ে তৃণমূল তাদের বক্তব্য স্পষ্ট করার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা আক্রমণে নামল সিপিএম। তাদের বক্তব্য, ধর্ম নির্বিশেষে মহিলাদের জন্য সমানাধিকার চাই। বিজেপি যা চায় না এবং তৃণমূলের এই ব্যাপারে মত দেওয়ার নৈতিক অধিকারই নেই!
মুসলিম মহিলাদের একটি সংগঠন সুপ্রিম কোর্টে জনস্বার্থের মামলা করেছে তিন তালাক প্রথা বন্ধ করার আর্জি জানিয়ে। চলতি মাসেই কলকাতায় মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডের সম্মেলন বসছে। যেখানে তিন তালাক অন্যতম মুখ্য। তার আগে কেন্দ্রের উদ্যোগের প্রতিবাদ করে বিজেপি-বিরোধিতায় এগিয়ে থাকতে চেয়েছে তৃণমূল। উল্টো দিকে, তৃণমূল এবং বিজেপি যে সচেতন ভাবেই মেরুকরণের রাজনীতি করছে, তা সামনে আনাই সিপিএমের লক্ষ্য।
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র রবিবার মন্তব্য করেছেন, ‘‘ধর্ম নির্বিশেষে আমরা মহিলাদের জন্য নিরাপত্তা ও সমানাধিকার চাই। বিজেপি যে অভিন্ন দেওয়ানি বিধির দাবি করছে, সেটা সমানাধিকারের নিশ্চয়তা নয়। আর তৃণমূলের তো এই বিষয়ে বলার মুখই নেই!’’ বস্তুত, মুসলিম মহিলা সংগঠনের দাবিকে সমর্থন করে সিপিএমের পলিটব্যুরো বলেছে, তিন তালাক তুলে দেওয়াই উচিত। কিন্তু বিজেপি-র অবস্থানের সঙ্গে নিজেদের ফারাক দেখাতে চেয়েছে তারা।
সিপিএমের যুক্তি, সংখ্যাগুরু-সহ সব সম্প্রদায়েরই ব্যক্তিগত অধিকার সংক্রান্ত আইনের সংস্কার প্রয়োজন। দত্তক নেওয়া, সম্পত্তির অধিকার বা জীবনসঙ্গী বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রেও বর্তমান আইনের নানা বিধি হিন্দু মহিলাদের জন্য বৈষম্যমূলক। কিন্তু এ সব নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়ে হইচই করে কেন্দ্রের শাসক দল আসলে সংখ্যালঘুদের নিশানা করতে চাইছে বলেই অভিযোগ করছে সিপিএম। আর সূর্যকান্তবাবুরা বলছেন, তিন তালাককে সমর্থন করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল মেরুকরণে মদত দিচ্ছে।