ফাইল চিত্র।
‘শো-কজ়’, কড়া ব্যবস্থার হুঁশিয়ারি সত্ত্বেও পার্শ্ব শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনশন-আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁদের অনশন নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাবের দাবিকে কেন্দ্র করে শুক্রবার উত্তাল হয়ে উঠল বিধানসভা। এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করে এক সময় কক্ষত্যাগ করেন বিরোধী বাম ও কংগ্রেস বিধায়কেরা।
প্রশ্নোত্তর পর্ব কেন রাখা হয়নি, এ দিন বিধানসভার শুরুতেই তা নিয়ে সরব হন কংগ্রেস বিধায়ক মনোজ চক্রবর্তী এবং দলের অন্য বিধায়কেরা। বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী পরে বলেন, ‘‘সরকার কিছুতে নিশ্চয়ই ভয় পাচ্ছে। মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা চেয়ে প্রস্তাব জমা দিয়েছিলাম। আলোচনা হল না কেন?’’ বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং সুজনবাবুর প্রশ্ন, ‘‘২০১৬-১৭ সালের পরিবহণ সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটির রিপোর্ট নিয়ে আলোচনা এত দিন বাদে এত জরুরি হয়ে পড়ল কেন?’’
পার্শ্ব শিক্ষকদের অনশনের বিষয়ে এ দিন মুলতুবি প্রস্তাবের দাবি তুলেছিলেন বামেরা। সেই প্রসঙ্গে বলতে উঠে সুজনবাবু জানান, ২২ দিন ধরে ওই শিক্ষক-শিক্ষিকারা অনশন করছেন। অথচ সরকারের কোনও হেলদোল নেই। সুজনবাবুর প্রশ্ন, সরকার কি মাস্টারমশাইদের মৃত্যু কামনা করছে? সম কাজে সম বেতনের দাবি জানাচ্ছেন শিক্ষকেরা। গ্রুপ-ডি বা চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন বাড়িয়েছে সরকার। শিক্ষকেরা কি তাঁদের তলায় রয়েছেন? এর পরেই বিধানসভার ওয়েলে নেমে বিক্ষোভ দেখাতে দেখাতে কাগজের বল বানিয়ে স্পিকারের দিকে ছুড়তে থাকেন বাম-কংগ্রেস বিধায়কেরা। পরে তাঁরা কক্ষত্যাগ করেন। সুজনবাবু পরে বলেন, ‘‘পার্শ্ব শিক্ষকদের অনশন এবং বাবরি মসজিদ ভাঙার কালো দিন নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাবে আলোচনা চেয়েছিলাম। সুপ্রিম কোর্টও বলেছে, বাবরি মসজিদ ভাঙা অন্যায় হয়েছে। কিন্তু রাজ্য সরকার সেই বিষয়ে আলোচনার প্রস্তাব গ্রহণ করেনি।’’
রাজ্যের পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী তাপস রায় বলেন, ‘‘বিরোধীরা এই কথাগুলো সাংবাদিক বৈঠকে না-বলে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে বলতে পারেন। সভার কাজের বিষয় সেখানেই ঠিক হয়, তাঁরা নিশ্চয়ই জানেন। ওই বৈঠকে দিনের পর দিন না-গিয়ে বাইরে নানা কথা বলে বেড়ানোর কোনও অর্থ নেই। আর বাবরি মসজিদ ভাঙার বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থান দেশের সব রাজনীতি-সচেতন মানুষ জানেন। বাম ও কংগ্রেস কেন বুঝছে না, জানি না।’’
শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে পার্শ্ব শিক্ষক ঐক্য মঞ্চের সদস্যেরা এ দিন ফের চিঠি দিয়েছেন। মঞ্চের যুগ্ম আহ্বায়ক মধুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়ে আমরা ১৩ নভেম্বর চিঠি দিয়েছিলাম। শিক্ষামন্ত্রীর সময় হয়নি দেখা করার। আমরা দেখা করার জন্য সময় চেয়ে ফের চিঠি দিয়েছি।’’ মঞ্চ জানিয়েছে, এ দিন অনশন-মঞ্চে পাঁচ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েন। পাঁচ দিনের জন্য স্কুল বয়কটের ডাক প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে শিক্ষামন্ত্রী দেখা না-করলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।