ভোটে জেতার পর রাম-বাম কর্মীদের উচ্ছ্বাস। নিজস্ব ছবি।
সিপিএম নেতৃত্বের কড়া নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে আবারও ‘রাম-বাম’ জোট দেখা গেল বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর জেলা পূর্ব মেদিনীপুরে। সেই ‘নন্দকুমার মডেল’-এই ‘সাফল্য’ এল মহিষাদল বিধানসভার জগৎপুর শীতলা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে। ভোটে পুরোদস্তুর ধরাশায়ী হল শাসকদল। তবে উল্টো ছবিও রয়েছে। তমলুকের খারুই-গঠরা সমবায় সমিতির নির্বাচনে শাসকদলের কাছে পর্যুদস্ত হয়েছে সিপিএম-বিজেপির জোট।
রবিবার ৬২ আসনবিশিষ্ট জগৎপুর শীতলা সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির নির্বাচনে সিপিএম-বিজেপি জোট সমর্থিত প্রার্থীদের দখলে আসে ৫১টি আসন। আর ১১টি আসনে জেতেন তৃণমূল সমর্থিত প্রার্থীরা। এই ফলাফলের পর বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করেন, সমবায় ভোটে বিজেপি-কংগ্রেস-সিপিএম সব দলই এক সঙ্গে তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। তবে ‘লাল সতর্কতা’ উপেক্ষা করে এই দুই সমবায় নির্বাচনে কেন ‘রাম-বাম’ জোট গড়া হল, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
এ বিষয়ে সিপিএমের জেলা সম্পাদক নিরঞ্জন সিহি বলেন, “আমাদের পার্টির অবস্থান, বিজেপি এবং তৃণমূল দুই দলের বিরুদ্ধেই লড়াই চলবে। বৃহত্তর বামজোট হতে পারে জেলা জুড়ে। যাঁরা বিজেপির সঙ্গে জোট করেছেন, তাঁদের আমরা দল থেকে বহিষ্কার করেছি। রাম-বাম জোটের অনুমোদন দেয়নি দল। আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বামের নাম ভাঁড়িয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করছে বিজেপি। কেউ বিজেপির সঙ্গে জোটের বার্তা দিলেই তাঁর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’ নিরঞ্জনের আরও দাবি, “জগৎপুরে বা তমলুকে কোথাও বিজেপির সঙ্গে আমরা জোট গড়িনি। যাঁরা এমন বার্তা দিতে চেয়েছিলেন, তমলুকে তাঁদের দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তা ছাড়া, সমবায়ের নির্বাচনে রাজনৈতিক মতাদর্শের চেয়েও স্থানীয় আবেগ বেশি প্রাধান্য পায়। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়েই কিছু লোকজন ফায়দা তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছি।”
তবে তমরুকে খারুই-গঠরা সমবায় সমিতির নির্বাচনে মোট ৪৩টি আসনের মধ্যে ৩৯টি আসনে জিতেছেন শাসকদল সমর্থিত প্রার্থীরা। ধরাশায়ী হয়েছে ‘রাম-বাম’ জোট। জোট সমর্থিত প্রার্থীদের জয় হয়েছে মাত্র ৪টি আসনে। এ প্রসঙ্গে তৃণমূলের বক্তব্য, বিজেপি এবং সিপিএমের আঁতাঁতকে মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে।