—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দুর্গাপুজোর ক'দিনে তিন লক্ষ টাকার উপরে বই বিক্রি করল মুর্শিদাবাদ জেলা সিপিএম। এ বারে জেলা জুড়ে শেষ পর্যন্ত ২০টি জায়গায় তারা বইয়ের স্টল দিয়েছিল। তাতে দেখা গিয়েছে তিন লক্ষ ১৭ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে। তবে গত বছর মুর্শিদাবাদ জেলার বিভিন্ন শহর ও ব্লক এলাকায় ১৭টি বইয়ের স্টল দিয়ে যেখানে তিন লক্ষ ২০ হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছিল, সেখানে এবারে তিনটি স্টল বেশি দিলেও গত বারের তুলনায় এবারে তিন হাজার টাকার বই কম বিক্রি হয়েছে।
জেলা সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, এ বছর স্টলের সংখ্যা ২৪টি করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল। তবে শেষ পর্যন্ত ২০টি বইয়ের স্টল করা হয়। সেই সঙ্গে চাহিদা অনুযায়ী পাঠকদের বই দেওয়া সম্ভব হয়নি। যার জেরে এবারে কিছুটা হলেও বই কম বিক্রি হয়েছে। তবে এবারে কালীপুজো এবং জগদ্ধাত্রী পুজোতেও জেলার বিভিন্ন এলাকায় মার্ক্সীয় সাহিত্য ও প্রগতিশীল সাহিত্যের সম্ভারের স্টল দেওয়া হবে। চাহিদা মতো বই যাতে তখন স্টলে রাখা যায় তার চেষ্টা করা হচ্ছে।
সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা বলেন, ‘‘এ বারে বইয়ের স্টলে কম বয়সীদের ভিড় যথেষ্ট ছিল। সেই সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী, বিকৃত ইতিহাস, কেন্দ্রীয় সরকারের নানা জনবিরোধী নীতির উপরে লেখা বইয়ের বিক্রি বেশি হয়েছে।’’
জেলা সিপিএম সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারের বহরমপুর, হরিহরপাড়া, ফরাক্কা, রঘুনাথগঞ্জ, মুর্শিদাবাদ, বেলডাঙা, ডোমকল-সহ জেলায় বইয়ের স্টল খুলেছিল সিপিএম। কোথাও পঞ্চমী বা ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত, কোথাওবা সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত এই সব বইয়ের স্টল চালু ছিল। প্রতিটি স্টলে দৈনিক ৩০০ জন করে মানুষ এসেছেন। কোথাও চার পাঁচ দিন, কোথাও চারদিন বইয়ের স্টল চালু ছিল। সিপিএমের এক নেতা জানান, পুজোর বইয়ের স্টল উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দলের নেতারা উপস্থিত থেকে বক্তব্য রেখেছেন। সেদিন যেমন জনসংযোগ হয়েছে, তেমনই স্টলে বই বিক্রির সময় বহু মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতা হয়েছে। সব মিলিয়ে জনসংযোগ ভাল হয়েছে।
মুর্শিদাবাদ এক সময় সিপিএমের দুর্গ ছিল। ২০১১ সালে রাজ্যে পালা বদলের সময়েও সিপিএম মুর্শিদাবাদে নিজদের দুর্গ অটুট রাখতে পেরেছিল। তবে পরবর্তী সময়ে ধীরে ধীরে রাজ্যের অন্য জেলার সঙ্গে মুর্শিদাবাদেও সিপিএমের সংগঠন দুর্বল হতে থাকে।
পরে দলবদল-সহ নানা কারণে ২০১৬ সালের পর থেকে মুর্শিদাবাদেও তাঁদের অবস্থা খুবই খারাপ হতে থাকে। ২০১৯ সালের লোকসভা কিংবা ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে সিপিএমের সাংসদ বা বিধায়ক শূন্য হয়ে যায়। তবে সম্প্রতি ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলায় একাধিক পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত বামেদের ঝুলিতে গিয়েছে। জেলা পরিষদের কয়েকটি আসনেও তাঁরা জয়ী হয়েছেন। তাঁদের সাংগঠনিক কাজকর্মেও গতি এসেছে। তার পরে পুজোর সময় বই বিক্রিতে বাম নেতারা মোটের উপরে খুশি।
তবে জেলা তৃণমূল নেতা অশোক দাস বলেন, ‘‘সিপিএমকে এখন খালি চোখে দেখা যায় না। সংবাদ মাধ্যমের সহায়তায় তারা বেঁচে থাকতে চায়। পুজোয় বই বিক্রির যা হিসেব দিচ্ছে তার থেকেও কম বিক্রি হয়েছে।"