সুদিন কি ফিরবে! এক সময় কেশপুরে সিপিএমের মিছিলের চেনা ছবি।
প্রায় দেড় বছর কেশপুরে কোনও বড় কর্মসূচি করেনি সিপিএম। এমনকী জাঠা কর্মসূচি থেকেও বাদ ছিল পশ্চিম মেদিনীপুরের এই এলাকা। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেশপুরের সংগঠন কিছুটা গুছিয়ে নিতে তত্পর হল সিপিএম। শিল্পায়ন এবং কাজের দাবিতে বাম-সংগঠনসমূহের ডাকে সিঙ্গুর থেকে শালবনি পদযাত্রা কর্মসূচি থেকে তাই বাদ রাখা থাকছে না এক সময়ের ‘লালদুর্গ’ কেশপুরকে।
দলীয় সূত্রে খবর, সিঙ্গুর থেকে ওই পদযাত্রা কেশপুরের উপর দিয়েই শালবনি পৌঁছবে। কেশপুরে পদযাত্রায় থাকবেন বিমান বসু, রবীন দেবের মতো সিপিএম নেতারা। কর্মসূচির সমর্থনে আজ, রবিবার পদযাত্রা হবে কেশপুরে। পা মেলাবেন সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়।
কেন ফের কেশপুরে কর্মসূচি? প্রতিকূলতা কি তবে কাটল? সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য হরেকৃষ্ণ সামন্তের জবাব, ‘‘মানুষ দুর্বিষহ অবস্থা থেকে মুক্তি চাইছে। মানুষের ডাকে সাড়া দিয়েই আমরা কর্মসূচি শুরু করছি!” তাঁর আরও সংযোজন, “এর আগে কেশপুরে একাধিক কর্মসূচি হয়নি এটা ঠিক। তবে এই কর্মসূচি হবেই।” হামলা হলে প্রতিরোধ হবে বলেও জানান সিপিএমের এই প্রবীণ নেতা।
১৬ জানুয়ারি সিঙ্গুরে পদযাত্রার সূচনা করবেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পশ্চিম মেদিনীপুরে এই পদযাত্রা পৌঁছবে ১৯ জানুয়ারি। ওই দিন সকালে রামজীবনপুর থেকে শুরু হবে পদযাত্রা। থাকবেন শ্যামল চক্রবর্তী, দীপক সরকার প্রমুখ। বিকেলে থাকবেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ জানুয়ারি চন্দ্রকোনা থেকে কেশপুর পদযাত্রায় থাকবেন বিমান বসু। ২১ জানুয়ারি কেশপুর থেকে পদযাত্রায় যোগ দেবেন রবীন দেব। ২২ জানুয়ারি শালবনিতে পদযাত্রা পৌঁছনোর পরে সমাবেশ হবে। থাকবেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র।
মাস দেড়েক আগের জাঠার জেরে জেলার বিভিন্ন এলাকায় দলের বুথ সংগঠনে কিছুটা প্রাণ ফিরেছে বলেই দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। তাঁদের মতে, গত লোকসভার নির্বাচনের পরে অনেকের মনে হচ্ছিল, রাজ্যে বিজেপিই প্রধান বিরোধী দল। অবশ্য বিজেপি মানুষের সমস্যাগুলো নিয়ে সে ভাবে সরব হতে পারেনি। জাঠায় যে ভাবে সাড়া মিলেছে তা থেকে স্পষ্ট, বামেরাই বিকল্প!
এই পরিস্থিতিতে এ বার কেশপুরের সংগঠনেও প্রাণ ফেরাতে চেষ্টা করছে সিপিএম। দলের এক সূত্রের দাবি, গত দেড় বছরে কেশপুরে দলের বড় কর্মসূচি না করাটা রাজনৈতিক রণকৌশল ছিল। সামনে বিধানসভা নির্বাচন। নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করার জন্যই এখন সংগঠনে ঝাঁকুনি আনা দরকার। সিপিএমের এক জেলা নেতার কথায়, “কেশপুরের উপর দিয়ে জাঠা কর্মসূচি হওয়ার ফলে নিশ্চিত ভাবেই দলের কর্মী-সমর্থকেরা উজ্জীবিত হবেন। ধীরে ধীরে সংগঠন গোছানোও সম্ভব হবে।’’ দলের এক সূত্রের দাবি, গত দেড় বছরে কেশপুরে বড় কোনও কর্মসূচি হয়নি। তবে মানুষ লড়াইয়ের ময়দানে ছিলেন! জেলা সিপিএমের এক প্রবীণ নেতার কথায়, “কেশপুরের মানুষ কিন্তু লড়ছেন। লড়াইয়ের ময়দানে আছেন।’’
সিঙ্গুর থেকে শালবনি পদযাত্রাকে সামনে রেখে পশ্চিম মেদিনীপুরের কেশপুরে লড়াইয়ের ময়দানে ফেরাটাই এখন সিপিএমের লক্ষ্য।