প্রতীকী ছবি।
নবান্ন অভিযানে পুলিশের মারের মুখে দলের কর্মীরা যে ভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন, তাতে উজ্জীবিত আলিমু্দ্দিন। কিন্তু এখন রমজানের মাস। বর্ষার মরসুমও সামনে। তাই এখনই আবার গোটা রাজ্য থেকে কলকাতায় লোক জড়ো করে বড় কোনও কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে যাবে না সিপিএম। বরং, কর্মসূচি নেওয়া হবে এলাকাভিত্তিক। যাতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বুথভিত্তিক সংগঠন গ়়ড়ে তুলতে তা কাজে লাগে।
আলিমুদ্দিনে আগামী ১-২ জুন দলের রাজ্য কমিটির বৈঠকে নবান্ন অভিযানের পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা হবে। তার আগে রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী ২২ মে-র কর্মসূচির প্রাথমিক পর্যালোচনা করেছে। সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের মতে, ‘নবান্ন চলো’র কর্মসূচি ‘সফল’। তাঁদের যুক্তি, দু’বছর আগের নবান্ন অভিযানের তুলনায় বেশি লোক এসেছিল এ বার। সাম্প্রতিক লোকসভা ও বিধানসভার উপনির্বাচন এবং পুরভোটে বিপর্যয়ের পরেও এ বারের জনসমাগম বাড়তি উৎসাহ দিয়েছে আলিমুদ্দিনকে। প্রখর রোদ এবং কড়া গরমে মারমুখী পুলিশকে দেখে বাম কর্মীরা পিঠটান দেননি। শেষ পর্যন্ত যুঝে গিয়েছেন লাঠি, রাসায়নিক গ্যাসের সঙ্গে। তার দু’দিন পরেই বিজেপি-র লালবাজার অভিযানে তেমন প্রতিরোধের মেজাজ ছিল না বলে সিপিএম নেতৃত্বের দাবি। কর্মীদের এই চাঙ্গা মেজাজকে ধরে রেখেই পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি শুরু করতে চায় সিপিএম।
দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর এক সদস্যের কথায়, ‘‘এত বড় একটা কর্মসূচি এবং তার জঙ্গি মেজাজের পরে কোনও ভাবেই ঢিলে দিয়ে বসে যাওয়া চলবে না। কিন্তু রমজান এবং বর্যার জন্য বেশি কিছু করাও যাবে না। তাই স্থানীয় স্তরে লাগাতার কর্মসূচি নিয়ে সংগঠনকে গতিশীল রাখতে হবে।’’ সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের বিশ্লেষণ, যে ১৮ দফা দাবি নিয়ে নবান্ন অভিযান হয়েছিল, তার মধ্যে অনেকগুলি আদায় করার জন্য মহকুমা ও ব্লক স্তরে আন্দোলন জারি রাখা সম্ভব। তা-ই করার জন্য জেলা নেতৃত্বকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, দলের অভিযান ‘সফল’ করতে গিয়ে যে কর্মীরা গুরুতর আহত হয়েছেন, প্রয়োজন অনুসারে তাঁদের চিকিৎসার ভারও দল বহন করবে। কাদের আর্থিক সঙ্গতি কেমন, তা বিবেচনায় রেখেই চিকিৎসায় সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সিপিএম নেতৃত্ব। তবে এ সবের মধ্যেও আত্মতুষ্টির অবকাশ দেখছেন না দলের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। দলীয় মুখপত্রে রবিবারই তিনি সতর্ক করেছেন, সংগঠনের সব অংশ এখনও সমান ভাবে সক্রিয় নয়। এই নিষ্ক্রিয়তা ঝে়ড়ে ফেলে পঞ্চায়েত ভোটে লড়াইয়ের জন্য বুথ স্তরে সংগঠন তৈরি রাখাই এখন তাঁদের সামনে চ্যালেঞ্জ।