রবিবার বিজেপির মিছিল। ছবি: ভিডিয়ো থেকে নেওয়া।
অমিত শাহের শহিদ মিনার ময়দানের সভায় যাওয়ার পথে ধর্মতলায় ‘গোলি মারো’ স্লোগান দিয়ে ধৃত তিন বিজেপি সমর্থকদের দু’জনেরই জামিন হল না সোমবার। কেবল বয়স এবং অসুস্থতার কারণে জামিন পেলেন একজন। বাকি দু’জনের তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল মুখ্য মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত।
পুলিশের দাবি, রবিবার গভীর রাতে ইন্দ্রজিত কুমার মাল নামে এক ব্যক্তি নিউ মার্কেট থানায় অভিযোগ জানান ওই বিজেপি কর্মী সমর্থকরদের বিরুদ্ধে যাঁরা ওই স্লোগান দিয়েছেন। ওই অভিযোগে বলা হয়েছে, বিজেপি কর্মী সমর্থকরা যখন মিছিল করছিলেন, তখন ধর্মতলা চত্বরে বিক্ষোভ চলছিল অমিত শাহ এবং সিএএ-র বিরুদ্ধে। সেই সময়ে ওই স্লোগান সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরিতে উস্কানি দিয়েছে। সেই সঙ্গে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। পুলিশের দাবি, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৫৩এ ( সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে উস্কানি), ৫০৫ (কোনও সম্প্রদায়কে হুমকি), ৫০৬ (হুমকি) এবং ৩৪ (এক উদ্দেশে কোনও কাজ করা)- ধারায় মামলা দায়ের করা হয়। রাতেই গ্রেফতার করা হয় তিন বিজেপি কর্মী পঙ্কজ প্রসাদ, ধ্রুব বসু এবং সুরেন্দ্র তিওয়ারিকে।
সোমবার তিনজনকে ব্যাঙ্কশাল আদালতে মুখ্য মেট্রোপলিটান ম্যাজিস্ট্রেট দীপাঞ্জন সেনের আদালতে তোলা হলে ধৃতদের পক্ষে সওয়াল করতে নামেন বিজেপি-র আইনজীবী সেলের এক গুচ্ছ আইনজীবী। তাঁদের একজন সিদ্ধার্থ রায় সওয়াল করেন যে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই গ্রেফতার করা হয়েছে ওই তিনজনকে। ওই স্লোগান দেশের শত্রুদের উদ্দেশ্য করে দেওয়া হয়েছে, কোনও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে নয়। তাঁরা তিন অভিযুক্তেরই জামিনের আবেদন জানান।
আরও পড়ুন: ‘পরিকল্পিত গণহত্যা হয়েছে দিল্লিতে’, নেতাজি ইন্ডোরে মমতা
জবাব দিতে উঠে সরকারি আইনজীবী অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় তীব্র ভাবে জামিনের আবেদনের বিরোধীতা করেন। তিনি সওয়াল করেন, যে ধারায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তা জামিন অযোগ্য। পাশাপাশি, যে ভাষায় তাঁরা স্লোগান দিয়েছেন তা উস্কানির সমান। তিনি তিনজনের ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানান। বিচারক দু’পক্ষের বয়ান শুনে ৭১ বছর বয়সী হরিদেবপুরের বাসিন্দা ধ্রুব বসুকে বয়সের কারণে জামিন মঞ্জুর করেন। তবে বাকি দু’জনকে তিন দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। বিজেপির দাবি, ধৃত তিন জনেই তাঁদের দলের পদাধিকারী এবং বিরোধী রাজনীতি করার জন্যই গ্রেফতার করা হয়েছে।
লালবাজার সূত্রে খবর, রবিবার দুপুরে ওই ঘটনা ঘটার পরই পুর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দেওয়া হয় নবান্নকে। সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলার পরই ‘গোলি মারো’ স্লোগানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার প্রস্তুতি নেয় কলকাতা পুলিশ। সোমবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্পষ্ট করে দেন যে ওই স্লোগান যাঁরা দিয়েছেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।