আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে রাজ্যের অনুমোদন পেয়েছে সিবিআই। গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
আরজি করে আর্থিক দুর্নীতির মামলায় সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে রাজ্যের অনুমোদন পেয়েছে সিবিআই। কিন্তু ট্রায়াল কোর্টকে সে কথা জানানো হয়নি। আগেই কলকাতা হাই কোর্টে অনুমোদনের কথা জানিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। এতে আলিপুর আদালত ক্ষুব্ধ। সিবিআইকে তারা শো কজ় করেছে। তার আগে সিবিআইয়ের আইনজীবীকে ধমকও দিয়েছেন আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারক। তাঁর বক্তব্য, এই অনুমোদনের জন্য চার্জগঠন প্রক্রিয়া আটকে আছে। তাই আগে এই অনুমোদনের কথা ট্রায়াল কোর্টে জানানো উচিত ছিল।
আরজি করের আর্থিক দুর্নীতির মামলায় গত ২৯ নভেম্বর আলিপুর আদালতে চার্জশিট জমা করেছিল সিবিআই। তাতে নাম ছিল হাসপাতালের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপের। কিন্তু তিনি রাজ্য সরকারি কর্মচারী হওয়ায়, তাঁর বিরুদ্ধে চার্জগঠনের জন্য সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন। সেই অনুমোদন এত দিন আটকে ছিল। সম্প্রতি রাজ্যের অনুমোদন মিলেছে। বুধবার হাই কোর্টে সে কথা জানায় সিবিআই। আদালত সাত দিনের মধ্যে সন্দীপদের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের নির্দেশ দেয়। বৃহস্পতিবার এই সংক্রান্ত শুনানি ছিল আলিপুর আদালতে। সেখানেই সিবিআইকে ভর্ৎসনা করেন বিচারক।
রাজ্যের অনুমোদন পাওয়ার পরেও কেন আলিপুর আদালতে প্রথমেই তা জানানো হল না? সিবিআইয়ের উদ্দেশে প্রশ্ন করেন বিচারক। সিবিআই জানিয়েছে, ২৭ তরিখ সন্ধ্যায় অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। তার পর তা খতিয়ে দেখছিল সংস্থা। সেই কারণে আলিপুর আদালতে জানানো হয়নি। বিচারকের মন্তব্য, ‘‘ট্রায়াল কোর্টকে বাইপাস করে হাই কোর্টে জানালেন? আমি শো কজ় করব। যা বলার, লিখিত জানাবেন।’’
অন্যতম অভিযুক্ত আফসার আলির আইনজীবী সোহিনী অধিকারী বলেন, ‘‘চার্জশিট দেওয়া হয়ে গিয়েছে নভেম্বরে। রাজ্যের অনুমোদন পাওয়ার পরেও ট্রায়াল কোর্টে কেন জানাল না সিবিআই? এটা তো হওয়ার কথা নয়। তাদের শো কজ় করা হয়েছে। লিখিত ভাবে এর জবাব দিতে হবে।’’
আফসারের অপর আইনজীবী শ্যামল মণ্ডল বলেন, ‘‘এই মামলায় প্রথম থেকেই সিবিআই সহযোগিতা করছে না। ২৭ তারিখে তারা রাজ্যের অনুমোদন পেয়েছেন। আজ ৩০ তারিখ। কেন এত দেরি করে কোর্ট কে জানানো হল? ওদের শো কজ় করা হয়েছে। এমনিতেই এই মামলায় এত দেরি হচ্ছে।’’
আরজি করে মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরেই প্রকাশ্যে আসে হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ। সেই মামলায় প্রথমে সন্দীপকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তার পর এই মামলার সূত্র ধরে বিপ্লব সিংহ, আফসার আলি এবং সুমন হাজরাকেও গ্রেফতার করেছিলেন তদন্তকারীরা। এই মামলায় শেষ গ্রেফতার আশিস পাণ্ডে। প্রত্যেকেই আপাতত জেলে। ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কে দোষী সাব্যস্ত করে আমৃত্যু কারাবাসের নির্দেশ দিয়েছে শিয়ালদহ আদালত। ওই মামলায় অভিযুক্ত হলেও সন্দীপদের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেয়নি সিবিআই। তাই তিনি এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ মণ্ডল জামিন পেয়ে যান। তবে আর্থিক দুর্নীতি মামলায় সন্দীপ এখনও জেল খাটছেন। তাঁদের বিচারপ্রক্রিয়া দ্রুত শুরু হবে।