এএফপির প্রতীকী ছবি।
করোনা পরীক্ষার কিটের অপেক্ষায় হাপিত্যেশ করে বসে থাকার প্রয়োজন নেই। কেন্দ্রের গবেষণাকেন্দ্র এবং রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতেই করোনার পরীক্ষা সম্ভব। রাজ্যের বিজ্ঞানীদের একাংশ এই দাবি করছেন। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকারের মুখ্য বিজ্ঞান বিষয়ক উপদেষ্টা কে বিজয়রাঘবনও সরকারি নথিতে জানিয়েছেন, করোনা-পরীক্ষার জন্য এবং ওই ভাইরাসের প্রতিষেধক আবিষ্কারের গবেষণায় এখন দেশের বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রগুলিকে ব্যবহার করা উচিত। করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে কেন্দ্র এবং রাজ্যের গবেষণাকেন্দ্রগুলিতে মানুষের লালারসের নমুনা পরীক্ষার অনুমতি চেয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠিও দিয়েছে বিজ্ঞানীদের সংগঠন জয়েন্ট অ্যাকশন কমিটি অব অটোনমাস রিসার্চ ইনস্টিটিউটস (জ্যাকারি)। ওই চিঠির প্রতিলিপি তারা পাঠিয়েছে রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজীব সিংহকেও। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে চিঠির প্রাপ্তিস্বীকার করা হয়েছে।
জ্যাকারির দাবি, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জানিয়েছে, করোনা-যুদ্ধে সবচেয়ে কার্যকর পদক্ষেপ ব্যাপক ভাবে মানুষের লালারসের পরীক্ষা করে ফেলা। দেশের বিজ্ঞান গবেষণাকেন্দ্রগুলিতে ওই পরীক্ষার অনুমতি মিললে অল্প সময়ে দেশের বহু মানুষের করোনা পরীক্ষা করে ফেলা যাবে এবং তাতে রাজ্য তথা দেশের সরকারি কোষাগারের টাকাও অপব্যয় হবে না। সে ক্ষেত্রে যাঁদের শরীরে ওই ভাইরাস পাওয়া যাবে, শুধু তাঁদের আইসোলেশন বা কোয়রান্টিনে রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করলেই সংক্রমণ ঠেকানো যাবে।
কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োকেমিস্ট্রি এবং বায়োফিজিক্স বিভাগের শিক্ষক উৎপল ঘোষ জানান, কোনও মানুষের শরীরের করোনা ভাইরাস আছে কি না, তা জানতে তাঁর লালরসের যে ধরনের পরীক্ষা করা হয়, তা তাঁরা ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণাগারে সব সময় করে থাকেন। স্নাতকোত্তর স্তরেও তা শেখানো হয়। ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)-এর ছাড়পত্র ছাড়া বিজ্ঞান গবেষণাগারে করোনা পরীক্ষা সম্ভব কি না, সে প্রসঙ্গে উৎপলবাবু বলেন, ‘‘আইসিএমআর-এর নির্দেশিকা মেনে হাসপাতালগুলিতে ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে মানুষের লালারসের নমুনা সংগ্রহ কেন্দ্র গড়া যায়। সেখানে লালারসের ভাইরাস মেরে আরএনএ আইসোলেট করে বিজ্ঞানের গবেষণাকেন্দ্রগুলিতে পাঠালে তাতে করোনা ভাইরাস আছে কি না, পরীক্ষা করা যায়। তার উপযুক্ত পরিকাঠামো ওই বিজ্ঞান কেন্দ্রের আছে কি না, তা দেখবে জৈব প্রযুক্তি বিভাগের স্থানীয় বায়ো সেফটি কমিটি বা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চের এথিকস কমিটি।’’
জ্যাকারির সম্পাদক কুন্তল ঘোষ বলেন, ‘‘আমাদের আবেদন, দেশের এই সঙ্কটকালে করোনা পরীক্ষার জন্য শুধু কিট-নির্ভর হয়ে না থেকে বিজ্ঞানীদের ব্যবহার করা হোক।’’