কোটা থেকে ফিরলেন আটকে পড়া ছাত্রছাত্রীরা।
দু’মাস বাদে সড়কপথে রাজস্থান থেকে রাজ্যে ফিরলেন ২,৩৬৮ জন পড়ুয়া, ১০১টি বাসে। শুক্রবার বিকেল থেকে বাসগুলি ঢুকতে শুরু করলেও অনেকেরই ঘরে ফেরায় বাদ সেধেছে বৃষ্টি। রাতে কলকাতা ও দুর্গাপুর থেকে কয়েক জন পড়ুয়াকে বাড়ি ফেরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ডাক্তারি-ইঞ্জিনিয়ারিং প্রবেশিকার প্রস্তুতি নিতে কোটায় গিয়েছিলেন তাঁরা।
লকডাউনের ফলে কোটায় আটকে ছিলেন ওই পড়ুয়ারা। টাকাপয়সা ফুরিয়ে গিয়েছিল, খাওয়ার সমস্যা হচ্ছিল। এই পরিস্থিতিতে কোটা প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে গত ২৭ এপ্রিল পড়ুয়াদের ফেরানোর সিদ্ধান্তের কথা জানায় পশ্চিমবঙ্গ সরকার। উত্তরপ্রদেশ এবং অসম সরকারও ইতিমধ্যে কোটা থেকে রাজ্যের ছেলেমেয়েদের ফিরিয়ে এনেছে।
পশ্চিমবঙ্গে ফেরার পর তাঁদের ১৪ দিন পর্যন্ত বাড়িতেই বিধি মেনে থাকার জন্য (হোম কোয়রান্টিন) আর্জি জানিয়েছে প্রশাসন। তবে বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা, মানবিক কারণে পড়ুয়াদের ঘরে ফেরানো হলেও তাঁদের হোম কোয়রান্টিন বিধি মেনে চলা একান্ত আবশ্যক। তা না-হলে বিপদের আশঙ্কা থেকে যায়। কারণ, অন্য রাজ্য থেকে এবং দীর্ঘ পথ পেরিয়ে তাঁরা এসেছেন।
আরও পড়ুন: করোনা-আক্রান্তে সংখ্যা নিয়ে বিভ্রান্তি স্বাস্থ্যসচিবের চিঠিতে
পড়ুয়াদের ফেরার পথও অবশ্য সব ক্ষেত্রে সুখের ছিল না। বিহারের চম্পারন জেলার একটি টোলপ্লাজ়ায় শিলিগুড়ি অভিমুখী উত্তরবঙ্গের পড়ুয়াদের কাছে টাকা চেয়ে গাড়ি আটকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক এস পোন্নমবলম বিহারের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা মেটান। এ দিন বিকেল ৩টে থেকে শিলিগুড়ির কাওয়াখালি স্থানান্তর শিবিরে বাসগুলি আসতে শুরু করে। ২৭টি বাসে ৭৮২ জন ছাত্রছাত্রী আসার কথা উত্তরবঙ্গে।
আরও পড়ুন: রেড জ়োন নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য বিরোধ
কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার পড়ুয়াদের নিয়ে এ দিনই ২৪টি বাস আসানসোলে এসেছে। সেখানে গোলাপ ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হয় তাঁদের। তবে পড়ুয়ারা ফেরার আগেই রাজ্যের নানা প্রান্তে আশঙ্কার আবহ। বোলপুরের গোয়ালপাড়ায় একটি কোয়রান্টিন কেন্দ্রে রাখার কথা ছিল বীরভূমের পড়ুয়াদের। সেখানে বিক্ষোভ থামাতে বিডিও, এসডিপিও-কে হস্তক্ষেপ করতে হয়।
বাঁকুড়ায় শহর লাগোয়া ধলভাঙা এলাকা থেকে পড়ুয়াদের বিভিন্ন থানা এলাকায় পুলিশ দিয়ে বাড়ি নিয়ে যাওয়ার কথা। স্থানীয় প্রশাসনের আশ্বাস, কোটা থেকে আসা প্রত্যেকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। ২৯ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় বাসে উঠেছিলেন পড়ুয়ারা। দূরত্ব-বিধি মেনে এক-একটি বাসে ৩০ জন করে পড়ুয়াকে বসানো হয়েছিল। দেওয়া হয়েছিল খাবারের বাক্স।
আসানসোলে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে দক্ষিণবঙ্গ রাষ্ট্রীয় নিগমের বাসে পাঠানো হয় পড়ুয়াদের। দুর্গাপুরে জল, হালকা খাবারও দেওয়া হয়। বৃষ্টিতে দুর্গাপুরে আটকে পড়েছিলেন বেহালার স্নেহাশিস শর্মা। কয়েকটি বাস ছাড়তে দেরি হয়। তবে শুক্রবার বিকেল ৫টা নাগাদ নেতাজি ইন্ডোরে দু’টি বাসে ৪৩ জন পড়ুয়াকে নিয়ে আসা হয়। পুলিশের মাধ্যমে পড়ুয়াদের কলকাতা ও কাছাকাছি অন্যত্র পাঠানোর কথা।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)