ছবি এএফপি।
লকডাউনে হস্টেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কেউ আছেন বন্ধুর বাড়িতে। কেউ বা থাকছেন ভাড়া-বাড়িতে। যে-সব এলাকায় তাঁরা আছেন, সেগুলো সবই রেড জ়োনের আওতায় পড়ে। শহরে করোনা-আক্রান্তের মৃত্যুর খবর শুনছেন রোজই। তাই আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটছে মুম্বইয়ে পড়তে যাওয়া কয়েকশো বাঙালি ছাত্রছাত্রীর।
কেউ মুম্বই বিশ্ববিদ্যালয়, কেউ মুম্বই আইআইটি, কেউ বা টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশাল সায়েন্সের পড়ুয়া। ওঁরা জানাচ্ছেন, দেশের মধ্যে সব থেকে খারাপ অবস্থা মহারাষ্ট্রের। করোনা-আতঙ্কের মধ্যে কার্যত একা একা দিন কাটছে ওঁদের। সহপাঠীদের সঙ্গে ফোনে কথা হচ্ছে। কিন্তু লকডাউন চলায় আপদে-বিপদে তাঁদের কাছে যেতে পারছেন না।
মুম্বইয়ের গোবান্ডি এলাকায় একা ঘর ভাড়া নিয়ে থাকেন এন্টালির মেয়ে রূপসা কর্মকার। টাটা ইনস্টিটিউট অব সোশাল সায়েন্সের ওই পড়ুয়া বলেন, “কোর্স শেষ। বাড়ি চলে যাওয়ার কথা ছিল। লকডাউনে আটকে গিয়েছি। টাকা ফুরিয়ে আসছে। অসহায় লাগছে।” ব্যারাকপুরের ইন্দ্রজিৎ ঘোষ বলেন, “সমীক্ষায় পড়লাম, মে মাসে সব থেকে খারাপ অবস্থা হবে মহারাষ্ট্রের। হস্টেল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অন্ধেরিতে এক বন্ধুর বাড়িতে আছি। দ্রুত বাড়ি ফিরতে চাই।” ওই পড়ুয়ার প্রশ্ন, রাজস্থানের কোটায় পড়তে যাওয়া ছাত্রছাত্রীদের জন্য রাজ্য সরকার যদি ঘের ফেরার ব্যবস্থা করে, তা হলে তাঁদেরও ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না কেন?
কয়েক জন পড়ুয়া জানান, মুম্বইয়ে আটকে পড়া ছাত্রছাত্রীদের তালিকা তৈরি করে মুম্বই পুলিশকে দেওয়া হয়েছিল। সেই তালিকা পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ-প্রশাসনের হাতে পৌঁছে দেওয়া হবে, মিলেছিল এমন আশ্বাসও। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে কিছুই হয়নি। মৃত্তিকা বিশ্বাস নামে এক ছাত্রী বলেন, “কোনও উপায় না-দেখে নিজেদের অসহায় অবস্থার কথা ভিডিয়ো তুলে পরিচিতদের মধ্যে ছড়াচ্ছি। সোশাল মিডিয়ায় জানাচ্ছি। যদি কোনও সাহায্য মেলে, এই আশায়।” মৃত্তিকার বাড়ি নিউ টাউনে। তিনি জানান, মুম্বইয়ে এখন এমন অবস্থা যে, পাড়ার বাজারে যেতেও আতঙ্ক হয়। রাস্তাঘাট সুনসান। অথচ সব কাজই একা একা করতে হচ্ছে তাঁকে। নিউ টাউনে মা-বাবার জন্যও খুব চিন্তা হচ্ছে তাঁর।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)