বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। —ভিডিয়ো থেকে নেওয়া ছবি
নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির বিরুদ্ধে রাজনীতি করার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করে তার জবাব দিলেন দিলীপ ঘোষ। বিজেপির রাজ্য সভাপতির অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীই অসহযোগিতা করছেন। দিলীপ ঘোষের তোপ, বিজেপিকে কাঠগড়ায় তুলে নিজেদের দোষ ঢাকা যাবে না।
লকডাউনের মধ্যেও আগামী সোমবার থেকে রাজ্যের গ্রিন জোন এলাকায় আরও কিছু দোকানপাট খোলায় ছাড়পত্র দিচ্ছে রাজ্য। বুধবার নবান্নে সেই সব ঘোষণার সময়ই বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিযোগ, এই সঙ্কটের মধ্যেও রাজনীতি করছে বিজেপি। কোথাও সামান্য একটু ভুল হলেও তা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ছে। সহযোগিতার বদলে অসহযোগিতা করছে।
তার পাল্টা হিসেবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই অসহযোগিতার অভিযোগ তুলে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘যাই বলছি, তাতেই বলছেন রাজনীতি করছে। চার দিকে হাহাকার চলছে। শুধু নবান্নে বসে ঘোষণা হচ্ছে। মানুষ ত্রাণ পাচ্ছেন না। মানুষ ত্রাণ না পেলে বিজেপি বলবেই।’’ সুর আরও চড়িয়ে বিজেপি সভাপতি বলেন, ‘‘উনি বলছেন সহযোগিতা চান। অথচ আমাদের কর্মীরা ত্রাণ দিতে গেলেই তাঁদের পুলিশ দিয়ে আটকে দেওয়া হচ্ছে। এর নাম সহযোগিতা?’’
মুখ্যমন্ত্রীর দিকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে দিলীপ ঘোষ বলেছেন, ‘‘উনিই (মুখ্যমন্ত্রী) সহযোগিতা চান না। উনি সহযোগিতার কথা বলছেন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত রাজ্যে কোনও সর্বদলীয় বৈঠক হয়েছে? সাংসদ-বিধায়কদের নিয়ে কোনও আলোচনা করেছেন উনি? কোনও জেলাশাসক সাংসদ-বিধায়কদের সঙ্গে কথা বলেছেন?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বিভিন্ন রাজ্যে উন্নয়ন নিয়ে আলোচনার জন্য দিশা কমিটি রয়েছে। সেই কমিটিতে শাসক-বিরোধী সব সাংসদ-বিধায়কদের সঙ্গে আলোচনা করেন জেলাশাসক। আমাদের এখানে কোনও দিশা কমিটিই নেই।’’
আরও পড়ুন: গ্রিন জোনে কী কী খুলবে সোমবার থেকে, জেনে নিন
টিকিয়াপাড়ায় পুলিশের উপর হামলাকে রাজনৈতিক ইস্যু করতে চেয়েছে বিজেপি। তা নিয়েই মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ তুলে বলেছেন, ‘‘সম্পূর্ণ নতুন পরিস্থিতি। পুলিশ প্রশানসও নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে। ফলে ভুলভ্রান্তি হতেই পারে। তার জন্য এ ভাবে রাজনীতি করা উচিত নয়।’’ জবাবে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘সব ধামাচাপা দেওয়া হচ্ছে। তার মধ্যেও যেটা বেরিয়ে যাচ্ছে, সেটা ভুল নয় ফেক নিউজ। সরকারের ভুল-ভ্রান্তি, দোষত্রুটি আমারা ধরিয়ে দেবই। বিরোধী দল হিসেবে এটা আমাদের দায়িত্ব।’’
মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, দুই চিকিৎসকের পরিবারের হাতে ১০ লক্ষ টাকা করে তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘‘বিমার টাকা নয়, সরকারি টাকা দেওয়া হয়েছে। বিমা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হলে তার প্রিমিয়াম দিতে হয়। কোন সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে জানান।’’
আরও পড়ুন: লকডাউন উঠলে চালু হবে নিয়ন্ত্রিত বিমান পরিষেবা, দেওয়া হল এক গুচ্ছ নির্দেশিকা
আগামী সোমবার থেকে যে সব দোকানপাট খোলায় ছাড় দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে চায়ের দোকানও। দিলীপ ঘোষ এ দিন তা নিয়ে কটাক্ষ করে বলেন, ‘‘চায়ের দোকান আমরা জানি আড্ডার জায়গা। কিন্তু চায়ের দোকান খুললে কি মানুষের কোনও লাভ হবে?’’