প্রতীকী চিত্র
তিনবেলা কী খাবেন করোনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীনেরা, তা ঠিক করে দিল রাজ্য। খাবার ঠিক করার সঙ্গে তার পরিমাণও নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর থেকে এ বিষয়ে এক নির্দেশিকা জেলায় এসেছে। ওই নির্দেশিকা জেলার করোনা হাসপাতালগুলিতে পাঠানো হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিমাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘কোভিড হাসপাতালের খাদ্য তালিকা সংক্রান্ত ওই নির্দেশ পেয়েছি। জেলায় পদক্ষেপ করাও হচ্ছে।’’ দু’একদিনের মধ্যেই জেলার করোনা হাসপাতালগুলিতে নির্দেশ কার্যকর হতে পারে বলে খবর।
খাবার সরবরাহের জন্য রোগীপিছু বরাদ্দও বাড়িয়েছে রাজ্য। আগে খাবারের জন্য রোগীপিছু বরাদ্দ ছিল দিনে ৫৬ টাকা। এখন তা ১৫০ টাকা করা হয়েছে। জেলার এক করোনা হাসপাতালের সুপার মানছেন, ‘‘রোগীপিছু বরাদ্দ প্রায় তিনগুণ বাড়ানো হয়েছে। এতে খাবারের গুণগত মান বজায় রাখাও সম্ভব হবে।’’ ওই সুপারও খাদ্যতালিকা সংক্রান্ত নির্দেশ পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন। নতুন তালিকা অনুযায়ী খাবার দিতে পদক্ষেপ শুরুও করেছেন তিনি।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে রাজ্যের তৈরি করে দেওয়া খাদ্য তালিকা জানা গিয়েছে। নির্দেশ অনুযায়ী, প্রাতরাশে রোগীদের দিতে হবে চার পিস পাউরুটি, একটি সিদ্ধ ডিম, একটি কলা এবং গরম দুধ (২৫০ মিলিলিটার)। দুপুরের খাবারে থাকবে ভাত (১০০ গ্রাম), ডাল (৫০ গ্রাম), মরসুমি আনাজ, মাছ বা মাংস (৮০-৯০ গ্রাম) আর দই। রাতের খাবারে দিতে হবে ভাত (১০০ গ্রাম) বা রুটি, ডাল (৫০ গ্রাম), মরসুমি আনাজ, মাছ অথবা মাংস (১০০ গ্রাম)।
মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালের (লেভেল-১) সুপার নন্দন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নতুন নির্দেশ পেয়েছি। এতে রোগীরা আরও পুষ্টিকর খাবার পাবেন।’’ একই মত মেদিনীপুরের করোনা হাসপাতালের (লেভেল-২) নোডাল অফিসার পবিত্র মণ্ডলেরও।
অনেকে মনে করছেন, উত্তরপ্রদেশের মতো ঘটনা যাতে এ রাজ্যে না ঘটে, সেই জন্যই এই নির্দেশ। সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের সরকারি হাসপাতালে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন রোগীরা। অভিযোগ, এই করোনা হাসপাতালে রোগীদের জন্য সেদিন কোনও খাবারের ব্যবস্থা ছিল না। পানীয় জলও পাননি চিকিৎসাধীনেরা। সমাজমাধ্যমে হাসপাতালের পরিস্থিতির ছবি ও ভিডিয়ো তুলে শেয়ার করেছিলেন ভুক্তভোগীরাই। পশ্চিমবঙ্গে অবশ্য এখনও করোনা হাসপাতালের খাবার নিয়ে বড় ধরনের কোনও অভিযোগ নেই। তবে হাসপাতালের পরিবেশ-পরিস্থিতি নিয়ে অভিযোগ রয়েছে। হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ জানাচ্ছেন, এ রাজ্যে খাবার নিয়ে যাতে রোগীদের অসন্তোষ না তৈরি হয় সেই জন্যই নতুন নির্দেশ।