প্রতীকী ছবি।
অফলাইন ছাড়া অন্য কোনও মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। তাই তাদের প্রস্তাব, চলতি বছরের সব উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে রাজ্য সরকারের তরফে করোনা প্রতিষেধক দেওয়া হোক। সংসদ ইতিমধ্যে বিষয়টি মৌখিক ভাবে বিকাশ ভবনকে জানিয়েছে।
সংসদের সভানেত্রী মহুয়া দাস শুক্রবার বলেন, ‘‘উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর সংখ্যা আট লক্ষেরও বেশি। পরীক্ষা নিতে হবে অফলাইনেই। অথচ করোনা পরিস্থিতি ফের যে দিকে যাচ্ছে, তাতে আমরা পরীক্ষার্থীদের নিয়ে খুবই চিন্তিত। এ বারের সব পরীক্ষার্থীকে যদি করোনা ভ্যাকসিন দেওয়ার ব্যবস্থা হয়, তা হলে পড়ুয়ারা কিছুটা অন্তত নিশ্চিন্ত হয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে।’’
করোনা সংক্রমণের দরুণ গত বছর উচ্চ মাধ্যমিক চলাকালীন কয়েকটি বিষয়ের পরীক্ষা বন্ধ হয়ে যায়। এ বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১৫ জুন। এ বারেও পুরোপুরি করোনা আবহেই পরীক্ষা হবে বলে মনে করছে সংসদ। মহুয়াদেবী জানান, এই পর্বে দৈনিক সংক্রমণ যে ভাবে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, তাতে জুনে পরিস্থিতি কী দাঁড়াবে, বোঝা যাচ্ছে না। তাঁর কথায়, “বহু পরীক্ষার্থীই গ্রামাঞ্চলে থাকে। সেখানে নেট-সংযোগ খুবই দুর্বল। উচ্চ মাধ্যমিকের মতো গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সময়ে নেট-সংযোগ বার বার বিঘ্নিত হলে পরীক্ষার্থীদের নানা ধরনের অসুবিধা হতে পরে। তাই অনলাইনে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কার্যত অসম্ভব।”
প্রত্যাশী: করোনার প্রতিষেধক নিতে ভিড়ের মধ্যেই অপেক্ষা। শুক্রবার, উত্তর কলকাতার একটি হাসপাতালে। —নিজস্ব চিত্র।
সংসদ-কর্তাদের বক্তব্য, করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ালে পরীক্ষার্থীদের মধ্যে পারস্পরিক দূরত্ব বাড়বে ঠিকই, কিন্তু খুব একটা লাভ হবে না। কারণ, অধিকাংশ ছেলেমেয়েকে পরীক্ষাকেন্দ্রে পৌঁছতে হয় গণপরিবহণে। সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তাতে গণপরিবহণে তাঁদের পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছনো এবং বাড়ি ফেরা বিপজ্জনক হতে পারে।
সেই জন্যই পরীক্ষার্থীদের করোনার প্রতিষেধক দেওয়ার প্রস্তাব পেশ করা হচ্ছে বলে জানান সংসদ-প্রধান। তিনি জানান, এখন বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল, পুর ও গ্রামীণ হাসপাতাল-সহ অনেক জায়গাতেই প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের প্রমাণপত্র দেখে ওই প্রতিষেধক দেওয়ার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। প্রতিষেধক নেওয়া থাকলে পড়ুয়ারা মানসিক দিক থেকে আশ্বস্ত হয়ে পরীক্ষা দিতে পারবে। তবে প্রতিষেধক নেওয়া বাধ্যতামূলক করার কিছু নেই। যে-সব পরীক্ষার্থী প্রতিষেধক নিতে চায় না, তারা না-ও নিতে পারে।
মহুয়াদেবী জানান, পরীক্ষার এখনও দু’মাসের কিছু বেশি দেরি। কিছু দিনের মধ্যে প্রতিষেধক প্রয়োগ পর্ব শুরু করলে এই দু’মাসে পর্যায়ক্রমে সব উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীকে প্রতিষেধক দেওয়ার কাজ শেষ হয়ে যাওয়া উচিত। সংসদ-কর্তাদের বক্তব্য, যে সব স্কুলে ভোটের বুথ হয়েছে, পরে সেখানে পরীক্ষার আসন পড়বে। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন রাজ্য থেকে আধাসেনা আসছেন। তাঁরা স্কুলে থাকছেন। তাই ভোট হয়ে গেলে পরীক্ষার কথা ভেবে সব স্কুলকে ভাল ভাবে জীবাণুমুক্ত করাও বিশেষ জরুরি।