ফাইল চিত্র।
করোনার টিকা নিয়ে জালিয়াতির প্রেক্ষিতে বেসরকারি ক্ষেত্রে প্রতিষেধক শিবির করার উপরে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। তবে সোমবার সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়ে জানানো হয়েছে, স্বাস্থ্য দফতরের জারি করা আদর্শ কার্যবিধি মেনে আগাম সরকারি অনুমতি নিয়ে টিকাররণের শিবির করতে বাধা নেই।
টিকার বেসরকারি শিবির নিয়ে এ দিন বণিকমহল, বেসরকারি হাসপাতাল, হোটেল ও পর্যটন সংগঠনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা। স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, সেই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ক্লাব, সংস্থা, শিল্প মহল, সংগঠন বা অফিস শর্তসাপেক্ষে প্রতিষেধক শিবির করতে পারবে। প্রধান শর্ত, স্বাস্থ্য দফতরের আদর্শ কার্যবিধি মেনে আগাম সরকারি অনুমতি নেওয়া। সেই অনুমতি দেওয়ার আগে স্বাস্থ্য দফতরের প্রতিনিধিরা প্রস্তাবিত শিবিরের পরিকাঠামো পরিদর্শন করবেন।
টিকা শিবিরের অনুমতিপত্র স্থানীয় পুলিশ ও কলকাতা পুরসভার বরো অফিসে জমা দিতে হবে আয়োজকদের। পাশাপাশি ওই অনুমতিপত্রের প্রত্যয়িত প্রতিনিপি টাঙিয়ে রাখতে হবে শিবিরের বাইরে। জেলার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মেনে চলতে হবে। এ দিনের বৈঠকে ছিলেন পর্যটনসচিব নন্দিনী চক্রবর্তী, স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম, ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প দফতরের সচিব রাজেশ পাণ্ডে, শিল্পসচিব বন্দনা যাদব প্রমুখ। স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, টিকার জোগানে ঘাটতি থাকায়, যে-সব শিল্প সংস্থার বার্ষিক ব্যবসার পরিমাণ ১০০ কোটি টাকার বেশি, তাদের সরাসরি বেসরকারি হাসপাতালের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে শিবির করার আর্জি জানানো হয় এ দিনের বৈঠকে।
শিল্প সংস্থা হোক বা কোনও সংগঠন, যারাই প্রতিষেধক শিবির (অফসাইট) করবে, তাদের টিকার দামের উপরে কতটা কী ‘সার্ভিস চার্জ’ নেওয়া হবে, তা ঠিক করবে সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালই। বেসরকারি হাসপাতালে চলা টিকা কেন্দ্রে (অনসাইট) প্রতিষেধকের দামের উপরে সার্ভিস চার্জ সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা থাকলে ‘অফসাইটের’ জন্য তার বেশিও নেওয়া যাবে। এর ফলে প্রতিষেধক দেওয়ার জন্য বেশ কিছু সংস্থার উপরে বাড়তি আর্থিক বোঝা চাপতে পারে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট শিল্প মহল। কারণ, এত দিন সরকারই সেই প্রতিষেধক বরাদ্দ করছিল। পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট শিল্প সংস্থা বা বণিকসভাগুলিকে কর্মী বা শ্রমিক-পিছু সর্বাধিক ৩১৫ টাকা দিতে হচ্ছিল। বেসরকারি হাসপাতাল সংগঠনের পূর্বাঞ্চলীয় সভাপতি তথা আমরি হাসপাতাল গোষ্ঠীর সিইও রূপক বড়ুয়া বলেন, ‘‘নিয়ম মেনেই টিকাদান কর্মসূচিতে জোর দেওয়া হচ্ছে। জেলাতেও এই কর্মসূচি চলছে। আগামী দিনেও সরকারি নিয়ম মেনে তা আরও বাড়ানো হবে।’’