—ফাইল চিত্র
করোনার সঙ্গে আট ঘাট বেঁধে লড়াই তো চলছেই। সেই লড়াইয়ের অঙ্গ হিসেবে কোভিড হাসপাতালে অগ্নি সুরক্ষাতেও কোনও ফাঁক রাখতে চাইছে না রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর। অগ্নি নিরাপত্তায় জোরদার নজরদারি চালানোর জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও মেডিক্যাল কলেজের সুপারদের। বলা হয়েছে, প্রয়োজনে স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদন ছাড়াই অগ্নি সুরক্ষার কাজে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করা যাবে।
গত ৩০ এপ্রিল রাতে গুজরাতের ভুরুচের একটি হাসপাতালে আগুন লেগে যাওয়ায় পুড়ে মারা যান ১৮ জন করোনা রোগী। তার আগে, ২৩ এপ্রিল ভোরে মহারাষ্ট্রের পালঘরে এক হাসপাতালের অগ্নিকাণ্ডে ১৩ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়। গত বছরেও ৬ অগস্ট সকালে আমদাবাদের নবরংপুরে একটি কোভিড হাসপাতালে আগুন লেগে প্রাণহানি ঘটে আট জন করোনা রোগীর। এই ঘটনাগুলি গোটা দেশকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিল, অগ্নি সুরক্ষায় ফাঁক থাকলে কী ঘটতে পারে।
রাজ্য প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, "হাসপাতালে আগুনের মোকাবিলার বিষয়ে আমরা আগে থেকেই সতর্ক আছি। গত বছর প্রতিটি হাসপাতালে ‘ফায়ার অডিট’ বা অগ্নি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। তার পরেও সকলের সদা সতর্ক থাকা জরুরি।" কয়েক দিন আগে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড ওয়ার্ডের বারান্দায় শর্ট সার্কিটের ফলে স্যানিটাইজ়ার মেশিন থেকে ধোঁয়া বেরোতে শুরু করেছিল। সেই ঘটনায় রাজ্য সরকার উদ্বিগ্ন।
রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণ স্বরূপ নিগমের সই করা বুধবার নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে সব মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে অগ্নি মোকাবিলার বর্তমান ব্যবস্থার পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে। স্বাস্থ্য দফতর ইতিমধ্যেই জেলাশাসক ও মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষদের হাতে কোভিড হাসপাতালের সিভিল ও ইলেক্ট্রিক্যাল কাজের ক্ষমতা দিয়েছে। বলা হয়েছে, ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য দফতরেরও অনুমোদন লাগবে না। এক আধিকারিক বলেন, "অগ্নি মোকাবিলায় সিভিল বা ইলেক্ট্রিক্যাল অংশে যে-সব কাজ বাকি রয়েছে, ওই টাকায় তা শেষ করা যাবে।"
স্বাস্থ্য শিবিরের পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের প্রায় সব হাসপাতালেই রোজ রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এই অবস্থায় অগ্নি সুরক্ষার ব্যবস্থা ঠিক থাকা অত্যন্ত জরুরি। স্বাস্থ্য দফতর সারা বছর ধরেই অগ্নি সুরক্ষা খাতে বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালকে পর্যাপ্ত টাকা দেয়। নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজে আগুনের মোকাবিলায় যে-পরিকাঠামো রয়েছে, সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের সুপারকে অবিলম্বে তার পুনর্মূল্যায়নের ব্যবস্থা করতে হবে। ওই কাজের দায়িত্ব দিতে হবে কোনও নন-মেডিক্যাল সহকারী সুপারকে। জেলা হাসপাতালের ক্ষেত্রে সেখানকার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ)-কে বলা হয়েছে, এক জন ডেপুটি সিএমওএইচ-কে যেন এই কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি প্রতিটি মেডিক্যাল কলেজের কর্তৃপক্ষ এবং জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে স্থানীয় দমকল কেন্দ্রের আধিকারিকদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।