গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পরিসংখ্যানের নিরিখে কিছুটা হলেও স্বস্তি জোগাচ্ছে রাজ্যের করোনা-পরিস্থিতি। দৈনিক সংক্রমণের হার সামান্য বাড়লেও কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার হারও ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী। সেই সঙ্গে কমেছে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় মৃতের সংখ্যাও। এরই মধ্যে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরকে শঙ্কায় রেখেছে উত্তর ২৪ পরগনায় আক্রান্ত ও মৃতের পরিসংখ্যান। শনিবার দৈনিক কোভিড-বুলেটিনে দেখা গিয়েছে এই দুই চিত্র।
স্বাস্থ্য দফতরের এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, শুক্রবারের তুলনায় রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা সামান্য হলেও কমেছে। গতকাল ৩ হাজার ১৯০ জন নতুন করে সংক্রমিত হয়েছিলেন। এ দিন ৩ হাজার ১৮১ জন নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও পর্যন্ত রাজ্যে সব মিলিয়ে ২ লক্ষ ৪৪ হাজার ২৪০ জন আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে অনেকে সুস্থও হয়ে উঠেছেন। এ দিন পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ২ লক্ষ ১৩ হাজার ৯৭৫ জন। এই মুহূর্তে সক্রিয় কোভিড-রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৫৪৪।
শতাংশের নিরিখে সুস্থতার হার বেশ কিছু দিন ধরেই ৮৭-র ঘরে ঘোরাফেরা করছে। সরকারি হিসেবে গত ২৪ ঘণ্টায় তা দাঁড়িয়েছে ৮৭.৬১ শতাংশে। দৈনিক সুস্থতার হার বাড়ার পাশাপাশি বৃদ্ধি হয়েছে সংক্রমণের হারেও। তবে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হারে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি না হওয়ায় তা মোটের উপর সদর্থক বলেই মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর। শতাংশের নিরিখে সংক্রমণের হারেও গতকালের ৭.২৮ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭.৩৫। প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। এই হার যত নিম্নমুখী হবে, ততই সদর্থক।
আরও পড়ুন: শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে গরু সিন্ডিকেটের যোগ, বিএসএফ কর্তার নালিশেও কাজ হয়নি
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
সংক্রমণ বা সুস্থতার হারের পাশাপাশি কোভিড-রোগীর দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও সামান্য কমেছে। এ দিনের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে মৃত্যু হয়েছে ৫৬ জন কোভিডে আক্রান্তের। গত কাল ৫৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে কিছুটা হলেও স্বস্তির। রাজ্যের করোনা-চিত্রে কলকাতাকে ছাপিয়ে বিশেষ স্বস্তি দিচ্ছে না জেলায় আক্রান্তের পরিসংখ্যান। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণের নিরিখে এ শহরকে ছাপিয়ে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। ওই জেলায় ৬৯৩ জনের কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে। তবে এ ক্ষেত্রে খুব একটা পিছিয়ে নেই কলকাতাও। শহরে এক দিনে ৬৬৮ জন সংক্রমিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি হলেন মুকুল রায়, পদ হারিয়ে ক্রুদ্ধ রাহুল
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
পাশাপাশি, উদ্বেগ ছড়াচ্ছে নদিয়া (১১৭), পশ্চিম মেদিনীপুর (১৪৬), পূর্ব মেদিনীপুর (১২৯), পশ্চিম বর্ধমান (১১১), হাওড়া (১৭০), হুগলি (১৪০) এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা (১৯৪)। এ সমস্ত জেলাতেই গত ২৪ ঘণ্টায় একশো বা তার বেশি আক্রান্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার মতোই এ দিন কলকাতাকে টপকে গিয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায় মৃত্যুর পরিসংখ্যান। ওই জেলায় এক দিনে মারা গিয়েছেন ১৪ জন কোভিড-রোগী। অন্য দিকে, কলকাতায় ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
এ ছাড়া, গত ২৪ ঘণ্টায় দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, মালদহ, নদিয়া, বীরভূম ও ঝাড়গ্রামে ১ জন করে, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, বাঁকুড়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান ও হুগলিতে ২ জন করে, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৪ জন এবং হাওড়াতে ৫ জন আক্রান্তের মৃত্যু হয়েছে। গোটা রাজ্যে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ৭২১।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২)