গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
তিন হাজারের কোটায় ঢুকেছিল আগেই। বুধবার ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করোনা আক্রান্ত বৃদ্ধির সংখ্যা থাকল তার আশেপাশেই। টেস্টের সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনই সামান্য কমেছে আক্রান্তের সংখ্যাও। তবে পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার বৃদ্ধি পাওয়ায় কিছুটা উদ্বেগ বাড়ল রাজ্য প্রশাসনের। অন্য দিকে সুস্থতার হার বৃদ্ধি কিছুটা হলেও স্বস্তি দিয়েছে রাজ্য প্রশাসনকে।
স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে কোভিড সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ১৬৯ জন। মঙ্গলবার এই সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজার ১৭৫, দৈনিক নতুন সংক্রমণের হিসেবে যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ দিন নতুন করে এত সংখ্যক মানুষ সংক্রমিত হওয়ায় রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লক্ষ ২৫ হাজার ৯২২।
কলকাতায় গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৬ জন। এই নিয়ে কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৩৪ হাজার ১৩৩ জন। তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। সেখানে এখনও পর্যন্ত ২৬ হাজার ৫৬১ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই সংক্রমিত হয়েছেন ৬৫৭ জন। হাওড়ায় মোট আক্রান্ত ১১ হাজার ৭১৭, হুগলিতে ৫ হাজার ৮২৩ এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ৯ হাজার ১৭১ জন আক্রান্ত হয়েছেন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
তবে আক্রান্তের সংখ্যা যেমন বেড়ে চলেছে, তেমনই সুস্থতার হার আশা জোগাচ্ছে রাজ্য সরকারকে। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৯৫ হাজার ৬৬৩ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টাতেই চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৯৭৩ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে সুস্থতার হার ৭৫.৯৭ শতাংশ। এই হার ৭৫.৫১ শতাংশ মঙ্গলবার ছিল। বর্তমানে রাজ্যে সক্রিয় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা অর্থাৎ কোভিড আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ২৭ হাজার ৫৩৫ জন।
আরও পড়ুন: সংগঠিত ক্ষেত্রেও অশনি সঙ্কেত! করোনা পর্বে দেশে কাজ হারিয়েছেন ১.৮ কোটি স্থায়ী কর্মী
তবে বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী রাজ্যে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা মঙ্গলবারের তুলনায় কমেছে। মঙ্গলবারের হিসেবে ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু হয়েছিল ৫৫ জনের। বুধবারের বুলেটিনে মৃতের সংখ্যা ৫৩। যদিও এই সংখ্যা সোমবার ও রবিবারের তুলনায় বেশি। রবিবার মারা গিয়েছিলেন ৫১ জন। সোমবার মৃত্যু হয়েছিল ৪৫ জন কোভিড রোগীর। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ২ হাজার ৫২৮ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। কলকাতায় এখনও পর্যন্ত মোট মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ১২১ জনের। উত্তর ২৪ পরগনায় মারা গিয়েছেন ৫৯৬ জন, হাওড়ায় ৩১৩ জন, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১৪৪ জন, হুগলিতে ৯৫ জন।
আরও পড়ুন: সমবায় ব্যাঙ্কের তহবিল তছরুপ মামলায় অর্জুনের বাড়িতে তল্লাশি, করা হবে জেরাও
প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত কয়েক দিন একটানা সংক্রমণের হার নীচে নামছিল। ১৫ অগস্ট রবিবার এই সংক্রমণের হার ছিল ৮.৯৮ শতাংশ, যা গত এক মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন ছিল। সোমবার তা বেড়ে ৯.৫ শতাংশ দাঁড়ায়। মঙ্গলবার তার চেয়ে কিছুটা কমে হয়েছিল ৯.০৪ শতাংশ। বুধবার সেই হার কিছুটা বেড়ে হয়েছে ৯.২২ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনা পরীক্ষা হয়েছে ৩৪ হাজার ৩৫৮ জনের, যা মঙ্গলবারের তুলনায় বেশ কিছুটা কম। মঙ্গলবার পরীক্ষা হয়েছিল ৩৫ হাজার ১০৭ জনের। সোমবার রাজ্যে ৩২ হাজার ৩১৯ জনের করোনা পরীক্ষা হয়। এই নিয়ে রাজ্যে মোট করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে ১৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৫৫৬ জনের।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)