ছবি এফপি।
করোনা রোগীর পরীক্ষানিরীক্ষার খরচ যে ‘লাগামহীন’, স্বাস্থ্য কমিশনের কাছে দায়ের হওয়া দু’টি অভিযোগেই তা স্পষ্ট হয়ে গেল শুক্রবার। শহরের অন্যতম গ্রহণযোগ্য প্যাথলজি সেন্টারে ‘লিভার ফাংশন টেস্ট’-এর খরচ ১২৫০ টাকা। একই পরীক্ষার খরচ ডিসানে ১৯০০ টাকা, বি পি পোদ্দারে ২৬৮৩ টাকা! যার পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি হাসপাতালে দ্রুত প্যাথলজি পরীক্ষার খরচ বেঁধে দেওয়া হবে বলে এ দিন জানিয়েছেন স্বাস্থ্য কমিশনের চেয়ারম্যান অসীম বন্দ্যোপাধ্যায়।
গত ছ’মাসে বঙ্গে সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা পরিষেবার বিভিন্ন খাতে লাগামহীন খরচের অভিযোগের তালিকা দীর্ঘ হয়েছে। একাধিক অ্যাডভাইজ়রিতেও তাতে ছেদ পড়েনি। এ দিন চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘বেসরকারি হাসপাতালে পরীক্ষানিরীক্ষার খরচ খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। কমিটির রিপোর্ট পেলে শীঘ্রই পরীক্ষানিরীক্ষার খরচ বেঁধে দেওয়া হবে।’’
হাওড়ার বাসিন্দা ৫৭ বছরের প্রৌঢ় অশোক চৌরারিয়াকে করোনা সন্দেহভাজন হিসেবে গত ২২ অগস্ট ডিসানে ভর্তি করানো হয়েছিল। করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট নেগেটিভ আসায় ১৯ ঘণ্টা পরে তাঁর ছুটি হয়ে যায়। কিন্তু ১৯ ঘণ্টার জন্য বিল হয় ১ লক্ষ ১৫ হাজার ৪৭৮ টাকা। চেয়ারম্যান জানান, একই দিনে দু’দিনের শয্যা ভাড়া বাবদ রোগীর পরিবারকে ২৬ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। শরীরের ভিতরে প্রদাহের ঝড় (সাইটোকাইন স্টর্ম) হচ্ছে কি না জানতে আইএল-৬ পরীক্ষা করানো হয়। অশোকবাবুর ক্ষেত্রে ১৯ ঘণ্টায় দু’বার সেই পরীক্ষা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তার জন্য খরচ ধরা হয়েছে সাড়ে চার হাজার টাকা করে মোট ন’হাজার টাকা। এই ঘটনায় ডিসানকে ৬৫ হাজার ৪৭৮ টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। নির্দেশের প্রতিলিপি পেলেই এ বিষয়ে কিছু বলা সম্ভব বলে জানিয়েছেন ডিসান কর্তৃপক্ষ।
আরও পড়়ুন: সংক্রমণ-সুস্থতার হারে স্বস্তির রেখা রাজ্যে, মৃত্যু নিয়ে উদ্বেগ বহাল
বি পি পোদ্দারে করোনা আক্রান্ত ৩৯ বছরের এক যুবকের হাসপাতালে আট দিন চিকিৎসাধীন থাকার জন্য বিল হয়েছে ২ লক্ষ ৭৭ হাজার ১৫৯ টাকা। বি পি পোদ্দারের ক্ষেত্রে পিপিই, চিকিৎসকের ফি-র খরচের ক্ষেত্রে অ্যাডভাইজ়রি লঙ্ঘনেরও অভিযোগ রয়েছে। এই ঘটনায় ৫০ হাজার টাকা রোগীর পরিবারকে কমিশন ফেরত দিতে বলেছে।