মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ। ফাইল চিত্র।
রাজ্যে করোনা-মৃত্যু যাচাই করতে বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়া অডিট কমিটি ৩ এপ্রিল থেকে কাজ করছে বলে রাজ্য সরকার শুক্রবার ঘোষণা করেছে। ওই কমিটি এ-পর্যন্ত করোনা-পজ়িটিভ রোগীদের মধ্যে ৫৭ জনের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ যাচাই করেছে। তার মধ্যে এ দিন পর্যন্ত ১৮ জনের মৃত্যুর জন্য কোভিড-১৯ সরাসরি দায়ী। বাকি ৩৯ জনের মৃত্যুতে সরাসরি ‘কো-মর্বিডিটিকে’ কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যদিও ওই সব মৃত্যুর ঘটনায় কোভিড-১৯ ‘ইনসিডেন্টাল ফাইন্ডিং’ বলা হয়েছে। এ দিন তারই ব্যাখ্যা দেন মুখ্যসচিব।
মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘বিভিন্ন মহলে বিভিন্ন মত রয়েছে অডিট নিয়ে। অডিটের পিছনে অনেক কারণ আছে। আমরা জানতে চেয়েছিলাম, করোনার জন্য ক’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং করোনা ক’জনের মৃত্যুকে ফেসিলিটেট করেছে। বা করোনা পজ়িটিভ হলেও মৃত্যু করোনার জন্য হয়নি, এমনটাও আছে কি না। বৃহস্পতিবার বিশেষজ্ঞ কমিটিকে অনুরোধ করেছিলাম। এ দিন রিপোর্ট পেয়েছি।’’ কো-মর্বিডিটিতে মৃত ৩৯ জনের ক্রনিক কিডনি রোগের সঙ্গে কার্ডিয়োমায়োপ্যাথি, রেনাল ফেলিয়োর, সেরিব্রো-ভাস্কুলার-অ্যাক্সিডেন্স, অ্যাকিউট লিম্ফোব্লাস্টিক লিউকোমিয়া, লেফ্ট ভেন্ট্রিকুলার ফেলিয়োর ইন সিভিয়র হাইপারটেনশন, টাইপ-২ ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশনে মাল্টি অর্গান ফেলিয়োর, রেড সেল অ্যাপ্লাসিয়া ইন কেস অব সিভিয়র ডায়াবিটিস, হাইপারটেনশন অ্যান্ড সিভিয়র ডায়াবিটিস উইথ হাইপারটেনশন উইথ হাইপো-ন্যাট্রেমিয়ার সমস্যা ছিল বলে জানিয়েছে বিশেষজ্ঞ কমিটি।
মুখ্যসচিবের দাবি, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব জানিয়েছেন, রোগীদের উপযুক্ত যত্ন নিতে হবে। মৃত্যুর অডিট গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যসচিব রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিবকে লিখেছেন, কো-মর্বিডিটি ভাল করে দেখতে হবে। শুধু বয়স ও লিঙ্গ দেখলে হবে না। এটা ‘ইনস্টিটিউশনালাইজ়’ করা দরকার। এই অডিট শুধু যে পশ্চিমবঙ্গে হচ্ছে না। নানা প্রসঙ্গে শুনতে হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ঠিক তথ্য দিচ্ছে না। তাই স্বাস্থ্য দফতরকে জানানো হয়, অডিট কমিটির রিপোর্ট চাওয়া হোক।
মুখ্যসচিব জানান, মৃত্যু ঘোষণা নিয়ে আইসিএমআর এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) নির্দেশিকা আছে। বিষয়টি ব্যাখ্যা করেছে বিশেষজ্ঞ কমিটিও। তা মেনে চলা হচ্ছে। ‘‘কত কেস ওদের দেওয়া হয়েছিল, জানি না। ৫৭টি কেস যাচাই করে রিপোর্ট দিয়েছে তারা। আমরা এখানকার পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেব। ডেঙ্গিতে মৃত্যুর ঘোষণার জন্যও আমাদের বিশেষজ্ঞ কমিটি আছে। কোভিডেও করা হচ্ছে। মৃত্যু ঘোষণার প্রোটোকল সব রাজ্যে এক রকম,’’ বলেন মুখ্যসচিব।