গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
রাজ্যে করোনায় মৃতের সংখ্যা প্রতি দিনই বাড়ছে। এত দিন মৃতের সংখ্যা ঘোরাফেরা করছিল চল্লিশের ঘরে। কিন্তু সোমবার সেই সংখ্যা একলাফে বেড়ে হয় ৫৩। মঙ্গলবার তা আরও বেড়েছে। মৃত্যু হয়েছে ৫৪ জনের। সবমিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ হাজার ৭৮৫ জনের।
গত কালকের থেকে আক্রান্তের সংখ্যাও এ দিন বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ২ হাজার ৭৫২ জন। এ নিয়ে রাজ্যে মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা এখন ৮০ হাজার ৯৮৪। যদিও গত কালকের থেকে এ দিন নমুনা পরীক্ষার সংখ্যাও খানিকটা বেড়েছে।
প্রতি দিন যত জন রোগীর কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যক রোগীর কোভিড-রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই বলা হয় পজিটিভিটি রেট বা সংক্রমণের হার। রাজ্য সরকারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে ২২ হাজার ৩২১ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে, যা এখনও পর্যন্ত সর্বাধিক। গত কাল করোনা সংক্রমণের হার ছিল ১২.২৮ শতাংশ। এ দিন তা সামান্য বেড়ে হয়েছে ১২.৩৩ শতাংশ। রাজ্যে এখনও পর্যন্ত কোভিড পরীক্ষা হয়েছে ৯ লক্ষ ৭৮ হাজার ৯৮০ টি।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
আরও পড়ুন: রেফার করার আগে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে কথা বলে অ্যাম্বুল্যান্স-বেড নিশ্চিত করতে হবে হাসপাতালকেই
রাজ্যে প্রতি দিনই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। একটু একটু করে বাড়ছে মৃতের সংখ্যাও। এই উদ্বেগজনক পরিস্থিতির মধ্যেও কিছুটা হলেও স্বস্তি জোগাচ্ছে সুস্থতার হার। রাজ্যে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৮১ হাজার। তার মধ্যে সুস্থ হয়ে গিয়েছেন ৫৬ হাজার ৮৮৪ জন। এ দিনই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েছেন ২ হাজার ৬৬ জন। সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ২২ হাজার ৩১৫ জন। রাজ্যে সুস্থতার হার এখন ৭০.২৪ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা সংক্রমণে ফের সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে কলকাতা। মহানগরীতে এক দিনে আক্রান্ত হয়েছেন ৭১৯ জন। শুধু মাত্র কলকাতাতেই মোট করোনা রোগীর সংখ্যা হয়েছে ২৪ হাজার ৫৩৭ জন। এ দিনই কলকাতায় মারা গিয়েছেন ১৫ জন। শহরে মোট মৃতের সংখ্যা ৮৩৫।
সংক্রমণ এবং মৃত্যুর নিরিখে কলকাতার পরেই রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। গত ২৪ ঘণ্টায় ৫৯৬ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ওই জেলায়। মৃত্যু হয়েছে ১৪ জনের। এই নিয়ে ওই জেলায় মোট ৪০৩ জনের মৃত্যু হল করোনায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক দিনে সংক্রমিত হয়েছেন ২৩৩ জন। এ দিন মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। হাওড়ায় গত ২৪ ঘণ্টায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৯০ জন। এখানেও ৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। হুগলিতে এ দিন নতুন করে করোনা ধরা পড়েছে ১১৭ জনের। মারা গিয়েছেন ২ জন। এ ছাড়া পশ্চিম বর্ধমানে ১৫৪, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৩৬, পূর্ব বর্ধমানে ৩৬, পশ্চিম মেদিনীপুরে ১৬, বীরভূমে ৬৫, মুর্শিদাবাদে ৫৪, নদিয়ায় ৬৯ জনের নতুন করে করোনা ধরা পড়েছে।
উত্তরবঙ্গেও ছড়াচ্ছে করোনা। গত ২৪ ঘণ্টায় জলপাইগুড়িতে ৮৩, দক্ষিণ দিনাজপুরে ৫৬, দার্জিলিঙে ৫৩, মালদহে ৫১, আলিপুরদুয়ারে ৪৫ এবং কোচবিহারে ২৯ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এর মধ্যে দার্জিলিঙে ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে এ দিন।
আরও পড়ুন: কাজ নেই, ইদ যেতেই ফের ভিনরাজ্যের পথে পরিযায়ী শ্রমিকরা
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)