করোনায় প্রয়াত চিকিৎসক প্রদীপকুমার ভট্টাচার্য। সংগৃহীত চিত্র।
‘প্রদীপ-শিখা’ নিভতে দেবেন না ওঁরা। করোনা-আক্রান্ত হয়ে শ্যামনগরের চিকিৎসক প্রদীপকুমার ভট্টাচার্যের মৃত্যু হয়েছে গত সোমবার। তাঁর চিকিৎসার অর্থ সংগ্রহের জন্য রাস্তায় নেমেছিল তাঁর ক্লাব বটতলা ইয়ং স্টার। এলাকায় প্রদীপবাবু ছিলেন গরিবদের ভগবান। সেই টানেই গত মঙ্গলবার তাঁর দেহ শ্যামনগরে পৌঁছনোর সময় রাস্তার ধারে অসংখ্য মানুষ অপেক্ষা করেছিলেন। দূরত্ববিধি মেনে শামিল হয়েছিলেন শেষ যাত্রায়।
তাঁর অবর্তমানে গরিবেরা যাতে চিকিৎসা পান, তার জন্য কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে প্রদীপের ক্লাবে। তাঁদের এই কর্মসূচির নাম দেওয়া হয়েছে প্রদীপ-শিখা। অন্যান্য চিকিৎসকদের আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে তাঁরা সপ্তাহের কোনও দিনে গরিবদের বিনামূল্যে চিকিৎসা করেন। ওই ক্লাবের সম্পাদক, ময়দানের পরিচিত মুখ নবাব ভট্টাচার্য বলেন, “প্রদীপদা ছিলেন ক্লাবের সভাপতি। কত মানুষকে বিনামূল্যে চিকিৎসা করেছেন, এখন জানতে পারছি। সকলে এসে বলছেন, এ বার আমাদের কী হবে? সেই ভাবনা থেকেই আমাদের এই উদ্যোগ।”
নবাব জানান, ক্লাবের তরফ থেকে একটি মেডিসিন ব্যাঙ্ক করা হচ্ছে। সব ধরনের ওষুধ সেখানে রাখা হবে। গরিবদের সেই ওষুধ দেওয়া হবে। বিভিন্ন ওষুধ সংস্থার বেশ কিছু প্রতিনিধি ওষুধ দেবেন বলে জানিয়েছেন। কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গেও কথা হয়েছে। সপ্তাহে একটা দিন যাতে তাঁরা চেম্বার করেন। সেখানে গরিবদের বিনা ভিজিটে যাতে তাঁরা দেখেন সেই বিষয়েও কথা চলছে। হয়তো খুব শিগগিরই তা শুরু হয়ে যাবে।
ওই ক্লাব সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রদীপের চিকিৎসার জন্য এখনও পর্যন্ত প্রায় ২১ লক্ষ টাকা উঠেছে। সব টাকার হিসেব এখনও করা যায়নি। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মোট বিলের ৩ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা মকুব করেছে। তিন লক্ষ টাকা মেডিক্লেম থেকে মিলেছে। চাঁদা থেকে সংগ্রহ প্রায় ১২ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। পুরো টাকা চিকিৎসকের অ্যাকাউন্টেই জমা হয়েছে। বাকি টাকা সেখানেই রয়েছে। সেই টাকা কী কাজে লাগবে? নবাব বলেন, “তাঁর পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সেটা ঠিক করা হবে। তাঁরা যেমনটা চাইবেন, তেমনই হবে। তবে সেই আলোচনার সময় এখন নয়।” নবাব জানান, ওই চিকিৎসকের মৃত্যু দিনে প্রতি বছর রক্তদান শিবির করা হবে।