গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
দৈনিক সুস্থতায় ফের নয়া রেকর্ড রাজ্যে। আগের দিনের তুলনায় কমল দৈনিক করোনা সংক্রমিতের সংখ্যাও। একই সঙ্গে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যাও কমল খানিকটা। তবে সামনে কালীপুজো, বড়দিনের মতো উৎসব রয়েছে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক দূরত্ব বিধি মেনে চলা, নিয়মিত হাত পরিষ্কার করা এবং মাস্ক পরা নিয়ে আরও সতর্ক হতে হবে মানুষকে। তবেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের বুধবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে নতুন করে কোভিডে সংক্রমিত হয়েছেন ৩ হাজার ৮৭২ জন।মঙ্গলবার এই সংখ্যাটা ছিল ৩ হাজার ৮৯১। সব মিলিয়ে এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৪ লক্ষ ১৬ হাজার ৯৮৪ জন কোভিড-১৯ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন।
তবে গত ৫ নভেম্বর থেকেই রাজ্যে দৈনিক সংক্রমণ ক্রমশ নিম্নমুখী। এই মুহূর্তে রাজ্যে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৩২ হাজার ৮৩৬। ১৬ অক্টোবরের পর এই প্রথম রাজ্যে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা এত নীচে নামল।
(গ্রাফে হোভার টাচ করলে দিনের পরিসংখ্যান দেখা যাবে)
সক্রিয় রোগীর সংখ্যা যে ভাবে কমছে, একই ভাবে রাজ্যে দৈনিক সুস্থতাও বেড়ে চলেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪ হাজার ৪৩১ জন করোনা রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। গত ৩০ অক্টোবর থেকেই রাজ্যে দৈনিক সুস্থতা ৪ হাজারের ঘরে ঘোরাফেরা করছে। মোট আক্রান্তের মধ্যে এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ৬৯৬ জন রোগীই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তাতে সুস্থতার হার বেড়ে ৯০.৩৪ শতাংশ হয়েছে।
নোভেল করোনাভাইরাসে সংক্রমিত হয়ে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে ৭ হাজার ৪৫২ জন প্রাণ হারিয়েছেন। অক্টোবরে পর পর বেশ কয়েক দিন দৈনিক মৃত্যু ৬০-এর ঘরেই ঘোরাফেরা করছিল। নভেম্বরের শুরুতে তা খানিকটা নীচে নামলেও, তা ৫০-এর কোটায় ছিল। এ দিন তা কমে ৪৯-এ দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে উত্তর ২৪ পরগনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪ জন। কলকাতায় ১২ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
প্রতি দিন যত সংখ্যক কোভিড পরীক্ষা করা হয়, তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। গত ২৪ ঘণ্টায় ৪৪ হাজার ১৩১টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। তাতে সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ৮.৭৭ শতাংশ। মঙ্গলবার ৪৪ হাজার ১১৭টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছিল।
জেলাগুলির মধ্যে এ দিন কলকাতাতেই সবচেয়ে বেশি মানুষ (৮৩৯ জন) নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন। উত্তর ২৪ পরগনায় নতুন করে সংক্রমণ ধরা পড়েছে ৮২০ জনের শরীরে। দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এ দিন নতুন করে কোভিডে আক্রান্ত হয়েছেন ২৩৭ জন। হুগলিতে এ দিন নতুন করে ২৬৫ জন সংক্রমিত হয়েছেন। এ ছাড়াও আর যে যে জেলাগুলিতে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে শতাধিক মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন, সেগুলি হল— হাওড়া (১৬৮), পশ্চিম বর্ধমান (১২৪), পূর্ব মেদিনীপুর (১৬১), পশ্চিম মেদিনীপুর (১৬৯), নদিয়া (১৬৪), জলপাইগুড়ি (১১৯) এবং দার্জিলিং (১৫১)।
জেলাগুলিতে বহু রোগী সুস্থও হয়ে উঠেছেন গত ২৪ ঘণ্টায়। কলকাতায় ৮২৪ জন রোগী সুস্থ হয়ে উঠেছেন। উত্তর ২৪ পরগনায় সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭৭৮ জন। এ ছাড়াও দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২৩৭ জন, হুগলিতে ২৬৮ জন, হাওড়ায় ২৮৮ জন, পশ্চিম বর্ধমানে ১০০ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ১৭৭ জন, পশ্চিম মেদিনীপুরে ২২৮ জন, নদিয়ায় ২৫৯ জন, মুর্শিদাবাদে ১৩১ জন, মালদহে ১১৯ জন, জলপাইগুড়িতে ১৩৮ জন, দার্জিলিঙে ১৫৪ জন এবং কোচবিহারে ১২১ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
গত ২৪ ঘণ্টায় হাওড়ায় ৫ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ৪ জন রোগীর মৃত্যু হয়েছে হুগলিতে। ৩ জন করে রোগী প্রাণ হারিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং নদিয়ায়। দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি, দুই জেলাতেই এ দিন ২ জন করে রোগী মারা গিয়েছেন। ১ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম, মালদহ এবং আলিপুরদুয়ারে।
আরও পড়ুন: ১৬ হাজার ৫০০ শূন্যপদে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ ৩ মাসেই, ঘোষণা মমতার
আরও পড়ুন: কোচবিহারে পুলিশের নারায়ণী ব্যাটালিয়ন, পাহাড়-জঙ্গলমহলেও নয়া বাহিনীর ঘোষণা মমতার
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)