ছবি: সংগৃহীত।
দুর্গাপুজো, কালীপুজোর পরে এ বার বর্ষশেষের উৎসব পালনের ক্ষেত্রেও কড়া নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। মঙ্গলবার বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্য এবং বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চ যা জানিয়েছে তার মর্মার্থ করোনা বিধি লঙ্ঘন করে উৎসব পালন করা যাবে না। বস্তুত, রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণের হার কিছুটা কমলেও করোনা নির্মূল হয়নি। জনস্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞেরা বারবারই বলেছেন, কোনও ভাবেই সুরক্ষায় ফাঁকি দেওয়া যাবে না। এ দিন হাইকোর্টের রায়েও তা প্রতিফলিত হয়েছে। তবে বর্ষশেষের ভিড় নিয়ন্ত্রণে বম্বে হাইকোর্ট আরও কড়া রায় দিয়েছে। অনেকে বলছেন, বম্বের এই উৎসব অনেক বড় হয়। তা ছাড়া মহারাষ্ট্রে এখনও সংক্রমণ অনেক বেশি রয়েছে।
অজয়কুমার দে নামে এক ব্যক্তি দুর্গাপুজো ও কালীপুজোর জমায়েত নিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তার মামলাতেই বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় কোভিড কালে উৎসব পালন নিয়ে স্মরণীয় রায় দেন। সেই মামলাতেই বর্ষশেষে উৎসবের উল্লেখ ছিল। কিন্তু সেটি তখন শুনানি হয়নি। এ দিন অবকাশকালীন ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার সঙ্গে অনসুয়া ভট্টাচার্য নামে এক মহিলার দায়ের করা মামলাও শুনানির জন্য ওঠে। তাতেও করোনা পরিস্থিতিতে ভিড়ের প্রসঙ্গ ছিল।
আদালতের নির্দেশ, রাজ্যের যে স্থানগুলিতে অতিরিক্ত ভিড় হয় সেখানে চেকপোস্ট বসাতে হবে। লোকজন যাতে মাস্ক ও স্যানিটাইজ়ার ব্যবহার করেন তা নিশ্চিত করতে হবে। রাস্তায় কোথাও ভিড় জমলে তা দ্রুত সরিয়ে দিতে হবে। এর পাশাপাশি পুজোর সময় সুরক্ষাবিধি সংক্রান্ত যে সাধারণ নির্দেশিকা ছিল সেগুলিও পালন করতে হবে। রাজ্যের মুখ্যসচিবকে বিষয়গুলি নিশ্চিত করতে হবে। তবে স্বরাষ্ট্রসচিবও গোটা প্রক্রিয়ার উপরে নজর রাখবেন।
বর্ষশেষে রাতে রাজ্যে সব থেকে বড় জমায়েত হয় পার্ক স্ট্রিট এলাকায়। তাই দুর্গাপুজোর মতো এটাও লালবাজারের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। পুলিশ সূত্রের খবর, বর্ষশেষের রাতের ডিউটির পরিকল্পনা করা হয়ে গিয়েছিল। তাতে শীর্ষ কর্তারা সইসাবুদও করেন। তবে হাইকোর্টের নির্দেশ শুনে সেটি স্থগিত করা হয়। পুলিশ সূত্রের দাবি, নির্দেশের প্রতিলিপি হাতে পেলে ফের পরিকল্পনা ঢেলে সাজা হতে পারে। পার্ক স্ট্রিটকে প্রতি বারই কয়েকটি সেক্টরে ভাগ করা হয়। হাজার চারেক পুলিশকর্মী মোতায়েন থাকেন। তার সঙ্গে নজরমিনার, আলাদা একটি অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম থাকে। এ বার তার সঙ্গে আদালতের নির্দেশ মোতাবেক বাকি আয়োজন করা হবে।
অনেকে বলছেন, জেলায় এ সময় চড়ুইভাতির আয়োজন ঘিরে ভিড় হয়। বিভিন্ন পার্কেও জনসমাগম হয়। প্রশাসনের খবর, চড়ুইভাতি খোলা জায়গায় হওয়ায় সমস্যা নেই। তবে বর্ষশেষের রাতে জলসাগুলিতে ভিড় নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হতে পারে।