ছবি এএফপি।
শুধু কালীপুজোই নয়, চলতি মরসুমের সব ধরনের উৎসব নিয়ে রাজ্য সরকারকে সতর্ক করেছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা এবং গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি বোর্ড (যে বোর্ডে রয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অভিজিৎ বিনায়ক বন্দ্যোপাধ্যায়)। তার পরেই আগামী কয়েক মাসে যে-সব উৎসব রয়েছে, তার সমীক্ষা করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য। জেলা প্রশাসনগুলিকে দ্রুত সেই কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। সরকারের এক জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞের কথায়, “উৎসবে বাধা দেওয়া সরকারের লক্ষ্য নয়। আবার উৎসবের সময় গা-ছাড়া মনোভাবে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়াও কাম্য নয়।”
কালীপুজো ছাড়াও আগামী কয়েক মাসের মধ্যে রয়েছে জগদ্ধাত্রী পুজো, রাস উৎসব, ছট, ধনতেরাস, কার্তিক পুজো এবং বড়দিন-সহ একাধিক পার্বণ। সেগুলির বেশির ভাগ নির্দিষ্ট এলাকাভিত্তিক হলেও যথেষ্ট জনপ্রিয়। একাধিক জেলা থেকে বহু মানুষ সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে উৎসবের শরিক হন। পুলিশকর্তাদের অনেকেই জানাচ্ছেন, জনসমাগমের দিক থেকে দুর্গাপুজোর থেকে কোনও অংশে কম নয় সেগুলি। এই কারণে গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি বোর্ড এবং জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন, কোভিড সংক্রমণ ঠেকাতে উৎসবের মরসুমে মানুষের গতিবিধির জন্য সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করা জরুরি। তাঁদের পরামর্শেই সব পার্বণের সমীক্ষা করাচ্ছে রাজ্য।
কালীপুজো, বড়দিন বা ছট রাজ্য জুড়ে পালিত হলেও বাকি উৎসবগুলি হুগলি, বর্ধমান, নদিয়ার মতো একাধিক জেলার নির্দিষ্ট এলাকায় হয়। পুলিশ-প্রশাসনের দাবি, দুর্গাপুজো অনেকটাই সংগঠিত হওয়ার ফলে তার ব্যবস্থাপনায় সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যা হয় না। কিন্তু স্থানীয় উৎসবগুলির ক্ষেত্রে পুঙ্খানুপুঙ্খ তথ্য এক জায়গায় জড়ো না-করলে দ্রুত সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় না।
কোনও উৎসবের পরিধি কতটা এলাকা জুড়ে রয়েছে, কত দিন ধরে তা পালিত হয়, কত মানুষ সেই উৎসবে যুক্ত, কত জন তা দেখতে আসেন, অন্যান্য বছর এক-একটি উৎসবে ভিড়ের প্রকৃতি কেমন ছিল, সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলিতে কোভিড সংক্রমণের সর্বশেষ পরিস্থিতি কেমন ইত্যাদি বিষয়ে দ্রুত সমীক্ষা চালাতে হবে জেলাগুলিকে। অতিমারিতে কী ভাবে নির্বিঘ্নে বিকল্প ব্যবস্থা করা যায়, জেলাগুলির তথ্যের ভিত্তিতে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এবং গ্লোবাল অ্যাডভাইজ়রি বোর্ডের সঙ্গে আলোচনা করে তার রূপরেখা চূড়ান্ত করবে প্রশাসন।