প্রতীকী ছবি।
কলকাতা থেকে বন্ধ থাকা ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ান চালু হচ্ছে আগামী পয়লা সেপ্টেম্বর। আপাতত সপ্তাহে তিন দিন— মঙ্গল, বৃহস্পতি ও রবিবার সেগুলি চলবে। কিন্তু কেন সপ্তাহের সাত দিনই ওই ছ’টি শহর থেকে উড়ান চলবে না, চার দিন উড়ান বন্ধ রাখার যুক্তি কী— ইতিমধ্যেই সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। কারণ, অগস্টের গোড়ায় ওই ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ানের টিকিট খুলে দেওয়ার পরে বহু যাত্রী টিকিট কেটেছেন। অনেকে সরাসরি দিল্লি গিয়ে সেখান থেকে বিদেশের উড়ান ধরার অপেক্ষায় আছেন। এখন সপ্তাহে তিন দিন উড়ান চললে বাকি চার দিন যাঁদের যাত্রার কথা ছিল, তাঁদের ভোগান্তি আরও বাড়বে। এ ব্যাপারে একটি উড়ান সংস্থার এক কর্তা বলেন, ‘‘কিছু করার নেই। বাকি চার দিনের উড়ানের যাত্রীদের অন্য তিন দিনের উড়ানে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করতে হবে। নয়তো বাতিল করতে হবে টিকিট।’’
ট্র্যাভেল এজেন্ট ফেডারেশনের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবি বলেন, ‘‘বহু যাত্রী সরাসরি দিল্লি গিয়ে সেখান থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য বন্দে ভারতের উড়ান ধরছেন। কলকাতা থেকে সরাসরি বন্দে ভারতের উড়ান নেই। এ ভাবে সপ্তাহে তিন দিন উড়ান চালালে ওই যাত্রীরা সংযোগকারী উড়ান ধরতেও সমস্যায় পড়বেন।’’
টানা ৫৭ দিন কলকাতার সঙ্গে ওই ছ’টি শহরের সরাসরি উড়ান বন্ধ থাকার পরে উড়ান সংস্থা এবং ট্র্যাভেল এজেন্টদের আশা ছিল, পয়লা সেপ্টেম্বর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা পুরোপুরি উঠে যাবে। তাই ১ সেপ্টেম্বর থেকে ওই ছয় শহরের সরাসরি উড়ানের টিকিট চলতি মাসের প্রথমে খুলে দেওয়া হয়েছিল।
সপ্তাহের কোন তিন দিন সেই উড়ান চলবে, তা ঠিক করার জন্য বলা হয়েছিল উড়ান সংস্থা এবং বিমান মন্ত্রককে। যেহেতু ৭ (সোমবার), ১১ (শুক্রবার) এবং ১২ সেপ্টেম্বর (শনিবার) রাজ্য সম্পূর্ণ লকডাউন ঘোষণা করেছে, তাই আপাতত ঠিক হয়েছে, ওই তিন দিন বাদ দিয়ে সেপ্টেম্বরের প্রথম দু’সপ্তাহ মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং রবিবার ছ’টি শহরের মধ্যে উড়ান চলবে।
এই নিয়ম বলবৎ থাকবে ১৩ সেপ্টেম্বর, রবিবার পর্যন্ত। তার পর থেকে সোম, বুধ ও শুক্রবার উড়ান চলবে। ওই দিনগুলিতে কতগুলি করে উড়ান চলবে, তা নিয়েও সংশয় ছিল। কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘লকডাউনের আগে যত উড়ান ছিল, এখন তার ৪৫ শতাংশ
চলছে। সেই হিসেবে জুলাইয়ের প্রথমেও এই ছ’টি শহর থেকে কলকাতার মধ্যে প্রায় ৫০টি উড়ান যাতায়াত করছিল। বেশির ভাগই ছিল দিল্লির।’’ ছ’টি শহরের উড়ান বন্ধ হওয়ার পরে এই মুহূর্তে কলকাতা থেকে অন্য শহরগুলিতে ১২৪টি উড়ান যাতায়াত করছে। ঠিক হয়েছে, সেই হিসেবেই এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো, স্পাইসজেট, এয়ার এশিয়া ইন্ডিয়া, ভিস্তারা এবং গো এয়ারের মধ্যে উড়ান ভাগ করে দেওয়া হবে।
ট্র্যাভেল এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান মানব সোনি এ দিন বলেন, ‘‘পর্যায়ক্রমে হলেও তো উড়ান চালু হল। অন্ধকারের মধ্যে সেটাই আশার আলো। আশা করছি, অক্টোবরের মধ্যে ছ’টি শহর থেকে সপ্তাহের সাত দিনই উড়ান চালু হয়ে যাবে।’’