গ্রাফিক: তিয়াসা দাস।
রাজ্য জুড়ে করোনার সংক্রমণ থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার দৈনিক হারে ফের বৃদ্ধি ঘটল। শতাংশের নিরিখে গত ২৪ ঘণ্টার যে পরিসংখ্যান মিলেছে, তা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এক দিনে সুস্থ রোগীর সংখ্যা বাড়ার পাশাপাশি নিম্নমুখী হয়েছে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা। এর জেরে উন্নতি হয়েছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হারেও। তবে কলকাতায় আগের দিনের থেকে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্য়া বেড়েছে। তবে জুলাইয়ের পর থেকে গোটা রাজ্যে দৈনিক মৃত্যুও কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে বেশি কোভিড রোগীর মৃত্য়ু হয়েছে কলকাতায়।
মঙ্গলবার রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড-১৯ থেকে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লক্ষ ১৪ হাজার ৩০৯ জন। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, সুস্থতার হার ৯৫.১৪ শতাংশ। যা এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি।
সুস্থতার হারের মতোই সোমবারের থেকে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা আগের দিনের থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে। মঙ্গলবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬৫৩ জন। সব মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৩৯ হাজার ৯৯৬ জন সংক্রমিত হলেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। যদিও সুস্থ রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকায় এই মুহূর্তে সক্রিয় রোগীর সংখ্য়া ১৬ হাজার ২৪৮।
আরও পড়ুন: ‘উদ্বিগ্ন হবেন না’, ভারতে মেলেনি করোনার নতুন প্রজাতি, জানাল কেন্দ্র
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
দৈনিক সুস্থতার হারের মতোই খানিকটা স্বস্তি দিচ্ছে ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব অনুযায়ী, মঙ্গলবার তা দাঁড়িয়েছে ৪.১২ শতাংশে। আগের দিন তা ছিল ৫.১৫ শতাংশে। জুনের পর মঙ্গলবার এই হার সবচেয়ে কমেছে। ২২ জুন তা ছিল ৪.৪১ শতাংশ। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। সোমবারের থেকে গত ২৪ ঘণ্টায় কোভিড টেস্টের সংখ্যাও তুলনামূলক ভাবে বেড়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মঙ্গলবার ৪০ হাজারেরও বেশি টেস্ট করা হয়েছে। তার মধ্যে পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে ১ হাজার ৬৫৩টি। অন্য দিকে, সোমবার ৩০ হাজারের কম টেস্ট করা হলেও নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৫১৫।
আরও পড়ুন: ফেব্রুয়ারিতে হচ্ছে না সিবিএসই পরীক্ষা, জানালেন কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী নিশঙ্ক
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্তদের মধ্যে মৃত্যুর সংখ্যাও জুলাইয়ের পর সবচেয়ে কম হয়েছে। ২৮ জুলাই রাজ্যে ৩৮ জন মারা গিয়েছিলেন। স্বাস্থ্য দফতরের হিসেব জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ওই একই সংখ্যক কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। যদিও এর মধ্যে শুধুমাত্র কলকাতারই বাসিন্দা ১০ জন। সব মিলিয়ে রাজ্যে এখনও পর্যন্ত ৯ হাজার ৪৩৯ জন সংক্রণের জেরে মারা গিয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন।)
মৃত্যুর পরিসংখ্যানের মতোই এক দিনে সুস্থ রোগীর সংখ্যাও উল্লেখযোগ্য ভাবে বেড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ২৭০ জন পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যার মতো উদ্বেগ বাড়াচ্ছে কলকাতায় আক্রান্তের সংখ্যাও। রাজ্য়ের মধ্য়ে এ শহরেরই সবচেয়ে বেশি সংখ্যক (৩৮৮) কোভিডে আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে মঙ্গলবার। অন্য দিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় উত্তর ২৪ পরগনায় ৩৫৮ জনের মধ্য়ে ভাইরাসের সংক্রমণ ঘটেছে। ওই জেলাতে মারা গিয়েছেন ৬ জন আক্রান্ত। এ ছাড়া, মঙ্গলবার হাওড়ায় ৫ এবং নদিয়ায় ৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি, দক্ষিণ দিনাজপুর, বীরভূম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং পশ্চিম বর্ধমানে ২ জন করে কোভিড রোগী মারা গিয়েছেন। একই সঙ্গে, কোচবিহার, দার্জিলিং, হুগলি এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ১ জন করে রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)