গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
এক ধাক্কায় রাজ্যে টিকাকরণের হার কমে গেল ৯০ শতাংশেরও বেশি। তবে পর পর দু’দিন ৮০০-র গণ্ডি পার করার পরে রাজ্যে দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কিছুটা কমল। সেই সঙ্গে সংক্রমণের হার ৩.১২ শতাংশ থেকে বেড়ে হল ৩.৫৩ শতাংশ।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর প্রকাশিত সোমবারের বুলেটিন অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় টিকাকরণের সংখ্যা তলানিতে ঠেকেছে। সোমবারের বুলেটিন বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মাত্র ১,২৮৯ জনকে টিকা দেওয়া হয়েছে। তার আগের ২৪ ঘণ্টায় এই সংখ্যা ১ লক্ষ ২৯ হাজার ছাপিয়ে গিয়েছিল। এ পর্যন্ত রাজ্যে করোনা টিকাকরণ হয়েছে ৪৮ লক্ষ ৬৬ হাজার ৭৩৪ জনের। অন্যদিকে, রবিবার মোট ২৬,৫৪৫টি নমুনা পরীক্ষা হলেও সোমবারে তা কমে হয়েছে ১৮,১১৬।
অন্যদিকে, রাজ্য গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ৬৩৯ জন। শনি এবং রবিবার এই সংখ্যা ছিল ৮১২ এবং ৮২৭। প্রতি দিন যে সংখ্যক কোভিড টেস্ট করা হয়, তার মধ্যে যত শতাংশের রিপোর্ট পজিটিভ আসে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্র বলছে, সপ্তাহ শেষে ছুটির দিনে এমনিতেই পরীক্ষা ও টিকাকরণ অনেকটা কমে যায়। সেই সঙ্গে দোলযাত্রা ও হোলির ছুটির আহবের কারণেই এই নজিরবিহীন নিম্নগতি।
দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যার হিসেবে শীর্ষে রয়েছে কলকাতা (২২৫), দ্বিতীয় উত্তর ২৪ পরগনা (১৬১), তৃতীয় স্থানে হাওড়া (৫০)। তবে গত দু’দিন কলকাতায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৩০০ ছাড়িয়ে গেলেও সোমবার তা আড়াইশোর নীচে নেমেছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় রাজ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ১ জনের। মৃত্যুর ঘটনা কলকাতায়। এই নিয়ে করোনায় রাজ্যে মোট মৃত্যুর সংখ্যা দাঁড়াল ১০, ৩২৫। মৃতের তালিকার শীর্ষে রয়েছে কলকাতা (৩,১২১), দ্বিতীয় উত্তর ২৪ পরগনা (২,৫৩২)।
সব মিলিয়ে এ রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫ লক্ষ ৮৫ হাজার ৩০৫। তবে তার মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫ লক্ষ ৬৯ হাজার ৮২৮ জন। এই মুহূর্তে রাজ্যে ৫ হাজার ১১২ জন সক্রিয় রোগী রয়েছেন। সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ৫ হাজার পেরনোর ঘটনা সাম্প্রতিক কালে রাজ্যে ঘটেনি।
মহারাষ্ট্র এবং পঞ্জাবের মতো পশ্চিমবঙ্গেও করোনার দ্বিতীয় ঢেউ দেখা দিয়েছে স্বাস্থ্য় বিশেষজ্ঞদের একাংশ আশঙ্কা করছেন। এই পরিস্থিতিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের গতি রুখতে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র, পঞ্জাব-সহ দেশের মোট ১২টি রাজ্যকে পরিকাঠামোগত প্রস্তুতি সেরে রাখতে পরামর্শ দিয়েছে কেন্দ্র। এই আবহে করোনাবিধি, টিকাকরণ-সহ স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে বিভিন্ন নীতি মেনে চলার উপর জোর দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। বিশেষ করে ভোটের মরসুমে রাজনৈতিক জনসভা থেকে শুরু করে মিছিল বা প্রচারের কাজে জমায়েতের ফলে সংক্রমণ বাড়বে বলেই আশঙ্কা করছেন স্বাস্থ্যকর্তাদের একাংশ।