গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
রাজ্যে প্রতি দিনই কোভিড-আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। একই সঙ্গে সুস্থও হয়ে উঠছেন প্রচুর মানুষ।
এক দিনে সবথেকে বেশি সংখ্যক মানুষ করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন গত ২৪ ঘণ্টায়, ৩ হাজার ৮০ জন। যা এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। ওই একই সময়ে করোনা থেকে সুস্থও হয়ে উঠেছেন ২ হাজার ৯৩২। ফলে সুস্থতার হার ছুঁয়েছে ৭৫.০২ শতাংশে। এটাও এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এ দিন রাতে রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিনে তেমনটাই জানা গিয়েছে।
ওই বুলেটিন অনুযায়ী, এ রাজ্যে এখনও পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৫৭৮ জন। তার মধ্যে ৮৯ হাজার ৭০৩ জন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। ফলে রাজ্যে এই মুহূর্তে সক্রিয় করোনা রোগী রয়েছেন ২৭ হাজার ৪০২ জন। এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৪৭৩ জন কোভিড রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গিয়েছেন ৪৫ জন।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
এ দিনই নবান্নের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে কোভিড নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ৩৪ হাজার করা হয়েছে এবং তা আরও বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, এখনও পর্যন্ত রাজ্যে নমুনা পরীক্ষার সংখ্যা ১৩ লাখ ৪৭ হাজার ৯১।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
কোভিডে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি দুশ্চিন্তার কারণ হলেও সংক্রমণের হারের পরিসংখ্যান স্বস্তি জোগাচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের কর্তাদের। প্রতি দিন যত জনের কোভিড-টেস্ট করা হচ্ছে এবং তার মধ্যে প্রতি ১০০ জনে যত সংখ্যকের কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসছে, তাকেই ‘পজিটিভিটি রেট’ বা সংক্রমণের হার বলা হয়। এ দিনের স্বাস্থ্য দফতরের প্রকাশিত বুলেটিন অনুযায়ী, ওই সংক্রমণের হার দাঁড়িয়েছে ৮.৮৮ শতাংশ।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
রাজ্যের মধ্যে কলকাতাতেই করোনা-আক্রান্তের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। কলকাতায় এখনও পর্যন্ত মোট কোভিড রোগীর সংখ্যা ৩১ হাজার ৮৬৭। যদিও তার মধ্যে সেরে উঠেছেন ২৫ হাজার ৩৫০ জন। ফলে এ শহরে সক্রিয় কোভিড রোগী রয়েছেন ৬ হাজার ৪২৪ জন। গত ২৪ ঘণ্টায় কলকাতায় নতুন করে সংক্রমিত হয়েছেন ৫৪৮ জন।
আরও পড়ুন: আজ থেকে রাজ্যে চালু কোভিড পেশেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম
আরও পড়ুন: দুর্ঘটনায় ব্রেন ডেথ, করোনা আবহেও রাজ্যে মরণোত্তর অঙ্গদানে নজির
কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতেও সংক্রমণের সংখ্যায় বাড়বাড়ন্ত অব্যাহত। উত্তর ২৪ পরগনা (২৫,২৪০), দক্ষিণ ২৪ পরগনা (৮,৭৬০), হাওড়া (১১, ৩৮১), হুগলি (৫,৫৪২),-র পাশাপাশি উত্তরের জেলাগুলিতেও করোনার সংক্রমণ ঘটেছে উল্লেখযোগ্য হারে। দার্জিলিং (৩,৬৮৩), মালদহ (৩,৯৭৮), কোচবিহার (১,৭৮৮), জলপাইগুড়ি (২,২৭১), দক্ষিণ দিনাজপুর (২,৫১২), উত্তর দিনাজপুর (১,৭৩৭) ছাড়াও কোভিডের থাবা ছড়িয়েছে মুর্শিদাবাদ (২,০৮৭), নদিয়া (২,৩৯৪), বীরভূম (১,২৬৪), বাঁকুড়া (১,৫১০), পশ্চিম মেদিনীপুর (২,২৭১) পূর্ব মেদিনীপুর (৩,৯০৭), পূর্ব বর্ধমান (২,০০৩) বা পশ্চিম বর্ধমান (২,৩০২)-এর মতো জেলাগুলিতে।
(গ্রাফের উপর হোভার বা টাচ করলে প্রত্যেক দিনের পরিসংখ্যান দেখতে পাবেন। চলন্ত গড় কী এবং কেন তা লেখার শেষে আলাদা করে বলা হয়েছে।)
গোটা রাজ্যে সংক্রমণের সংখ্যায় এক নম্বরে থাকার পাশাপাশি কোভিড রোগীর মৃত্যুতেও সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে কলকাতা। গত ২৪ ঘণ্টায় এ শহরে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জন সংক্রমিতের। সেই সঙ্গে ওই সময়সীমার মধ্যে হুগলি এবং উত্তর ২৪ পরগনায় ৪ জন করে, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৩ জন, দার্জিলিং, নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, হাওড়া এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনায় ২ জন করে ও পুরুলিয়ায় ১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
(চলন্ত গড় বা মুভিং অ্যাভারেজ কী: একটি নির্দিষ্ট দিনে পাঁচ দিনের চলন্ত গড় হল— সেই দিনের সংখ্যা, তার আগের দু’দিনের সংখ্যা এবং তার পরের দু’দিনের সংখ্যার গড়। উদাহরণ হিসেবে— দৈনিক নতুন করোনা সংক্রমণের লেখচিত্রে ১৮ মে-র তথ্য দেখা যেতে পারে। সে দিনের মুভিং অ্যাভারেজ ছিল ৪৯৫৬। কিন্তু সে দিন নতুন আক্রান্তের প্রকৃত সংখ্যা ছিল ৫২৬৯। তার আগের দু’দিন ছিল ৩৯৭০ এবং ৪৯৮৭। পরের দুদিনের সংখ্যা ছিল ৪৯৪৩ এবং ৫৬১১। ১৬ থেকে ২০ মে, এই পাঁচ দিনের গড় হল ৪৯৫৬, যা ১৮ মে-র চলন্ত গড়। ঠিক একই ভাবে ১৯ মে-র চলন্ত গড় হল ১৭ থেকে ২১ মে-র আক্রান্তের সংখ্যার গড়। পরিসংখ্যানবিদ্যায় দীর্ঘমেয়াদি গতিপথ সহজ ভাবে বোঝার জন্য এবং স্বল্পমেয়াদি বড় বিচ্যুতি এড়াতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়)
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)