হাওড়া হাসপাতালে চূড়ান্ত প্রস্তুতি। শুক্রবার। ছবি: দীপঙ্কর মজুমদার
প্রতীক্ষার অবসান। অনেকেই বলছেন ‘ঐতিহাসিক’ দিন।
আজ, শনিবার থেকে দেশ জুড়ে শুরু হচ্ছে করোনার প্রতিষেধক (কোভিশিল্ড) প্রয়োগ পর্ব। সকাল সাড়ে ১০টায় যার আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পশ্চিমবঙ্গে কিছু জেলায় অবশ্য সকাল ৯টা থেকেই প্রতিষেধক দেওয়া শুরু হওয়ার কথা। আজ যে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের নাম টিকা তালিকায় নথিভুক্ত হয়েছে, তাঁদের সকলকেই প্রতিষেধক নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছে কেন্দ্র।
আজ প্রথম দিনে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় প্রতিষেধক কেন্দ্রগুলিকে নবান্ন থেকে ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করবেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সঙ্গে থাকার কথা, মুখ্যসচিব ও স্বাস্থ্যসচিবের। প্রতিষেধক প্রয়োগের প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্তদের এবং টিকাপ্রাপকদের সঙ্গেও কথা বলতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী। কলকাতার সাত জন বিশিষ্ট চিকিৎসককেও প্রথম দিনের প্রতিষেধক নেওয়ার তালিকায় যুক্ত করেছে স্বাস্থ্য দফতর। আবার রাজ্যের প্রতিটি কেন্দ্রে থাকছে ‘ওয়েব কাস্টিং’-এর ব্যবস্থা। পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত জানিয়েছেন, প্রতিষেধক দেওয়ার প্রক্রিয়া যাতে রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন থেকেও সরাসরি দেখা যায়, সে জন্য উপযুক্ত পরিকাঠামো রাখা হচ্ছে।
যদিও বঙ্গে প্রতিষেধক নেওয়ার আগে ও পরে কো-উইন অ্যাপে নাম তোলা যাবে না বলে স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে। তার বদলে রেজিস্ট্রেশন এবং প্রতিষেধক দেওয়ার পরে হাতে লেখা স্লিপ দেওয়া হবে প্রতিষেধক গ্রাহককে। শুক্রবার এমনই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা। তাঁরা জানাচ্ছেন, নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণেই এমন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে।
আরও খবর: ‘অভিনয়ের সবটাই ধারাবাহিকে খরচ করো না’, দিতিপ্রিয়াকে পরামর্শ প্রসেনজিতের
আরও খবর: দলের ব্যবহারে ‘দুঃখ’ পেলেও তৃণমূল ছেড়ে পালাব না, জানালেন ‘অভিমানী’ সাংসদ প্রসূন
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, শনিবার প্রতিটি কেন্দ্রে ভ্যাকসিন নেওয়ার জন্য যে ১০০ জনের নাম রয়েছে, তাঁদের নাম কো-উইন অ্যাপে নথিভুক্ত করার কথা। কিন্তু এ দিন একটি নাম নথিভুক্ত করতে গিয়ে দেখা যায়, এক-একটি নামের জন্য অন্তত ৪৫ মিনিট করে সময় লাগছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সারা দেশ জুড়ে ওই অ্যাপের ব্যবহার চলছে। তার ফলে সার্ভার বসে যাওয়াতেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই প্রথম দিনে আপাতত ম্যানুয়াল পদ্ধতি অবলম্বন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ যেমন, শুক্রবারেই অ্যাপ না খোলায় দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়ে যাঁরা প্রতিষেধক নেবেন, কম্পিউটারে তালিকা দেখে, তাঁদের খবর দেওয়া হয়েছে।
রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রথম দিনে রাজ্যে ২০৮টি প্রতিষেধক কেন্দ্রকে বাছাই করা হয়েছে। তাতে মেডিক্যাল কলেজ কিংবা সরকারি হাসপাতাল, গ্রামীণ হাসপাতাল, আর্বান প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র রয়েছে। প্রতিটিতেই প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা থাকছে। এমনকি, প্রতিটি কেন্দ্রে ‘রিউমার রেজিস্টার’ রাখা হচ্ছে। প্রতিষেধকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া-সহ কোনও বিষয়ে গুজব ছড়ালে কারা, কোন মাধ্যমে ছড়াচ্ছে তা ওই রেজিস্টারে লিখে রাখা হবে। প্রতিষেধক গ্রহীতাদের কোনও মতামত থাকলে তা-ও লিখে রাখা হবে। পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা এইএফআই (অ্যাডভার্স ইভেন্টস ফলোয়িং ইমিউনাইজেশন) সংক্রান্ত বিষয়টি দেখভালের জন্য থাকবেন একজন চিকিৎসকও। তিনি ছাড়া প্রতিষেধক নিয়ে অন্য কেউ প্রতিক্রিয়া দেবেন না।