প্রতীকী ছবি।
তিনি নিজে চিকিৎসক। রোগ সম্পর্কে তাঁর সবচেয়ে বেশি সচেতন হওয়ার কথা। কিন্তু নিজের করোনা রিপোর্ট পজ়িটিভ আসার পরেও তিনি বেশ কয়েক ঘণ্টা ধরে সরকারি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে রোগী দেখেছেন বলে অভিযোগ।
কৃষ্ণগঞ্জ গ্রামীণ হাসপাতালে গত বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় তোলপাড় শুরু হয়েছে নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য দফতরে। ক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে কৃষ্ণগঞ্জ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিককে (বিএমওএইচ)। শুক্রবার সকালে ওই হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও চিকিৎসাকর্মীদের একাংশ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের ঘরের সামনে বিক্ষোভ দেখান। বিএমওএইচ-কে মিনিট দশেক ঘরে তালাবন্ধও করে রাখা হয়।
অভিযুক্ত চিকিৎসকের দাবি, তিনি পরিস্থিতি জানানোর পরেও কোনও রকম নির্দেশ না দিয়ে হাসপাতাল ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক স্বাতী কুণ্ডু। তাঁকে বারবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। ফলে তিনি জরুরি বিভাগে রোগী দেখতে বাধ্য হন। স্বাতী কুণ্ডুর পাল্টা দাবি, ‘‘ওই চিকিৎসকের অভিযোগ মিথ্যে। আমি ঠিক সময়ে ঠিক নির্দেশ দিয়েছিলাম। তা ছাড়া, কেন কী করেছি, আমি সাংবাদিকদের কেন ব্যাখ্যা দিতে যাব?” জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” শুক্রবারই হাসপাতালে ঘুরে গিয়েছেন কৃষ্ণনগর সদর মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক অরুণকুমার কোলে।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনা পরীক্ষার জন্য বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা নাগাদ ওই চিকিৎসকের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়। বেলা আড়াইটে নাগাদ তাঁর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসে। তার পরেও তিনি রোগী দেখলেন কেন? ওই চিকিৎসকের দাবি, ‘‘এ ছাড়া উপায় ছিল না। বিএমওএইচকে বহু বার ফোন করে পাইনি। আমি কার হাতে জরুরি বিভাগের ভার দিয়ে যাব বুঝতে পারছিলাম না।’’
শেষে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা নাগাদ বিএমওএইচ-এর নির্দেশে কৃষ্ণগঞ্জ থানার পুলিশ এসে হাসপাতালের গেট বন্ধ করে। জরুরি বিভাগে আসা রোগীদের ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। রাতেই হাসপাতাল চত্বর সংক্রমণমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু তা হতে-হতে শুক্রবার বেলা ১১টা বেজে যায়। ততক্ষণ বন্ধ ছিল জরুরি বিভাগ। এ দিন আউটডোর বন্ধ ছিল।