সোমবার বড়মা হাসপাতালে কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। নিজস্ব চিত্র
রাজ্যে এসেছেন কয়েকদিন আগেই। ঘুরে দেখছেন করোনা সংক্রমিত এলাকা এবং হাসপাতাল। কেন্দ্রীয় সরকারের ওই প্রতিনিধি দল সোমবার এলেন পূ্র্ব মেদিনীপুরে। গেলেন পাঁশকুড়া এবং হলদিয়ায়। পরিদর্শন করলেন হাসপাতাল এবং নিভৃতবাস কেন্দ্র (কোয়রান্টিন সেন্টার)।
কলকাতা বাদে রাজ্যে পূর্ব মেদিনীপুরেরই প্রথম করোনা আক্রান্তের খবর মিলেছিল। জেলাকে যেমন ‘হটস্পট’ ঘোষণা করেছে কেন্দ্র, তেমনই এই জেলার পাঁশকুড়ায় বড়মা মাল্টি স্পেশ্যালিটি হাসপাতালকে বানানো হয়েছে লেভেল-৩ এবং ৪ পর্যায়ের করোনা হাসপাতাল। দুই মেদিনীপুর এবং ঝাড়গ্রামের করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা হচ্ছে সেখানে।
এ দিন সকাল ৯টার দিকে বড়মায় পৌঁছে যায় পাঁচ সদস্যের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দল। আগে থেকেই সেখানে হাজির ছিলেন পূ্র্ব মেদিনীপুর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা হাসপাতালের আইসিইউ, ভেন্টিলেটর-সহ লেভেল ৪-র চিকিৎসা পরিকাঠামো খুঁটিনাটি পর্যবেক্ষণ করেন। পাশাপাশি, হাসাপাতালে ভর্তি রোগীদের কীভাবে চিকিৎসা করা হচ্ছে, কী ধরনের খাবার দেওয়া হচ্ছে, চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা কতখানি সুরক্ষা বিধি মেনে চলছেন— এ সব কিছু খতিয়ে দেখেন।
বড়মা হাসপাতাল পরিদর্শনের পরে প্রতিনিধিরা বড়মা হাসপাতালের সুপারের ঘরে জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক-সহ বড়মা হাসপাতালে করোনা চিকিৎসার সাথে যুক্ত সমস্ত স্বাস্থ্য আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় পঞ্চাশ মিনিট ধরে চলা ওই বৈঠকে বড়মায় আক্রান্তদের সুস্থের হার, চিকিৎসা পরিষেবা, রোগীদের খাবারের তালিকা, করোনা সুরক্ষা সরঞ্জাম, রোগীদের পথ্য ইত্যাদি তথ্য নথিবদ্ধ করেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা। বড়মা হাসপাতালের ফেসিলিটি নোডাল অফিসার শচীন্দ্রনাথ রজক বলেন, ‘‘বড়মা হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা ও রোগ মুক্তির হার দেখে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।’’ উল্লেখ্য বর্তমানে বড়মায় ১৩ জন আক্রান্তের চিকিৎসা চলছে। আগে ভর্তি হওয়া ১৪ জন আক্রান্ত সুস্থ হয়ে ছাড়া পেয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর।
সকাল ১০টা নাগাদ বড়মা থেকে বেরিয়ে হলদিয়া যান কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। হলদিয়ায় একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের হস্টেলকে নিভৃতবাস কেন্দ্র বানানো হয়েছে। প্রথমে ওই কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন প্রতিনিধিরা। সেখানে বর্তমানে চার জন রয়েছেন। এরপর প্রতিনিধিরা যান হলদিয়া মহকুমা হাসপাতালে। সেখানে গিয়ে হাসপাতালে সুপারের সঙ্গে বৈঠক করেন তাঁরা। হাসপাতাল সূত্রের খবর, প্রতিদিন কত নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হচ্ছে এবং এখনও কত জনের পরীক্ষা হয়েছে, সে বিষয়ে খোঁজখবর নেন তাঁরা। দুপুরে হলদিয়া ভবনে মধ্যাহ্নভোজন সেরে রওনা দেন প্রতিনিধিরা।
কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিদের কোনও তথ্য গোপন করা হয়ে বলে দাবি করেছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। পাশাপাশি, তাঁর অভিযোগ, প্রতিনিধি দলের সদস্যরা জেলা স্বাস্থ্য দফতরকে না জানিয়েই বড়মা হাসপাতাল পরিদর্শনে আসেন। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র বলেন, ‘‘আমি জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে জানতে পারি বড়মায় কেন্দ্রীয় দল আসছে। এই বিষয়ে আমার দফতরকে কিছু জানানো হয়নি। তবে ওঁরা যা যা তথ্য চেয়েছিলেন, সবই দিয়েছি। তথ্য গোপন করা হয়নি।’’