ছবি এএফপি।
কলকাতায় কন্টেনমেন্ট এলাকায় সংক্রমণ রোধে নজরদারির কাজ যাতে নির্দেশিকা মেনে হয় তা নিশ্চিত করবেন কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যবেক্ষকেরা।
‘কোভিড-১৯’ নিয়ন্ত্রণে কেন্দ্রীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত ১৮টি দলকে ১০টি রাজ্যে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক। মহারাষ্ট্র, গুজরাত, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশের একাধিক জেলায় এবং তামিলনাড়ু, তেলঙ্গনা ও পশ্চিমবঙ্গের একটি জেলায় যাওয়ার কথা রয়েছে কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দলের। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে শুধু কলকাতাতেই কন্টেনমেন্ট এলাকার হাল-হকিকত পরখ করবেন ‘অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথে’র দুই বিশেষজ্ঞ সদস্য চিকিৎসক লীনা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং চিকিৎসক অপরাজিতা দাশগুপ্ত। আগে অপরাজিতার জায়গায় তালিকায় ছিল চিকিৎসক মধুমিতা দোবের নাম।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, কলকাতার কন্টেনমেন্ট এলাকায় পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীদের কাজে লাগিয়ে নজরদারির কাজ শুরু হয়েছে। সারা রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা যেখানে ১২৫৯, তার মধ্যে শুধু কলকাতাতেই আক্রান্ত ৬৫৯। ইনফ্লুয়েঞ্জার উপসর্গ বা কারও জ্বর রয়েছে কি না, সে ব্যাপারে স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে সমীক্ষা করছেন পুরসভার স্বাস্থ্যকর্মীরা। এই কাজে নজরদারির ভূমিকায় রয়েছে সরকারি হাসপাতালের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগ। স্বাস্থ্য দফতরের পরিকল্পনা সংক্রমণের ঊর্ধ্বমুখী হার (চেন অব ট্রান্সমিশন) রোখার প্রশ্নে কতখানি কার্যকর, তা দেখবে কেন্দ্রীয় দল। কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ দলের এক সদস্য-চিকিৎসক জানান, বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজে যুক্ত কর্মীরা নিজেরা কী ধরনের সাবধানতা অবলম্বন করছেন তা-ও দেখা হবে। সংক্রমিত এলাকায় কী ভাবে রিপোর্টিং হচ্ছে, নমুনা পরীক্ষার কী পরিকাঠামো রয়েছে, এ সবই কেন্দ্রীয় জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দলের বিচার্য বিষয় হবে। কন্টেনমেন্ট এলাকায় করোনা সন্দেহভাজন হিসেবে চিহ্নিত ব্যক্তিদের নমুনা পরীক্ষা কী ভাবে হচ্ছে তা-ও দেখা হবে। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় সন্দেহভাজনদের এনে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে, নাকি তাঁদের সেই কাজে হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে, দেখবেন বিশেষজ্ঞরা। কেন্দ্রীয় দলের এক বিশেষজ্ঞ সদস্য চিকিৎসক জানান, সন্দেহভাজনদের হাসপাতালে পাঠানোর কথা নয়। তা হলে প্রয়োজনীয় পরামর্শ মেনে চলার কথা বলতে হবে।
আরও পড়ুন: পদ্ধতি জটিল ছিল জানিয়ে বঙ্গে করোনার মোট তথ্য দিল নবান্ন
এআইআইএইচপিএইচ সূত্রের খবর, দু’সপ্তাহ আগে থেকে এ রাজ্যে হটস্পট এলাকায় স্বাধীন ভাবে কাজ করছিল ‘অল ইনস্টিটিউট অব হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথে’র জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। এপিডেমিয়োলজিক্যাল সমীক্ষায় কী ধরনের করোনা কেস হচ্ছে, সংক্রমণের গতিবিধি কেমন, সে বিষয়ে কাজ চলছিল। কলকাতার কন্টেনমেন্ট এলাকায় নজরদারিতে সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগবে বলে খবর।
আরও পড়ুন: কন্টেনমেন্ট এলাকা বন্ধ, অন্যত্র দোকান খোলা ১০-৬টা
সোমবার স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীন রিজিওনাল ডিরেক্টরের কার্যালয়ে একটি বৈঠক করেন এ রাজ্যে নিযুক্ত বিশেষজ্ঞ সদস্য-চিকিৎসকেরা। এর পর স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে পুরসভার বিভিন্ন ওয়ার্ডে কাজ শুরু করবেন বিশেষজ্ঞরা। এ দিন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের যুগ্মসচিব লব আগরওয়াল বলেন, ‘‘যেখানে করোনা সংক্রমণের বেশি ঘটনা হচ্ছে, সেখানে কেন্দ্র ও রাজ্যের উভয়ের লক্ষ্য হল, কী ভাবে সেই সংক্রমণকে বেঁধে রাখা যায়।’’
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)