প্রতিষেধকের জোগান নিয়ে এত দিন ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠছিল। এ বার তার প্রভাব প্রকট হয়ে ধরা দিচ্ছে বাংলাতেও। তার জেরে হুগলির শ্রীরামপুরের ওয়ালশ, উত্তরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং জেলার বিভিন্ন এলাকায় একাধিক পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে প্রথম ডোজের টিকাকরণ বন্ধ করে দেওয়া হল। পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত টিকাকরণ চালু হবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে যাঁরা প্রথম ডোজ নিয়ে নিয়েছেন ইতিমধ্যে এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার সময় হয়ে গিয়েছে, তাঁদের টিকাকরণ চালু রয়েছে। প্রতিষেধকের জোগান না থাকাতেই এমন কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে বলে শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছে। হাসপাতালের সুপার জয়ন্ত সরকার বলেন, ‘‘সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে গেলে সকলেই প্রতিষেধক পাবেন। যাঁদের দ্বিতীয় ডোজ বাকি রয়েছে, এই মুহূর্তে তাঁদেরই প্রতিষেধক দেওয়া হচ্ছে। যাঁরা প্রথম ডোজ নেবেন, সোমবার বা তার পরে যোগাযোগ করে দেখতে পারেন।’’
প্রতিষেধকে ঘাটতি দেখা দেওয়ায় কেন্দ্রীয় সরকাকেই কাঠগড়ায় তুলেছে বিরোধী দলগুলি। নোভেল করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় যখন প্রতিদিন হু হু করে সংক্রমণ এবং মৃত্যু বেড়ে চলেছে, সেই সময় দেশবাসীকে অগ্রাধিকার না দিয়ে বিদেশে কেন প্রতিষেধক রফতানি করা হচ্ছে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ঠিক মতো পরিকল্পনা করতে পারেনি বলেই দেশে প্রতিষেধকের আকাল দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন শ্রীরামপুরের তৃণমূলের সহ-সভাপতি সন্তোষ সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘প্রতি দিনই অ্যাপে নিত্য নতুন বদল আনা হচ্ছে। বিদেশ-বিভুঁইয়ে প্রতিষেধক পাঠানো হচ্ছে। অথচ দেশের মানুষই বঞ্চিত হচ্ছেন।’’
তবে প্রতিষেধকের আকাল নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এবং বিজেপি-কে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো অযৌক্তিক বলে মত বিজেপি-র রাজ্য কমিটির সদস্য ভাস্কর ভট্টাচার্যের। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি করোনার প্রতিষেধক তৈরি করে না। শ্রীরাম এবং ভারত বায়োটেকের মতো সংস্থাই তা তৈরি করে। মানবিকতার খাতিরে ২৪টি দেশে প্রতিষেধক পাঠিয়েছে ভারত। উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। ১৩০ কোটির দেশে প্রতিষেধকের ব্যাপক চাহিদা থাকাই স্বাভাবিক। একসঙ্গে ১৩০ কোটির প্রতিষেধক তৈরি করা সম্ভব নয়। তা-ও ১০ কোটির টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে।’’ রাজনৈতিত স্বার্থ চরিতার্থ করতেই তৃণমূল এ সব বলছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। ।
তবে শুধু হুগলি নয়, বুধবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতেও প্রতিষেধকে ঘাটতি দেখা দেয়। তার জেরে জেলা হাসপাতালে আগামী দু’দিন টিকাকরণ বন্ধ রাখা হয়েছে। জোগান স্বাভাবিক হওয়ার পর পরবর্তী সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হবে বলে জানানো হয়েছে ওই হাসপাতালে তরফে