প্রতীকী ছবি
অনেকটা স্বস্তিতে বার্নিয়া।
এখানেই এক পরিবারের ৫ জনের দেহে একই সঙ্গে করোনাভাইরাস মিলেছিল।গত শনিবার তাঁদের মধ্যে তিন জনের রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। রবিবার নেগেটিভ আসে ৯ মাসের এক শিশুর রিপোর্টও।এখনও পর্যন্ত শুধু ১১ বছরের এক বালকের রিপোর্ট পজিটিভ রয়েছে।
তবে আক্রান্তদের বাকিরা সুস্থ হওয়ায় শঙ্কার মেঘ অনেকটা কেটে গিয়েছে ওই পরিবার এবং সামগ্রিক ভাবে বার্নিয়ার উপর থেকেও। করোনা মানেই মৃত্যু নয়, বরং বেশির ভাগ আক্রান্তই সুস্থ হয়ে ওঠেন, হাতেনাতে তার প্রমাণ পেয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন ওই গ্রামের মানুষ। পাশাপাশি টানা ছ’দিন রাজারহাটে কোয়রান্টিন কেন্দ্রে থাকার পর একেবারে সুস্থ শরীরেই ওই পরিবারের কর্তা-সহ ৪ জন গত শুক্রবার বার্নিয়ায় নিজের বাড়ি ফিরেছেন। তাতে এলাকাবাসীর মন থেকে ভয়
আরও কেটেছে।
গত ২৪ শে মার্চ বার্নিয়ার ওই পরিবারের ১৩ জনকে তেহট্ট কর্মতীর্থ আইসোলেশন এ রাখা হয়। ২৫ শে মার্চ তাদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় কলকাতায়। ২৭ শে মার্চ সন্ধ্যায় ১৩ জনের মধ্যে ৫ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। ২৮ শে মার্চ ৫ জনকে কলকাতার বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বাকি আট জনকে রাজারহাট কোয়রান্টিনে রাখা হয়। এই ঘটনা জানাজানি হতেই বার্নিয়া গ্রাম আতঙ্ক আর আশঙ্কায় ভুগতে থাকে। মানুষ ঘরের দরজা থেকে বাইরে আসতেও ভয় পেতে থাকেন। খাওয়ার জল আনতেও অনেকে বেরোচ্ছিলেন না। কলের জল ফুটিয়ে খাচ্ছিলেন। প্রতিবেশীদের সন্দেহের চোখে দেখতে শুরু করেন অনেকে। শনিবার তাঁরা অনেকটাই নিশ্চিন্ত হয়েছেন।
ওই পরিবারের কর্তা-সহ যে চার জন কোয়রান্টিন কেন্দ্র থেকে শুক্রবার ফিরেছেন তাঁদের অবশ্য স্বাস্থ্য দফতর ও প্রশাসনের তরফে এখন বাড়ি থেকে বের হতে নিষেধ করা হয়েছে। গ্রামের লোকও ওই বাড়ির কাছাকাছি যাচ্ছেন না। ওই বাড়ির দু’টি বাড়ির পরেই থাকেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য সুধীর রায়। তিনি বলেন, ‘‘এত দিন আমার আত্মীয়দের অনেকে আমাদের ফোন পর্যন্ত ধরেননি। কারণ, করোনাভাইরাস ব্যাপারটা কী, তা কী ভাবে তা ছড়ায় সে সম্পর্কে গ্রামের অনেকেরই ধারণা নেই। এখন সবাই স্বস্তি পেয়েছেন।’’ জিল্লুর রহমান নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ওঁরা সুস্থ হতে আমরাও চাপমুক্ত। আতঙ্কের পরিবেশ কেটেছে। আক্রান্ত হলেই মৃত্যু হবে এমন একটা ভুল ধারণা ছিল যা ভেঙে গিয়েছে।’’
ওই পরিবারের কর্তা টেলিফোনে জানান, রাজারহাটের কোয়রান্টিন কেন্দ্র থেকে তাঁদের বাড়ির বাকি চার জনকেও দু’এক দিনের মধ্যে ছেড়ে দেওয়া হবে। তিনি গ্রামের মানুষকে অযথা আতঙ্কিত না হওয়ার অনুরোধও জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘আক্রান্ত হলে ভয় পাবেন না। যে ভাবে চিকিৎসা চলছে তাতে মানুষ কিছু দিনের মধ্যেই রোগমুক্ত হয়ে বাড়ি ফিরে আসবে।’’