আইসেলেশন ওয়ার্ড তৈরির তোড়জোড়। শনিবার শক্তিনগর জেলা হাসপাতালে। নিজস্ব চিত্র
কোথাও নজরদারি শুরু হয়েছে। কোথাও নয়। আবার কোথাও চলছে জোগাড়যন্ত্র। ভিন্-রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সীমানা যে সব জেলায় রয়েছে, নোভেল করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিস্তার ঠেকাতে সে সব জায়গার ছবি শনিবার ছিল এমনই।
করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে কেউ জেলায় ঢুকছেন কি না— সে সংক্রান্ত নজরদারি পুরুলিয়ায় চোখে পড়েনি এ দিন। জেলাশাসক রাহুল মজুমদার জানিয়েছেন, নজরদারির জন্য জেলার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের ১৪টি সীমানা-এলাকা চিহ্নিত করা হয়েছে। পুরুলিয়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনিলকুমার দত্ত বলেন, ‘‘ওই ১৪টি এলাকার মধ্যে অনেকগুলিই সুনসান। সেখানে নজরদারি চালানোর জন্য অন্তত বসার একটা জায়গা দরকার। সে ব্যবস্থাই করা হচ্ছে।’’
পূর্ব মেদিনীপুরের এগরা-১ ব্লকের ওড়িশা সীমানায় আলংগিরি এবং মীরগোদা সড়কে ওড়িশা থেকে আসা গাড়ির যাত্রীদের পরীক্ষা করা হচ্ছে না। গাড়ি তল্লাশিতেও বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা হয়নি। মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিক (এগরা) বিবেক সরকার বলেন, ‘‘রাস্তায় শিবির করার নির্দেশিকা আসেনি। তবে স্বাস্থ্যকর্মীরা সজাগ আছেন।’’
মালদহের মানিকচকে লঞ্চ, নৌকায় গঙ্গা পেরিয়ে ঝাড়খণ্ডে যান অনেকে। এ দিন সেখানে স্বাস্থ্যপরীক্ষার কোনও ব্যবস্থা চোখে পড়েনি। জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রের আশ্বাস, কাল, সোমবার থেকে সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের দল থাকবে। কোচবিহারে অসম-পশ্চিমবঙ্গ সীমানার অসম মোড়েও স্বাস্থ্যপরীক্ষা বা নজরদারির বন্দোবস্ত ছিল না এ দিন। আলিপুরদুয়ারে অসম সীমানা এলাকায় পাখরিগুড়িতে এত দিন স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছিল না বলে অভিযোগ। ভুটান থেকেও ওই এলাকা দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে ঢোকেন অনেকে। এ দিন থেকে আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে সেখানে স্বাস্থ্যপরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছে।
আন্তঃরাজ্য সীমানায় নজরদারির লিখিত সরকারি নির্দেশ শনিবার বিকেল পর্যন্ত হাতে আসেনি বলে দাবি পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রের। তবে ওই সূত্রের খবর, জেলার সঙ্গে ঝাড়খণ্ডের সীমানার পাঁচটি চেকপোস্টে আজ, রবিবার সকাল থেকে নজরদারি অভিযান চালানো শুরু হতে পারে। জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের দাবি, এই অভিযান চালাতে বিশেষ থার্মোমিটার-সহ কিছু আধুনিক যন্ত্রপাতি প্রয়োজন। তা এখনও মেলেনি। বিকল্প ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
এ দিন সকাল থেকেই বীরভূমের ঝাড়খণ্ড সীমানায় যাতায়াতের মূল ‘পয়েন্ট’গুলিতে ‘নাকা চেকিং’ করে পুলিশ ও স্বাস্থ্য দফতর। উত্তর দিনাজপুরে বিহার সীমানায় স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল। ওড়িশার সঙ্গে আন্তঃরাজ্য সীমানায় নজরদারি চলছে পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনে। ওড়িশা সীমানা লাগোয়া ঝাড়গ্রাম জেলার গোপীবল্লভপুর-১, নয়াগ্রাম এবং ঝাড়খণ্ড সীমানা লাগোয়া জামবনি ও বেলপাহাড়িতে চলছে নজরদারি। পূর্ব মেদিনীপুর স্বাস্থ্য দফতর ওড়িশা-দিঘা সীমানায় নজরদারি করছে।