National News

আজ মাঝরাত থেকে বন্ধ সব ঘরোয়া উড়ান

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিল, অন্যান্য রাজ্য থেকে বেশি যাত্রী কলকাতায় না-এলে সংক্রমণ কিছুটা আটকানো যাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ মার্চ ২০২০ ০৩:৪৭
Share:

ছবি: পিটিআই।

পশ্চিমবঙ্গ থেকে সব ‘ডোমেস্টিক ফ্লাইট’ বা অভ্যন্তরীণ উড়ান বন্ধ করে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিমান মন্ত্রক সোমবার বিকেলে জানিয়েছে, আজ, মঙ্গলবার রাত ১২টা থেকে ৩১ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত দেশের সব অভ্যন্তরীণ যাত্রী-বিমান বন্ধ থাকছে। তবে পণ্যবাহী বিমান চলবে।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রীর দাবি ছিল, অন্যান্য রাজ্য থেকে বেশি যাত্রী কলকাতায় না-এলে সংক্রমণ কিছুটা আটকানো যাবে। লকডাউনের সিদ্ধান্ত ঠিকঠাক রূপায়ণ করা যাবে। মুখ্যমন্ত্রী সোমবার বলেন, ‘‘বিমান এখনও চলছে। প্রধানমন্ত্রীকে বলেছি, দয়া করে বন্ধ করুন। রাজ্যে সাত জন করোনা-আক্রান্তের সঙ্গেই আন্তর্জাতিক যোগ রয়েছে। তা ছড়িয়ে পড়লে সামলানো যাবে না। সংক্রমণের ‘কমিউনিটি স্প্রেড’ ঠেকাতে উড়ান বন্ধ করুন।’’

সোমবার বিকেল থেকেই কোনও যাত্রী-বিমান যাতে কলকাতায় না-আসে, সেই জন্য সব উড়ান সংস্থাকে অনুরোধ করেন রাজ্যের পরিবহণসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমও। চিঠিতে বলা হয়, সোমবার বিকেল ৫টা থেকে কলকাতা থেকে যেন সব উড়ান পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়।

Advertisement

বিমানবন্দরে করণীয়

• চেক-ইন কাউন্টারের লাইনে দু’জনের মধ্যে ন্যূনতম দূরত্ব এক মিটার।
• দু’টি চেক-ইন কাউন্টারের মধ্যেও এক মিটার ব্যবধান।
• যাত্রীদের সাহায্য করতে অতিরিক্ত কর্মী।
• প্রতীক্ষার এলাকায় দুই যাত্রীর মধ্যে একটি আসনের ব্যবধান।
• বিমানে ওঠার লাইনে দু’জনের মধ্যে দূরত্ব এক মিটার।
• বিমানে ওঠার আগে যাত্রী ও কর্মীদের স্যানিটাইজ়ার।
• বিমানে পরিষেবা দেওয়ার সময়েও বিমানসেবিকাদের সঙ্গে দূরত্ব।
• বিমানে দুই যাত্রীর মধ্যে এক আসনের ব্যবধান।

বিমান পরিবহণের একটি শিবির জানায়, সোমবার সংসদের অধিবেশন ছিল। সাংসদেরা সেই অধিবেশন শেষ করে নিজের নিজের শহরে ফেরার আগে পর্যন্ত বিমান মন্ত্রক অভ্যন্তরীণ উড়ান বন্ধ করতে চাইছিল না। কেননা তার আগে উড়ান বন্ধ করলে অনেক সাংসদই দিল্লিতে আটকে যেতেন।

আরও পড়ুন: সচেতনতা প্রচারে কার্ফুতে মিছিল! যোগ দিলেন ডিএম

অভ্যন্তরীণ উড়ান দ্রুত বন্ধ করে দিলে অসুবিধা হবে বলে জানান এ রাজ্যের অন্য এক দল মানুষও। তাঁদের অনেকেই স্বজনদের চিকিৎসার জন্য মুম্বই, বেঙ্গালুরু, চেন্নাইয়ে আটকে আছেন। তাঁদের বক্তব্য, ট্রেন বন্ধ। এই অবস্থায় সব অভ্যন্তরীণ উড়ান বন্ধ করে দিলে তাঁরা ফিরবেন কী করে? এক আইনজীবীর পরিবার মুম্বইয়ে ছেলের ক্যানসারের চিকিৎসা করাচ্ছে। তারা জানায়, সেখানকার হোটেলে থাকতে দিচ্ছে না। হাসপাতালে রোগী ছাড়া আর কারও থাকার উপায় নেই। কলকাতায় ফিরতে না-পারলে স্বজনেরা কোথায় থাকবেন?

এ দিন বিকেল থেকে রাজ্যের সব পরিবহণ বন্ধ করে দেওয়ার পরে, সন্ধ্যার উড়ানে অনেকে শহরে আসছেন। তাঁদের মধ্যে যাঁদের গাড়ি নেই, তাঁরা কী করবেন, সেই বিষয়েও চিন্তিত বিমানবন্দর-কর্তৃপক্ষ। রাজ্যের পরিবহণ দফতর সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বলে জানান বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য। ঠিক হয়, বিকেল ৫টার পরে বিমানবন্দর থেকে হাওড়া ও ধর্মতলা যাওয়ার আটটি বাস থাকবে। বিমানবন্দরে কিছু ট্যাক্সি রাখারও চেষ্টা চালানো হবে।

বিমানবন্দরের জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের কাজে যেতেও কিছু সমস্যা দেখা দিয়েছে। সোমবার বিকেলের পরে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কী করে তাঁরা বিমানবন্দরে পৌঁছবেন, তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন ওই কর্মীরা। অধিকর্তা জানান, ব্যক্তিগত গাড়িতে আসতে হবে। কমবেশি সব কর্মীরই ব্যক্তিগত গাড়ি আছে।

উড়ান বন্ধ হলেও বিমানবন্দর বন্ধ হবে না বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দিয়েছেন। প্রথমত, পণ্য পরিবহণ চলবে। দ্বিতীয়ত, খোলা থাকবে এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)। প্রতিদিন কলকাতার আকাশ দিয়ে প্রায় ৫০০ আন্তর্জাতিক বিমান উড়ে যায়। সেই সব বিমানকে পথ দেখান কলকাতার এটিসি অফিসারেরা। বিভিন্ন দেশ উড়ান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করার পরে সেই উড়ান কমলেও একেবারে বন্ধ হয়নি। ফলে তাদের জন্যও খোলা রাখতে হবে এটিসি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement