মৃতদেহ টানাহেঁচড়ার ঘটনার ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। ছবি সেখান থেকে নেওয়া।
বোড়াল শ্মশানের ভিডিয়ো প্রসঙ্গকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা বলে মন্তব্য করল রাজ্য সরকার। ওই ভিডিয়ো-বিতর্ককে কোভিড অতিমারির সঙ্গে জুড়ে দেওয়াটাও যে অপ্রাসঙ্গিক, শনিবার তেমনটাও জানানো হয়েছে। এ দিন রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর একটি টুইট করে। ওই মৃতদেহগুলো সৎকারের দায়িত্ব পাওয়া সংস্থাকেই বোড়ালের ঘটনার জন্য সরাসরি দায়ী করেছে রাজ্য সরকার। ওই সংস্থার ব্যবস্থাপনায় যে ত্রুটি ছিল, সে কথাও বলা হয়েছে এ দিনের টুইটে। শুধু তাই নয়, গোটা বিষয়টিকে যাঁরা অতিমারির সঙ্গে জুড়ে দেখানোর চেষ্টা করছেন, তাঁদেরও কড়া সমালোচনা করেছে স্বরাষ্ট্র দফতর।
এ দিন দুপুরে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতর একটি টুইট করে। সেখানে বলা হয়, মৃতের প্রতি সম্মান দেখানোর একটা রীতি রয়েছে। এ বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সব সময়েই শ্রদ্ধাশীল। তাই, কোভিডের ক্ষেত্রেও তথ্য সংক্রাম্ত স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়। কোভিডে মৃত ব্যক্তির আত্মীয়েরা যাতে তাঁকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে পারেন তার ব্যবস্থাও করেছে রাজ্য। দেহ সৎকারের ব্যাপারেও মেনে চলা হয় পর্যাপ্ত স্বচ্ছতা। মৃতের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেই তাঁর অন্ত্যেষ্টি সম্পন্ন করা হয়, বলে লেখা হয়েছে ওই টুইটে।
স্বরাষ্ট্র দফতরের ওই টুইটে বলা হয়েছে, দুর্ঘটনায় মৃত কিছু অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির মর্গে পড়ে থাকা পচন ধরা দেহ সৎকারের দায়িত্ব দেওয়া হয় একটি সংস্থাকে। ওই সংস্থার অব্যবস্থা এবং গাফিলতির সঙ্গে বর্তমান অতিমারির কোনও যোগ নেই, বলে লেখা হয়েছে টুইটে। এই ঘটনার সঙ্গে যে কোভিড অতিমারির কোনও যোগ নেই তা-ও বিশদে ব্যাখ্যা করে জানানো হয়েছে রাজ্যপালকে— টুইটে জানানো হয়েছে এমন কথাও। রাজ্য সরকারের শীর্ষ এক আধিকারিক রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্তটাই লিখিত ভাবে ব্যাখ্যা করেছেন বলেও জানানো হয়েছে টুইটে।
আরও পড়ুন: মহুয়াকে খোঁচা দিয়ে তৃণমূলের নিশানায় ‘ললিপপ’ ধনখড়
আরও পড়ুন: রাস্তায় বাস নামাতে উদ্যোগী হল নবান্ন, কিন্তু মন্ত্রী কোথায়, প্রশ্ন
স্বরাষ্ট্র দফতর ওই টুইট বার্তায় অভিযোগ জানিয়েছে, গোটা ঘটনা স্বচ্ছতার সঙ্গে ব্যাখ্যা করার পরও অপ্রাসঙ্গিক ভাবে একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনাকে কোভিড অতিমারির সঙ্গে জুড়ে, গোটাটাকে করোনা পরিস্থিতির একটি ছবি হিসাবে তুলে ধরা হচ্ছে। ফলে প্রশাসন থেকে শুরু করে একদম সামনের সারিতে থেকে যে স্বাস্থ্যকর্মীরা কোভিডের সঙ্গে লড়াই করছেন, তাঁদের মধ্যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। তাঁরা হতোদ্যম হয়ে পড়ছেন। বিরূপ প্রভাব পড়ছে সমাজের মনেও। এই বার্তার পাশাপাশি স্বরাষ্ট্র দফতরের টুইটে লেখা হয়েছে, গোটা রাজ্য যখন কোভিড এবং আমপানের জোড়া আঘাতের সঙ্গে লড়াই করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, তখন ওই বিরূপ প্রভাব প্রতিকূলতা তৈরি করছে।
বোড়াল শ্মশানে অজ্ঞাতপরিচয় মৃতদের দেহ সৎকার নিয়ে তৈরি হওয়া ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর টুইট করে তার সমালোচনা করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। তিনি অভিযোগ করেছিলেন, ভারতীয় সভ্যতা এবং রীতি অনুযায়ী মৃতদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা হচ্ছে না। গোটা ঘটনা অমানবিক এবং নিষ্ঠুর বলে বর্ননা করেছিলেন তিনি। সেই ঘটনা কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে শুক্রবার শীর্ষ আদালতে ওঠা একটি জনস্বার্থ মামলায় উল্লেখ করা হয়। যার জেরে পশ্চিমবঙ্গ, মহারাষ্ট্র-সহ চার রাজ্যকে নোটিস পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট। সেখানে কোভিড পরিস্থিতি নিয়ে স্ট্যাটাস রিপোর্ট চাওয়া হয়। তার পরেই এ দিন রাজ্যের তরফে টুইট করে সরকার নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করল।