বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে প্রশাসনিক বৈঠক। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
‘ম্যাডাম’ আসছেন শুনেই হোমওয়ার্কে ব্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা। বুধবার বিকেলে বহরমপুর রবীন্দ্রসদনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প নিয়ে প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ার পরে তাঁরা বলছেন, ‘‘ভাগ্যিস হোমওয়ার্কে ফাঁকি দিইনি!’’ প্রশাসনিক বৈঠক শেষে ‘ম্যাডাম’ও খুশি হয়ে ‘ফুল মার্কস’ দিয়ে বলে গেলেন, ‘‘আগামীতে মুর্শিদাবাদ হবে রাজ্যের মডেল।’’
বৈঠকের বাছাই করা কয়েকটি প্রশ্নোত্তর এখানে তুলে দেওয়া হল—
মুখ্যমন্ত্রী: জেলায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সন্তান প্রসবের হার কেমন? ২০১১ সালে কেমন ছিল, আজকের চিত্রটা কেমন?
সিএমওএইচ: ২০১১ সালে ৬৪ শতাংশ ছিল। গত বছর ৯৫ শতাংশের উপরে হয়েছিল।
মুখ্যমন্ত্রী: রাজ্যের গড় কত?
সিএমওএইচ: ৯৮ শতাংশের উপরে।
মুখ্যমন্ত্রী: নানা রাজ্যের গড় ৯৭ শতাংশের উপরে। আমাকে ১০০ শতাংশ করতে হবে।
মুখ্যমন্ত্রী: কৃষক বন্ধু প্রকল্পে কত জনকে টাকা দেওয়া হয়েছে?
জেলাশাসক: ২ লক্ষ ৫১ হাজার কৃষককেই টাকা দেওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী: এলাকায় নাকা চেকিং হয়? খুন হলে তিন-চার জন হয়। একটু দেখবেন।
ডোমকলের আইসি: দু’টি জায়গায় নিয়মিত নাকা চেকিং হয়। এখন এলাকা শান্ত আছে।
মুখ্যমন্ত্রী: আইসিডিএস কেন্দ্রে যান?
ফরাক্কার আইসি: বিডিও-র সঙ্গে যাই।
মুখ্যমন্ত্রী: বিডিওকে সঙ্গে নিয়ে আইসি, ওসিরা এলাকায় যাবেন, মাচায় বসে চা খাবেন, মানুষের সঙ্গে মিশবেন, কথা বলবেন।
মুখ্যমন্ত্রী: আগে এক সময় খুন করে মানুষের মাথার খুলি নিয়ে ফুটবল খেলা হত। এখন কেমন আছে?
হরিহরপাড়ার ওসি: এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। এলাকা শান্ত।
সামাজিক সুরক্ষা যোজনা কী? বছর দেড়েক আগে এই রবীন্দ্রসদনে প্রশাসনিক বৈঠকে প্রশ্নটি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সঠিক উত্তর দিতে না পেরে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ধমক খেয়েছিলেন শ্রম দফতরের এক কর্তা। সেই আধিকারিক বদলি হয়ে এখন অন্য এক জন এসেছেন। ঘটনাচক্রে বুধবার সেই রবীন্দ্রসদনে তাঁকেও সেই একই প্রশ্ন করে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। মুর্শিদাবাদের উপশ্রম কমিশনার পতিতপাবন দাস মুখ্যমন্ত্রীকে সামাজিক সুরক্ষা যোজনা প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত বলেন। শুনে মুখ্যমন্ত্রী খুশি হয়ে বলেন, ‘‘বাঃ, খোঁজ-খবর রাখেন দেখছি। ভেরি গুড।’’